মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার কালিরচর এলাকায় গরু বিক্রির ১৬লাখ টাকা লুট করে নিয়েছে চরাঞ্চলের মি. মিজি ও বাবলা ডাকাত দলের একটি গ্রুপ। মন্টু মাঝি জানান, শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় মুন্সীরহাট থেকে চাঁদপুর চেঙ্গারচর নিজ বাড়িতে যাওয়ার উদ্যেশ্যে রওয়া দেয় গরুর বেপারীরা। বেপারীরা গরু বিক্রি করে যাওয়ার সময় সন্ধ্যার পূর্বে বিকাল সাড়ে ৫টায় কালিরচর এলাকায় ট্রলারটি পৌছলে স্পিড বোর্ড যোগে ৮/১০ জনের একটি ডাকাত দল ট্রলারের গতিরোধ করে অস্ত্রের মুখে সকলকিছু লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতদল ট্রলারে উঠে অস্ত্রের মুখে মারধর করে লুট করে। মন্টু মাঝি আরো জানান, এ সময় গরুর বেপারী সোহেল (৩৫), লোকমান (৬০), কাওসার (৪০), পিন্টু (৫০)সহ ২৫জন আহত হয়েছে। নগদ ১৬ লাখ টাকা, এনড্রয়েড মোবাইল ৬টি নিয়ে যায়। দুই জেলার মাঝখানে নদীর ত্রিমোহনায় ডাকাতদল ডাকাতি করে। গরুর বেপারীরা চাদপুরের চেঙ্গারচর এলাকার বাসিন্দা। মুন্সীগঞ্জ মেঘনা নদীতে পুলিশের টহল বৃদ্ধি পাওয়ায় ডাকাতদল বেশ কিছুদিন যাবৎ ডাকাতি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। হঠাৎ করে দুই গ্রুপকে টপকিয়ে দুই জেলার মহনা থেকে গরুর বেপারীদের কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকাডাকাতি করে লুটে নেয়। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার আধারা ইউনিয়নে কালিরচরে জলদস্যু বাহিনীর প্রধান বাবলা এখন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দাপটে পদ্মা ও মেঘনা নদী তীরবর্তী মানুষ আতংকিত হয়ে দিন কাটাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, দীর্ঘদিন ধরে কালিরচর ও এর আশপাশ এলাকার পদ্মা ও মেঘনা নদীর মোহনায় ডাকাতি, চুরি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির মত ঘটনা নিত্য দিনের। কয়েকমাস পুলিশের ব্যাপক অভিযানের কারনে এলাকাটি শান্ত ছিল। পুলিশ বাবলা বাহিনীর একাধিক সদস্যকে আইনের আওতায় এনেছিল। কিন্তু এখন এলাকাটিতে আবারো বেপরোয়াহয়ে উঠেছে বাবলা বাহিনীর প্রধান বাবলা। এলাকাটিতে যোগযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন না থাকার কারনে সময় মত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছাতে পারেনা। পুলিশ গেলে ডাকাত দল দ্রুতগামী ট্রলার বা সি বোর্ডের মাধ্যমে পালিয়ে যায়। এখন বাবলা বাহিনী এলাকার সাধারণ মানুষকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আতংকে রেখেছে।বাবলা বাহিনীর ভয়ে গ্রামটির মানুষ এখন চরম আতংক রাত কাটে। বাবলা বাহিনীর ডাকাত দলের সদস্যরা প্রতিদিন নদীতে চুরি, ডাকাতি ছিনতাই করে আসছে। এ যেন দেখার কেউ নেই। নদী মাতৃক এলাকাটির পাশে রয়েছে মতলব, মহনপুর ও চাঁদপুর এলাকা। এই বাহিনী প্রতিনিয়ত মেঘনা নদীতে বালুবাহী, তেলবাহী জাহাজ, লঞ্চ, স্টিমার ও নদীতে মাছ ধরার ট্রলারে ডাকাতি ও চাঁদাবাজি করে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে এই বাহিনী গ্রামে এবং নদীতে ত্রাশের রাজত্ব কায়েম করে চলছে। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী কোন প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা। পুলিশ প্রশাসন তাদের বাহিনীর কয়েকজনকে আটক করলেও বাকীদের আটক করতে পারছেনা।এর প্রধান কারণ হলো এই বাহিনীটির নিজস্ব দ্রুত গতির সিবোর্ট রয়েছে। যার সাহায্যে তারা নদীতে নানা ধরনের অপরাধ অপকর্ম চালিয়ে বেড়ায়। নদীতে থাকা মহনপুর থানা পুলিশের সামনে তারা নানা অপরাধ ও অপকর্ম করলেও তারা নীরব দর্শকের ভুমিকায়। প্রতিদিন নদীতে ডাকাতি হলেও নদীতে থাকা মহনপুর থানা পুলিশের সদস্যরা সীমানা সংক্রান্ত জটিলতার অযুহাত দেখিযে বিষয়টি এড়িয়ে যায়। তাছাড়া নদীতে থাকা কোস্টগার্ডের সদস্যরাও নিয়মিত ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে বলেও অভিযোগ ভুক্তোভোগীদের। কালিরচর গ্রামের একাধিক স্থানীয় নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বাবলা বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে নদীতে ডাকাতি করে আসছে। বাবলা বাহিনীর প্রধান বাবলার বিরুদ্ধে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় অস্ত্র ডাকাতি সহ ৬টি মামলা রয়েছে। নদীতে থাকা নৌ পুলিশ তাদের আটক না করে উল্টো সহযোগিতা করে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাঝে মধ্যে কোস্ট গার্ডের সদস্যরাও নীরব থাকে। কালিরচর গ্রামের শহিদ জানান, মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশ বাবলা বাহিনীকে কয়েকবার ধাওয়া করেছিল।সে সময় বাবলার অন্যতমসহযোগীদেরকেও আটক করে পুলিশ। নদীতে থাকা কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের ছত্রছায়ায় বাবলা নদীতে আবারো বেপরোয়া হয়েছে বলেও জানান একাধিক গ্রামবাসী।এ বিষয়ে জলদস্যু বাহিনীর বাবলার অন্যতম সহযোগী দেওয়ানকান্দি গ্রামের খালেকের সাথে নিজের পরিচয় গোপন রেখে ফোন করিলে তিনি জানান, বাবলা ভাই নদীতেই আছে। শুনলাম পুলিশ তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে।জবাবে খালেক বলেন, বাবলা ভাইকে মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশ ধরতে পারবেনা। তিনি রাগ করে বলেন, আরে ভাই নদীতে নৌ পুলিশ বাবলা ভাইয়ের সাথে দেখা করে। কেন নৌ পুলিশ দেখা করে বাবলার সঙ্গে? এমনপ্রশ্নের জবাব না দিয়েই ফোনটি কেটে দেন খালেক। পরে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।মতলব উত্তর নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো: ইউনুছ বলেন, বাবলা বাহিনীর প্রধান বাবলাকে ধরার জন্য গজারিয়া নৌ পুলিশসহ একাধিক টিম চেষ্টা চালাচ্ছে।আপনার মন্ত