চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীকে (২৫) পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) এলাকায় নিজ বাসা থেকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দিয়াজের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় হাটহাজারী থানার নির্বাহী কর্মকর্তা (টিএনও) আফসানা বিলকিস উপস্থিত ছিলেন।
দিয়াজের মামা চবির শারীরিক শিক্ষা বিভাগের উপপরিচালক ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ বিন আমিন চৌধুরী অভিযোগ করে বলেছেন, দিয়াজ আত্মহত্যা করার কোনো কারণ নেই। তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলাল উদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে জানান, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পর জানা যাবে, দিয়াজ আত্মহত্যা করেছে, নাকি খুন হয়েছে। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। তবে সাধারণ ডায়েরির ভিত্তিতে দিয়াজের লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, আজ সকালে চট্টগ্রামের প্রবর্তক এলাকায় দিয়াজের সমর্থিত ছাত্রলীগের এটি অংশ সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়।
দিয়াজ ইরফান চৌধুরী চবির ফাইন্যান্স বিভাগ থেকে সম্প্রতি স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। মা, ছোট ভাই ও বোনদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর সড়কের একটি বাসায় থাকতেন তিনি।
দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের জননেত্রী শেখ হাসিনা হলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাতে বাসায় ছিলেন দিয়াজের ছোট ভাই। রাত ৯টার পর ফ্যানের সঙ্গে তাঁর লাশ ঝুলে থাকতে দেখে চিৎকার দেন ছোট ভাই। এর পর খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
দিয়াজের মামা রাশেদ বিন আমিন চৌধুরী গতকাল রাতে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘দলীয় রাজনীতিতে একটি অংশের আর কত নির্যাতন সহ্য করবে ইরফান?’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আলী আজগর জানান, মৃত্যুর আগে ইরফান কোনো চিরকুট লিখে গিয়েছেন কি না, সে ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
চবির উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ জানান, তিনি শুনেছেন, ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফান আত্মহত্যা করেছেন। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি চবির মানবিক বিভাগের বর্ধিত অংশ নির্মাণে ৭৫ কোটি টাকার দরপত্রকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুটি পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। এ নিয়ে এক অংশের কর্মীরা ২৯ অক্টোবর দিয়াজ ইরফানসহ চার ছাত্রলীগ নেতার বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালায়। ওই চার নেতার পরিবারের সদস্যদেরও লাঞ্ছিত করা হয়। এ ঘটনার চবি ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপুকে দায়ী করা হয়েছিল।
হামলার ঘটনায় দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী হাটহাজারী থানায় নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। তবে সেই অভিযোগ পুলিশ আমলে নেয়নি বলে জানা গেছে।