ঠাকুরগাঁওয়েরবালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় স্যানেটারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়িত্ব
অবহেলা সহ স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার
এমন অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় প্রায় ৩০টি হাট-
বাজার রয়েছে। এসব হাট বাজারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার
বিক্রি করা হয়। এছাড়াও ১২টি বেকারীর কারখানায় অস্বাস্থ্যকর
পরিবেশে খাবার তৈরি করা হয়। খাবারের প্রতি মানুষের আগ্রহ
বাড়াতে এসব কারখানায় বিষাক্ত ক্যামিকেল, রং ও পোড়া তেল দিয়ে
নানা ধরনের খাদ্য সামগ্রী তৈরি করা হয়। এসব অস্বাস্থ্যকর খাবার
খেয়ে বিপদে রয়েছে ওই উপজেলায় প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষ।
জানা গেছে, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হাট-বাজার মনিটরিং এর
জন্য সরকারিভাবে ২০১৫ সালে ৩০ জুলাই ফরিদা ইয়াসমিন নামে
এক নারীকে স্যানেটারি ইন্সপেক্টার (স্বাস্থ্য পরির্দশক) এর দায়িত্ব
দেয় হয়। কিন্তু এই স্যানেটারি ইন্সপেক্টর দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে
কোন হাট-বাজার পরিদর্শনে যায়নি বলে অভিযোগ করে স্থানীয়রা।
এমনকি এই স্যানেটারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের কাছ
থেকে মাসোয়ারা নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
লাহিড়ী বাজারের ক্রেতা নজরুল ইসলাম বলেন, পরিবারের জন্য বাজার
থেকে কোন জিনিসপত্র নেয়া মুশকিল হয়ে গেছে। কারণ বেশির
ভাগ পণ্যের মেয়াদ উত্তীর্ণ অবস্থায় পাওয়া যায়। এমন দীর্ঘদিনের
পঁচা খাবারও এ বাজারে বিক্রি করা হয়।
ফুলতলা গ্রামের কামরুল ইসলাম বলেন, শুনেছি এ উপজেলার জন্য
একজন স্যানেটারী ইন্সপেক্টর রয়েছে। কিন্তু কখনো দেখিনি ওই
কর্মকর্তা বাজার মনিটরিং করতে এসেছে। বাজার মনিটরিং না
হওয়ার কারণে ব্যবসায়ী তাদের ইচ্ছে মত মেয়াদউত্তীর্ণ খারার সহ
ভেজাল দুধ, পচা বিস্কুট বিক্রি করছে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক বেকারী ব্যবসায়ী বলেন, স্যানেটারী
কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াসমিন প্রতি মাসে ৩০টি বাজারের
ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোয়ারা নেয়। এমনকি নবায়ন ফি
বাবাদ অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
স্যানেটারী ইন্সপেক্টর ফরিদা ইয়াসমিনের এ ধরনের কার্যকলাপে
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছেমত
ব্যবসা করে আসছে বলে জানান ক্রেতা হুমায়ুন আহমেদ।
লাহিড়ী বাজারের এক ভুক্তভোগী ক্রেতা নিজাম উদ্দীন বলেন,
স্যানেটারী ইন্সপেক্টরের তদারকি না থাকার কারণে ব্যবসায়ীরা
বাজারে মরা বয়লার মুরগি, পেটে বাচ্চা আছে এমন গরু জবাই করে
বাজারে বিক্রি করছে। আর এসব অসাধু ব্যবসায়ীর কাছে
মাসোয়ারা নিচ্ছেন স্যানেটারী ইন্সপেক্টর ফরিদা ইয়াসমিন।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্যানেটারি ইন্সপেক্টার
(স্বাস্থ্য পরির্দশক) ফরিদা ইয়াসমিনের সাথে মুঠোফোনে
যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সিভিল সার্জন অফিস থেকে
আমাকে বলেছে আমি যেন কোন মামলা না নেই। তাই এখন
পর্যন্ত কোন মামলা নেয়া হয়নি। এছাড়া আমি নিয়মিত বাজার
মনিটরিং করি। তবে মাসোয়ারার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে
বলেন, আমি এ ধরনের কোন কাজ করিনা।
তিনি আরো বলেন, সরকারি ভাবে নবায়ন ফি বাবদ ব্যবসায়ীদের
কাছ থেকে ২৭০ টাকা নেয়া হয়। এর চেয়ে বেশি কোন টাকা
নেয়া হয়না।
এ ব্যাপারে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল
মান্নান বলেন, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।