বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:১৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কবে হবে জাতীয় নির্বাচন, জানালেন প্রধান উপদেষ্টা কুমিল্লায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কা, নিহত ৩ মোরেলগঞ্জে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রশাসনের আয়োজনে ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলার উদ্বোধন জাতীয়তাবাদী রেলওয়ে শ্রমিক ও কর্মচারী দলের ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন তারেক রহমান দেশে ফিরবেন কখন, যা বললেন মির্জা ফখরুল গুম-খুনে আর জড়াবে না র‍্যাব : মহাপরিচালক শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম সমর্থন করে না ভারতের মোদি সরকার সোনারগাঁয়ে দুটি চুনা কারখানার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিছিন্ন পাঁচবিবিতে জনবল সংকট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে ক্যারিবিয়ান জয়ের পর তাসকিন-তাইজুল যা বললেন

সুনামগঞ্জের স্বাস্থ্য সেবা মুখ থুবড়ে পড়েছে

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৬
  • ২৪৫ বার পড়া হয়েছে

 

জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া,

সুনামগঞ্জ সুনামগঞ্জ জেলারবিশ্বম্ভরপুর,দিরাই,শাল্লা,ধর্মপাশা,তাহিরপুর,ছাতক,দোয়রা বাজার সহ ১১টি উপজেলার হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে

প্রয়োজনীয় জনবল,ঔষধ ও যন্ত্রপাতি সংকট থাকায় স্বাস্থ্য সেবা চরম

বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। চরম ভোগান্তির শিকার জেলার ২৫লক্ষাধিক

জনসাধারন জেলা ও প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স,কমিউনিটি

ক্লিনিক,উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে মা,শিশু ও গর্ভবতি মহিলা সহ

চিকিৎসা সেবা নিতে আসা প্রত্যন্ত এলাকার হাজার হাজার

জনসাধারন চরম দূর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। জেলার একাধিক উপজেলা

হাসপাতালের প্রধান কর্মকর্তা টিএইচও সারা মাস কর্মস্থলে

অবস্থান করে না। শুধু মাসে মাসে বেতন উত্তোলন ও অফিসিয়ার সাক্ষর

করার জন্য মাসের শেষ দিকে আসেন। সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন

কায্যালয়ে ৪৩টি পদের মধ্যে ২১পদ র্দীঘ দিন ধরেই শূন্য রয়েছে।

জনবল সংকট থাকায় জেলার ১১টি উপজেলা হাসপাতালে কার্যক্রম

সঠিক ভাবে তদারকি ও করতে পারছে না সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। দিন দিন

এই জনবল সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। ফলে জেলার বিভিন্ন

হাসপাতাল গুলো নিজেই রোগী হয়ে লাইফ সার্পোটে আছে যেন

দেখার কেই নেই। জানাযায়,জেলার ২৫লক্ষাধিক জনসাধারনের তাদের

প্রাপ্য চিকিৎসা সেবার অর্ধেকও পূরন করতে পারছে না সংশ্লিষ্ট

কতৃপক্ষ। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স,কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে যে

পরিমান চিকিৎসক থাকা প্রয়োজন সেখানে ৪ভাগের এক ভাগ

রযেছে। জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে ৯টি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে

রয়েছে। এর মধ্যে ৪টি ৫০শর্য্যা ৫টি ৩১শর্য্যার। ৯টি উপজেলায়

৯জন স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ও ৯টি এনেস্থলজিষ্ট পদ রয়েছে। কিন্তু এই

১৮টি পদেই শূন্য রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরেই। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে

১হাজার ৯০২টি বিভিন্ন পদে জনবল থাকার কথা থাকলেও সেখানে

রয়েছে ৮৭৬ জন কর্মরত আছে। খালি আছে ১হাজার ২৬টি পদ। এর

মধ্যে মেডিকেল অফিসার ২৫০টি পদের মধ্যে কর্মরত আছে ১০৬জন।

পদ শুন্য রয়েছে ১৪৪জনের। প্রথম শ্রেনীর নন-মেডিকেল অফিসারের

৬টি পদের মধ্যে কর্মরত আছে ২জন। শুন্য রয়েছে ৪জনের। ৪০৯টি

নাসিং পদের মধ্যে কর্মরত আছে ৫৯জন। ৩৫০জনের পদেই শুন্য রয়েছে।

দ্বিতীয় শ্রেনীর ৬টি পদের মধ্যে কর্মরত আছে ১জন। ৫জনের পদেই

শুন্য রয়েছে। প্যারামেডিক্স ২২৪টি পদের মধ্যে কর্মরত আছে ৮১জন।

১৪৩টি পদেই শুন্য রয়েছে। স্বাস্থ্য সহকারী পদের সংখ্যা ৪৩৫জন। এর

মধ্যে ৩২৭জন কর্মরত আছে। শুন্য রয়েছে ১০৮জন। তৃতীয় শ্রেনীর

২৮৭জনের ১৬৯জন কর্মরত রয়েছে। শূন্য রয়েছে ১১৮জন। চর্তুথ

শ্রেনী কর্মচারী ২৮৫জনের মধ্যে ১৩১জন কর্মরত আছে। শূন্য

রয়েছে ১৫৪জনের। জেলা সদর হাসপাতালে ২২৮নাসিংয়ের মধ্যে ২৯জন

কর্মরত আছে। ১০জন সিনিয়র কনসালটেন্টের মধ্যে কর্মরত আছে

৬জন। ৪জনের পদ শুন্য রয়েছে। জুনিয়র কনসালটেন্টের ১১টি পদের

মধ্যে কর্মরত আছে ৪জন। মেডিকেল বা সহকারী সার্জন ৩৮টি

পদের মধ্যে ৮জন কর্মরত আছে। ৩০টি পদেই শুন্য রয়েছে। এদিকে

তাহিরপুর উপজেলার ৩০শর্য্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে

র্কমকর্তা,ডাক্তার,নার্স যোগদানের পর থেকেই অন্যত্র বদলি হয়ে

যাওয়ার জন্য তদবির শুরু করে। আর বদলীও হয়ে যায় অর্থের বিনীময়ে।

যার জন্য শূন্য তা পিছু ছাড়ে না। ১১জন ডাক্তারের স্থলে ২জন

এমবিবিএস ডাক্তার ও ৩জন সহকারী মেডিকেল এসিসট্রেন্ট

দিয়ে চলছে। নার্স ৯জনের মধ্যে ৬জন শুন্যতার কারনে ওর্য়াডে ভর্তি

থাকা রোগীরা প্রয়োজনীয় সেবা পাচ্ছে না। ডেন্টাল,ল্যাব

টেকনোলজিষ্ট,রেডিওগ্রাফার পদ র্দীঘ ৭বছর ধরেই শূন্য রয়েছে ফলে

কোন ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য যেতে হচ্ছে বাহিরে। ৩টি

জেনারেটার ১১বছর যাবৎ নষ্ট হয়ে পরে আছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে

হাসপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগীরা গরমে ছটফট করে।

হাসপাতালের জন্য একটি নৌ এ্যাম্বোল্যান্স থাকলেও চালক না

থাকায় কোন কাজে আসছে না। এক্সরে মেশিন ঘরে ভিতরে থেকে ও

নৌ এম্বোল্যান্স নষ্ট হচ্ছে হাসপাতালের পুকুরের পানিতে ডুবে

গচ্ছা যাচ্ছে সরকারের কোটি টাকার সম্পাদ। পানির পাম্পটি

১৫দিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে মেরামত করছে না কতৃপক্ষ। পানির জন্য

হাসপাতালের ওয়ার্ড ও আবাসিক কোয়াটারে হাহাকার বিরাজ

করছে। অন্য দিকে তাহিরপুর উপজেলার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলোতে

১২বছর যাবৎ এমবিবিএস ডাক্তার নেই। জোরাতালি দিয়ে কোন

রখমে ফার্মাসিষ্ট দিয়েই দিয়ে চলছে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলো। যার ফলে

চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে প্রতন্ত্য এলাকার অসহায়

জনসাধারন। শ্রীপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবার মান

উন্নয়নের জন্য ৩বছর আগে নতুন ভবন নির্মান করা হলেও এই

এলাকার অসহায় মানুষের চিকিৎসা সেবার উন্নয়ন হয় নি।

উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে ১জন এমবিবিএস ডাক্তার সহ ৪টি পদের

মধ্যে একজন ফার্মাসিষ্ট ছাড়া বাকি ৩টি পদ শুরু থেকেই শূন্য

রয়েছে। ফার্মাসিষ্ট কোন রখমে জোড়া তালি দিয়ে চালাচ্ছেন

উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। এদিকে বাদাঘাট এফ,ডাবলিউ,সি ও

বালিজুরী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে ও চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয়

ঔষধ না থাকায় চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না অভিযোগ রয়েছে

এলাকাবাসীর। জেলার সদর ও বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে

সরজমিনে গিয়ে দেখায় দূরদুরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে

আসা রোগীরা কাংখিত চিকিৎসা না পেয়ে বাড়ি ফিরে

যাচ্ছে। ঐসব লোকজনের সাথে কথা বললে তারা জানান,ডাক্তার

নাই সব হাসপাতালেই জোড়া তালি দিয়ে চিকিৎসা দেয়। সরকার

হাসপাতাল বানাইছে কি এইতার লাগি? হাসপাতাল না থাকলেই ত

ভালা অইত। তাহিরপুর,জামালগঞ্জ,বিশ্বম্ভরপুর,দিরাই,শাল্লা সহ

বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তাগন জানান-স্বাস্থ্য

কমপ্লেক্সের শূন্য পদ গুলোর বিষয়ে উর্ধবতন কর্মকর্তাদের জানানো

হয়েছে। চিকিৎসা সেবার স্বার্থে শুন্য পদ গুলো পূরনের জন্য কার্যকর

প্রদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ

চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন বলেন,উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্য

কমপ্লেক্সের এই অসহায় অবস্থা র্দীঘ দিন ধরেই চলছে বার বার

সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ কে বলেও কোন কাজ হচ্ছে না। তাহিরপুর

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন-জেলা সদর

হাসপাতাল সহ তাহিরপুর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার উন্নতির

জন্য চিকিৎসক,নার্স সহ শুন্য প্রতিটি পদে নিয়োগ দেওয়ার

বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ বার বার অবহিত করার পরও প্রয়োজনীয়

পদক্ষেপ নিচ্ছে না যা খুবেই দুঃখ জনক। সুনামগঞ্জ জেলা সির্ভিল

সার্জন আব্দুল হেকিম জানান-জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য

কমপ্লেক্সে বিভিন্ন পদে জনবল শূন্যতা বিরাজ করছে। জেলার

সার্বিক সমস্যা গুলোর বিষয়ে আমার উপরের উচ্চ পর্দস্থ

কর্মকর্তাগন কে বলেছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451