নুরুল আলম ডাকুয়া, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি :
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের দরিদ্র পরিবারে জন্ম
গ্রহন করে ৮ম শ্রেণীর ছাত্র শুভ। জন্মের ৪ বছর পর বাবাকে হারান। দরিদ্র শুভর পিতা মৃত
আব্দুর রশিদ ছিলেন একজন রেডিও মেক্যানিক। জমিজমা বলতে তার ছিল বাড়ি
বাস্তভিটা। মৃত কালে আব্দুর রশিদ ৪ ছেলে এক মেয়েও স্ত্রীকে রেখে যান। ৫ সন্তানকে
নিয়ে শুভর মাতা মোরশেদা বেওয়া অতি কষ্টে লালন পালন করেন। শুভর বড় ভাই মাছুদ ও
সোহেল বিবাহ করে আলাদা সংসার করেছে। অভাবের সংসারে শুভর মাতা অতি কষ্টে
মেয়ে পাত্রস্থ করেন। শুভর মাতা মোরশেদা সংসারের হাল ধরেন ৩য় সন্তান সুমন। সুমন
অভাবের তারণায় ঢাকায় একটি বে সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরী করে যে বেতন পান
সে বেতনের টাকায় কোন রকমে সংসার চালান। এমত মোরশেদার সংসারে সর্ব
কনিষ্ট সন্তান শুভর লেখা পড়ার খরচ যোগাতে সুমনের বেতনের টাকায়।
চলতি শিক্ষা বর্ষ ২০১৭ সালে নতুন দুলাল ভরট দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের
সহকারি শিক্ষক শামছুল হকের মাধ্যমে উক্ত বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি হয়
পিতৃহারা শুভ। বর্তমান সরকারের বিনামূল্যের সকলের জন্য বই উৎসবে সকলে বই
পেলেও বই জোটেনি শুভর ভাগ্যে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে সাময়িক বরখাস্তকৃত
প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক সু-কৌশলে বিনামূল্যে বিতরণ যোগ্য পাঠ্যবই
বিদ্যালয়ে না রেখে নিজ বাড়িতে রাখেন। উক্ত প্রধান শিক্ষক টাকার বিনিময়ে নিজ
বাড়ি থেকে বই বিতরণ করছেন। গত ১০ জানুয়ারী থেকে ১৬ জানুয়ারী পর্যন্ত
কয়েক বার বইয়ের জন্য শুভ সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে
বইয়ের জন্য আকতি জানালেও মোজাম্মেল হক জানান ৩০০ টাকা না হলে বই দিব
না। বই না পেয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে বাড়ি ফিরে যায়।
এব্যপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম জানান, অবৈধ ভাবে বই
বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক নিজ বাড়িতে রাখার কারনে আমরা বই বিতরণ করতে
পাছিনা। টাকার বিনিময়ে বই বিতরনের বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন।
১৭ জানুয়ারী সহকারি শিক্ষক শামছুল হক ২০০ শত টাকা সহায়তা করলে শুভ
সেই টাকা বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হকের কাছে প্রদান করে বই
নিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে মুঠোফোনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ
হাবিবুল আলমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবং বিদ্যালয়ের বিনামূল্যের বিতরণের বই নিজ বাড়িতে রাখার বিষয়টিও খতিয়ে
দেখা হবে।