সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতের মেঘালয়
পাহাড় থেকে বয়ে আসা প্রায় ৪০টি ছড়ার মাধ্যমে প্রায়
২যুগের ও বেশি সময় ধরে বালি,পাথরের আগ্রাসনে ফলে গিলে
খাচ্ছে বসতবাড়ি,ফসলী জমি,মসজিদ,স্কুল। ঐ সব ছড়া দিয়ে
প্রায় বার মাস ও নদী দিয়ে বর্ষায় সময় পাহাড়ী ঢলের সাথে
বালি,পাথরের আগ্রাসনের কারনে অর্ধশত গ্রাম,স্কুল,ফসলী জমি
নদীতে বিলীন ও প্রায় ২৩টি নদী মরু ভূমিতে পরিনত হচ্ছে। দিন
দিন বাড়ছে এর পরিমান। বৃষ্টি হলেই পাহাড় ধসের আতœংকে
থাকে পাহাড়ে বসবাস কারী ৫শতাধিক আদিবাসী পরিবার যেন
দেখার কেউ নেই। জানাযায়-সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্ত এলাকা
তাহিরপুর,বিশ্বাম্ভরপুর,দোয়ারা বাজার,ছাতক,ধর্মপাশা,জেলা
সদরের ডলুরা,নারায়ন তলা দিয়ে ভারত থেকে বয়ে আসা বিভিন্ন
ছড়া ও নদী মাধ্যমে পাহাড়ী ঢলের সাথে আসা বালু,পাথর
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে পুকুর ভরাট,স্কুল,ফসলী জমির
উবর্রতা নষ্ট হয়ে মরু ভূমিতে পরিনত করছে। অন্য দিকে বর্ষায়
পাহাড়ী ঢলের প্রবল শ্রতের কারনে নদী ভাঙ্গনের পরিমান বেড়ে
যাওয়ায় নদী পাড়ে ঘর-বাড়ি হারা মানুষ গুলো পথে বসেছে।
তাহিরপুর উপজেলার পাঁচশোলা,বিকিবিল,লালকুড়ি,লোভার হাওর ও
বিশ্বাম্ভরপুর উপজেলার খরচার হাওর সহ জেলার দোয়ারা বাজার
উপজেলার খাশিয়ামারা,সোনালী তলা,টিলাগাঁও,মহবতপুর,ছাতক
উপজেলার ইছামতি সীমান্ত এলাকা সহ বিভিন্ন নদী ও হাওর গুলোতে
চৈত্র মাসে ১০-১৫ হাত পানি থাকতো সেখানে বালুর চড়ে পরিনত
হয়ে নদীর নাব্যতা কমে নদীর দিক পরিবর্তন হচ্ছে। আরো
জানাযায়,২০০৮সালের ২০জুলাই মাসে অতি বৃষ্টিতে তাহিরপুর
উপজেলার সীমান্তে কালো পাহাড় নামক স্থানটির অংশ পাহাড় ধসে
ও পাহাড়ী ঢলে চাঁনপুর সীমান্তের ঘর-বাড়ি হারায় শত শত পরিবার।
পাহাড়ের পাশাপাশি বসবাস কারী পরিবার গুলে বৃষ্টি হলেই থাকে
পাহাড় ধসের আতœংকে। তাহিরপুর সীমান্তের নদী যাদুকাটা সহ
সীমান্তবর্তী কড়ই গড়া ছড়া,ছিন্তু ছড়া,রাজাই ছড়া,গারো ছড়া
সহ ২০টি ছড়া দিয়ে পাহাড়ী ঢলের পানির সাথে আসা মরাগুরা
মাটি,পাথর,বালি আসছে ফলে প্রাথমিক ভাবে পরিবেশ বিপর্যয়
গঠিয়ে ভাঙ্গন ও বালির নিচে চাপা পড়ছে সীমান্ত
স্কুল,মসজিদ,মন্দির,বসতবাড়ি,রাস্তাঘাট,পুকুর,স্থাপনা,বিজিবি
ক্যাম্প সহ ফসলী জমি। আশ পাশের গ্রামের হাজার হাজার মানুষ
এখন নিরুপায় হয়ে পাহাড়ী ঢলের আতœংকের মাঝে বসবাস
করছে। ফসলী জমির উপর নির্ভরশীল কৃষক পরিবার গুলো সারাক্ষনেই
রয়েছে উৎবেগ,উৎকণ্টা ও আতœংকের মধ্যে। প্রবাহিত ঢলের কারনে
তাহিরপুর উপজেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে উত্তর বড়দল
ইউনিয়নের মাহারাম নদী সহ ১২টি নদী ও পাঠলাই,বৌলাই,রক্তি নদী
নাব্যতা হারাচ্ছে প্রতি বছর। বালু,পাথর সরাতে আজ পর্যন্ত
সরকারী বা বেসরকারী ভাবে কোন প্রয়োজনীয় কার্যকর প্রদক্ষেপ
নেয় হয় নি। ফলে বালুতে ভড়ে যাওয়া পাহাড়ী নদী গুলোর পানির ধারন
করার ক্ষমতা আশস্কাজনক ভাবে হ্রাস পাচ্ছে। পাহাড়ী নদীতে পানি
অল্পতেই ভড়ে যাওয়ায় পানি ক্রমাগত ভাটির দিকে নেমে আসায়
বন্যার পরিমান বেড়ে যাচ্ছে।সীমান্ত এলাকা ঘুরে
চেয়ারম্যান,মেম্বার,ব্যবসায়ী,স্থানীয় আদিবাসী সাথে আলাপ
কালে জানাযায়-সুনামগঞ্জ জেলা সীমান্তে ২যুগের বেশী সময়
ধরে মেঘালয় পাহাড়ের প্রায় ৪০টি ছড়া দিয়ে পাহাড়ী ঢলের সাথে
আসা বালি,পাথরের আগ্রসন বন্ধ না হওয়ার কারনে ছোট ছোট
ছড়া গুলো ক্রমাগত পাহাড়ী ঢলে এখন বড় হয়ে মরা গুরা
মাটি,বালি,পাথরের স্তর গিয়ে পড়ছে আমন,বোরো দু ফসলী উর্বর
জমিতে। ক্রমাগত পাহাড়ী ঢলের কারনে নদীর পাড়ের বসবাস কারী
মানুষ গুলো গৃহ হারা হয়ে অসহায় জীবন যাপন করছে। তাহিরপুর
সীমান্ত এলাকা চাঁনপুর,লাকমা,মাহারাম,ছাতক,দোয়ারা
বাজার সীমান্তের খাশিয়ামারা,সোনালী তলা,বিশ্বম্ভরপুর
সরুপগঞ্জ,গামারীতলা সহ সীমান্ত এলাকার কৃষকগন জানান-
ছোট বড় হাওর গুলোতে বোরো,আমন ফসলী জমিতে প্রতি কিয়ারে
১৮-১৯মন ধান উৎপন্ন হতো বালি,মরা মাটি,পাথর আসার ফলে এখন
উৎপাদনে অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে। আমরা এলাকাবাসী মিলে এর সুষ্ট
সমাধানের দাবী জানালেও এ পর্যন্ত কোন কার্যকর প্রদক্ষেপ নেওয়া
হয় নি। তাহিরপুর সীমান্তের চাঁনপুর বাজারের ডাক্তার আজিজুল
ইসলাম জানান-প্রতি বছরেই পাহাড়ী ঢলে ছড়ার মুখ গুলো বড়
হচ্ছে ফলে ভবিষ্যত্বে বড় ধরনের বিপদের আশংকায় আছি আমরা।
চানঁপুর বাজারটি বালু,পাথরের আগ্রাসনরে শিকার হচ্ছে।
তাহিরপুর সীমান্তে পাহাড়ী ঢলের কারনে নদী ভাঙ্গন ও তাহিরপুর
সীমান্তে বালুর পাথরের আগ্রাসনের স্থায়ী সুষ্ট সমাধান
প্রয়োজনীয়। জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম জানান-
সীমান্তের পাহাড়ী নদী ও ছড়ার মাধ্যমে বালি,পাথরের আগ্রাসন
সর্ম্পকে ভাল ভাবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কারুজ্জামান কামরুল
জানান,ভারতীয় মেঘালয় পাহাড় থেকে ছড়ার মাধ্যমে বালি,পাথর
তাহিরপুর সীমান্তে আগ্রাসনের কারনে স্থানীয় এলাকাবাসী
ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আলোচনার মাধ্যমে এর সুষ্ট সমাধান করা খুবেই
প্রয়োজন। প্রাথমিক ভাবে এই সব পাহাড়ী ছড়া দিয়ে নেমে
আসা পানির সাথে পাথর,বালি আগ্রসন বন্ধ করা খুবেই কঠিন।
তবে নেমে আসা প্রতিটি পাহাড়ী ছড়া সাথে মাঝারি
আকৃতির নালা তৈরি করে নদীর সাথে প্রবাহিত করার ব্যবস্থা করে
দিলে ফসলী জমির ক্ষতির পরিমান কমে যাবে।