হেলাল শেখ-বিশেষ প্রতিনিধি ঃ
রাজধানী ও ঢাকার সাভার আশুলিয়ায় যেখানে-সেখানে ভেজাল ও নি¤œমানের ওষুধের দোকান। রোগীদের
জিম্মি করে চিকিৎসার নামে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার সরেজমিনে জানা যায়, সাভার আশুলিয়ায় প্রায় ২ থেকে ৩শ’ ওষুধের দোকান রয়েছে। সেই সাথে
হাট-বাজার ও রাস্তার দু’পাশে টেবিল ফেলে ভুয়া ডাক্তার কবিরাজ ওষুধ বিক্রি করছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে
পড়েও কেউ কেউ রাস্তায় ওষুধ বিক্রি করেন। অনেকের ভুল চিকিৎসা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে সচেতন
মহলে। ওষুধ সম্পর্কে ধারনা নেই তবুও সে ওষুধ বিক্রেতা! অবাধে তারা ওষুধ বিক্রি করছে। আল্লাহ হায়াত
দিলে, জীবন বাঁচায় যে ওষুধ। সেই ওষুধ তেমনি বিপদজনক হতে পারে। যদি রোগ না জেনে ওষুধ সেবন
করানো হয়। তাহলে রোগী ভোগে যায় বলে সাধারণ মানুষের অভিমত।
জানা গেছে, এসব ভুয়া ডাক্তার ও কবিরাজের ভুল চিকিৎসায় অনেক মানুষের অকালে মৃত্যু হয়। অন্যদিকে
ভেজাল ও নি¤œমনের ওষুধে বাজার সয়লাব। বেশিরভাগ ওষুধের দোকানে নেই কোনো ড্রাগ লাইসেন্স। কিছু
ওষুধ কোম্পানির লোকজন দেখা যায়,দিনে সবসময় ওষুধের দোকান ও হাসপাতালের ডাক্তারের কাছে গিয়ে ভিড়
করেন তারা।
জানা যায়, বাংলাদেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা, থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে যেখানে-সেখানে ওষুধের দোকান
রয়েছে। বেশিরভাগ দোকানে বিক্রি হয় ভেজাল ও নি¤œমানের ওসুধ। উল্লেখ্য গত ২১-০৮- ২০১৬ ইং তারিখে
ঢাকার সাভারে ভুয়া ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় মনতাজুল ইসলাম (৩১), এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। জানা যায়,
ওই দিন রবিবার দিবাগত রাতে মনতাজুলের বুকে প্রচন্ড ব্যথা শুরু হয়। ‘সাভার উত্তর রাজাশনের মন্ডল
ফার্মেসিতে’ তাকে নিয়ে গেলে এরপর ভুয়া ডাক্তার শহিদুল ইসলাম তার শরীরে ইনজেকশন পুশ করে এবং
বিভিন্ন ব্যথার ওষুধ দেয়। তার এক ঘন্টা পর আবারও মনতাজুলের বুকে প্রচন্ড ব্যথা বাড়লে তাকে স্থানীয়
হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রোগীকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসার পর আবারও ওই ভুয়া
পল্লীচিকিৎসকের দেওয়া ওষুধ সেবন করায় ও ইনজেকশন দেয়া হয় তাকে। পরের দিন সোমবার সকালে রোগী ওই
যুবকের মৃত্যু হয়। নিহতের বাবা মোজাহার অভিযোগ করে সাংবাদিকদেরকে বলেন, ভুল চিকিৎসার কারণেই
তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এই ভুয়া ডাক্তার শহিদুল কিছু দিন আগেও রাজমিস্ত্রি ছিলো!
জানা গেছে, সারা দেশের মতো সাভার, আশুলিয়ার জামগড়া ও ধামরাইয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক ভুয়া ডাক্তার ও
কবিরাজ রয়েছে। আর ঢাকার আশেপাশের এলাকায় কয়েক হাজার ভুয়া ডাক্তার ও কবিরাজ প্রতারক রয়েছে। তারা
রোগীদের জিম্মি করে চিকিৎসা করে বলে অভিযোগ আছে। এমনকি জটিল রোগের নাম করে লাখ টাকা
হাতিয়ে নেয়ার নজিরও রয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী বলে মনে করেন সচেতন মহল।