এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে
শেখ হুমায়ুন হক্কানী গাইবান্ধা থেকে ঃ সুন্দরগঞ্জের সরকার দলীয় সংসদ
সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যার ২৬ দিন পরেও তদন্তে উলেখযোগ্য কোন
অগ্রগতি হয়নি। এই নৃশংস হত্যাকান্ডের কুশীলবরা এখনও ধরা ছোঁয়ার
বাইরে রয়েছে। এমপি লিটন হত্যাকান্ডের প্রকৃত খুনিদের গ্রেফতার ও
বিচারের দাবিতে পরিবারের পক্ষ থেকে বুধবার গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে এক
সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন এমপি লিটনের বড় বোন আফরুজা বারী,
হত্যা মামলার বাদী ছোট বোন ফাহমিদা বুলবুল কাকলী, চাচাত ভাই
তৌফিকুর রহমান আইনী মুকুট, ফুফাতো ভাই আনিসুর রহমান, ভাগ্নি
মেহের নিগার মমি, চাচাতো বোন শিবলী আকতার।
সংবাদ সম্মেলনে আফরুজা বারী তার লিখিত বক্তব্যে উলেখ করেন, এটি
ভাড়াটিয়া খুনী দ্বারা সংঘটিত পরিকল্পিত একটি হত্যাকান্ড। এর পিছনে
রয়েছে মদদতদাতা, পৃষ্ঠপোষক, পরিকল্পনাকারী অর্থের যোগানদাতা এবং
সর্বশেষ হত্যাকারীরা। এরা হতে পারে কোন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান দল বা কোন
আদর্শিক অপশক্তির। নির্মম এ হত্যাকান্ডের ঘটনার আগে ও পরে কিছু
প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে বলে তারা উলেখ করেন। গুলি বিদ্ধ হওয়ার পর এমপি লিটন
প্রায় ১ ঘন্টা সচেতন ও সজ্ঞানে বেঁচে ছিলেন। সে সময় কেন খুনিদের
পরিচয় নেয়া হলো না?
তিনি আরও বলেন, খুনিরা লিটন হত্যাকান্ডের জন্য নিরাপদ জায়গা হিসেবে
তার নিজ বাড়িকেই বেছে নেয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, তার বাড়িটিই
খুনিদের কাছে নিরাপদ বিবেচিত হলো কেন? কিভাবে খুনিরা পরিচয় না
দিয়েই ঘরের ভিতরে ঢুকে পড়ার সুযোগ পেল? তাছাড়া লিটনের অতন্দ্র প্রহরী
জার্মান শেফার্ড কুকুর দুটো ওই সময়ে কোথায় ছিল? কেন গিয়েছিল?
দুর্বৃত্তরা রিভলবারের ৫টি গুলি করার পরও কেন তার নিকটজনরা লিটনের কাছে
এলো না? লিটন গুলিবিদ্ধ হবার পর কাউকে কাছে না পেয়ে তাকে দৌড়ে
বাড়ির ভেতরে আঙ্গিনার দিকে ছুটে যেতে হলো কেন? তিনি আরও প্রশ্ন
রাখেন, কেন লিটনের ঘনিষ্ঠজন, দলীয় নিবেদিত নেতাকর্মী এবং পরীক্ষিত
সহযোদ্ধারা কেউই তার পাশে ছিল না, তাদের কি দুরে সরে দেয়া হয়েছিল?
আফরুজা বারী আরও বলেন, লিটন আওয়ামী লীগের একজন অকুতোভয় কর্মী
ছিলেন। সুন্দরগঞ্জ এলাকায় তিনি সততা, নিষ্ঠা, উন্নয়ন, শান্তি ও
প্রগতির ঝান্ডা উড়িয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ
যখন উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, সেই সময়ে লিটন তার সাথে
সহযোদ্ধা হিসেবে সুন্দরগঞ্জের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে দিনরাত অক্লান্ত
পরিশ্রম করেছেন। কিন্তু দুর্বৃত্তরা এমপি লিটনকে হত্যার মাধ্যমে এলাকার
মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের পথকে রুদ্ধ করে দিয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এখনও হতাশ নই। প্রধানমন্ত্রী
হত্যাকান্ডের বিষয়টি দেখছেন। যারা তদন্ত করছে বা অন্য কাউকে দিয়ে
তদন্ত করাতে হবে কি না তিনিই সেটি ঠিক করবেন। এব্যাপারে আমাদের
কোন বক্তব্য নেই। আমরা আশায় বুক বেঁধে আছি। শীঘ্রই প্রকৃত
খুনীদের মুখোশ উন্মোচিত হবে বলে আমরা মনে করি।
এমপি লিটনের শূন্য আসনে উপ-নির্বাচনের ব্যাপারে সাংবাদিকদের এক
প্রশ্নের জবাবে মামলার বাদী ছোট বোন ফাহমিদা বুলবুল কাকলী বলেন, এই
মুহুর্তে নির্বাচন নিয়ে আমরা ভাবছি না। আমরা আমাদের ভাইয়ের
হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি
হোক, তা দেখতে চাই।