নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের সাবগাড়ী হাট কমিটির সভাপতি
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গতকাল শুক্রবার ৬ জনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন।
আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন নিলে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজন হওয়ায় তাদের
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতরা হলেন, মো. শহিদ প্রাং (৬০) মোতালেব
(৩২), ইয়াদ আলী (৪৫), আতাহার (৫০) ও আব্দুল আলিম (২৫)।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক জানান, আহতদের হাতের কবজি, কান, মাথা, হাত ও পা সহ
শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম রয়েছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর আশঙ্কাজনক দেখে
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আ.লীগের দুই নেতা বর্তমান
চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ও রবিউল করিম বাবু বিভক্ত হন। তখন থেকেই দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলে
আসছিল। অনিয়ম-দুর্নীতির দায়ে সম্প্রতি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল গ্রুপের আব্দুল হান্নানকে
সাবগারী হাটের সভাপতি পদ থেকে অব্যহতি দেয়া হয়। এ ঘটনায় আব্দুল হান্নানের সাথে বাবু
গ্রুপের ইয়াদ আলীসহ বেশ কয়েকজনের বাগবিতন্ডা হয়। পরে থানায় বিষয়টি আপোষ মিমাংসা
হয়। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার সকালে দূর্গাপুর স্কুল এ্যন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওমর আলীর নেতৃত্বে
সাবগাড়ী হাটের একটি এ্যডহক কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে হান্নানকে না রাখায় ক্ষিপ্ত
হয়ে তখনই হান্নানসহ তার অনুসারী সানোয়ার, আব্দুস সালাম, ওসমান, আব্দুল মানান,
ওয়াসকুরুনী, আব্দুর রশিদসহ ২০ থেকে ২৫ জনের একটি সংবদ্ধ দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাবু গ্রুপের
লোকজনের ওপর হমলা চালায়। এতে বাবু গ্রুপের ছয়জন গুরুত্বর আহত হন।
আহত আতাহারের ছেলে হাসান আলী বলেন, তার বাবা সাবগাড়ী হাটে ধান ভাঙ্গাতে এসেছিল। সে
কোন দল বোঝেনা। ধান মাথায় নিয়ে হাটে পোঁছালে হান্নান ও তার লোকজন তার বাবাকে প্রকশ্যে
কুপিয়ে জখম করে।
উপজেলা আ.লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল করিম বাবু বলেন, চেয়ারম্যান মোজাম্মেলের সমর্থক
আব্দুল হান্নান প্রায় ৪ বছর ধরে সাবগাড়ী হাট কমিটির সভাপতি ছিলেন। কিন্তু উনি সভাপতি
থাকাকালীন সময়ে কোন সভা ছাড়াই স্বেচ্ছাচারিতা করে হাটের বিভিন্ন অনিয়ম দূর্নীতি
করেছেন। এতে এলাকাবাসী তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় গতকাল সাবগাড়ী হাটের এ্যাডহক
কমিটি গঠনের পর পরই ক্ষিপ্ত হয়ে মোজাম্মেল তার বিএনপি সমর্থিতদের দিয়ে তার লোকজনের ওপরে
অতর্কিত হামলা চালিয়ছে।
বিয়াঘাট ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হক দাবি করেন, হাট কমিটির সভাপতি নিয়ে
এলাকার কিছু মানুষ দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছে। তবে বাবুর ইন্ধনেই গ্রামের নিরিহ মানুষদের প্রকাশ্যে
কুপিয়ে জখম করেছে এলাকার কিছু দুষ্কৃতকারীরা। তারা আমার লোক নয়।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দিলীপ কুমার দাস বলেন, খবর পাওয়ার সাথে সাথে
ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আছে এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলা
হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।#