ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন ও ভবনের আশপাশে দেখা যাচ্ছে বিষধর গোখরা সাপ। সাপের আতঙ্কে ব্যাহত হচ্ছে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের স্বাভাবিক কাজকর্ম।
এরই মধ্যে আজ শনিবার বিকেলে উপজেলা প্রশাসন ভবনের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ের পাশের সিঁড়ির নিচ থেকে একটি বিষধর গোখরা সাপ ধরেন এক সাপুড়ে। একই দিন উপজেলার আড়াইসিধা গ্রামের একটি বসত বাড়ি থেকে পাঁচটি বিষধর গোখরা সাপ ধরা হয়।
কেবল উপজেলা প্রশাসনই নয় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সাপের দেখা মিলছে। পুরো উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে সাপের আতঙ্ক। গত ছয় মাসে অর্ধশতাধিক সাপ মেরেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। সাপুড়ের হাতে ধরা পড়েছে ২৪টি বিষধর গোখরা সাপ। গত বছর উপজেলার খোলাপাড়া গ্রামের পশ্চিম আলগা বাড়ির আবদুন নূরের ছেলে মো. মামুন সাপের দংশনে মারা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই সাপ দেখে এলাকার সাধারণ মানুষ রাতে চলাফেরা করতে ভয় পাচ্ছেন। এ ছাড়া উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রয়েছেন সাপ আতঙ্কে। বিশেষ করে উপজেলা প্রশাসনের নিচতলায় সাপের দেখা মেলায় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মনে আতঙ্ক দেখা দেওয়ায় স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে।
আড়াইসিধা গ্রামের দেওয়ান ভূঁইয়া বলেন, ‘কিছুদিন ধরে আমার ঘরের আশপাশে সাপ দেখতে পাই। রাতের বেলায় চলাচল করতে গেলে ভয়ে বাইরে যেতে পারি না। পরে একজন সাপুড়েকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি। সাপুড়ে বিভিন্ন জায়গায় দেখে পাঁচটি বিষধর গোখরা উদ্ধার করে। প্রতিটি সাপ লম্বায় প্রায় তিন থেকে সাত ফুট।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌফিক আহমেদ খান বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের অফিসার্স ক্লাবের পাশেই কিছু গর্ত রয়েছে। এসব গর্ত থেকে প্রায়ই সাপ উঠে আসে। সাপের আতঙ্কে রাতের বেলায় উপজেলা প্রশাসনিক কার্যালয়ে ভয়ে যেতে পারি না। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে দিনের বেলায় সাপ সামনে দিয়ে চলাফেরা করে। এতে ভয় আরো বেড়ে যায়।’
আশুগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনিক ভবনের আশপাশে যে কয়টি সাপ আছে, তা ধরার জন্য আমরা সাপুড়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এরই মধ্যে একটি বড় বিষধর গোখরা সাপ জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। সাপুড়েকে আবারও আনা হবে এবং উপজেলা প্রশাসনকে সাপমুক্ত করা হবে। পর্যায়ক্রমে উপজেলা প্রশাসনের বাইরে থাকা সাপ ধরার জন্য চেষ্টা করা হবে।’
সাপ ধরতে আসা সাপুড়ে আবুল কালাম লালন বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে উজান এলাকার পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে বিষধর এই সাপ এসেছে। পানির স্রোতের সঙ্গে এসব সাপ বিভিন্ন এলাকায়ও ছড়িয়ে পড়েছে। পুরোনো বাড়িগুলোতে এসব সাপ বাসা বানায়। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’