হেলাল শেখ, ঢাকা ঃ
ঢাকার সাভার উপজেলায় ‘৩ টি থানা’ প্রায় ১৫ লাখেরও বেশি জনগণ বসবাস করেন।
ট্রাফিক পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও শিল্প পুলিশসহ প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা রয়েছেন শিল্প
এলাকায়। কিন্তু নাগরিক সমস্যা দিন দিন বাড়ছে বলে অভিযোগ উঠেছে সাধারণ মানুষের
মনে। অনেকেই বলছেন, দেশে যেখানে পুলিশ ও সাংবাদিক নিরাপদ নয়, সেখানে সাধারণ
জনগণ নিরাপত্তা পাওয়ার আশা করা যায় না।
রবিবার সরেজমিন জানা গেছে, ঢাকার সাভার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়, শিল্প কারখানা
স্থাপন করা হলেও ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। এলাকায় হাজার হাজার অবৈধ গ্যাস
সংযোগ রয়েছে, এর কারণে বৈধ গ্রাহকরা তাদের চাহিদামত গ্যাস পাচ্ছেন না বলে
অনেকেরই অভিযোগ রয়েছে। সাভারের বিভিন্ন রাস্তার বেহাল অবস্থা, এ যেন দেখার কেউ
নেই, এর ফলে বেশিরভাগ যানবাহনে উঠলেই ঠেঁকনায় বুক ব্যথা হয়। অন্যদিকে বেশিরভাগ
গাড়ির বৈধ কাগজপত্র নেই বললেই চলে, সে সকল গাড়ির চালকরা পুলিশকে আড়াল করে রাস্তার
এদিক ওদিক তাকিয়ে দুর্ঘটনার সৃষ্টি করেন বলে বিভিন্ন যাত্রী জানান।
উক্ত উপজেলার নির্বাচন অফিসার মুহাম্মদ আমিনুর রহমান জানান, সাভারে জনসংখ্যা
প্রায় ১৫ লাখেরও বেশি, ভোটার সংখ্যা ‘৮ লাখ ৫৪ হাজার ৩৯৮ জন। তিনি বলেন, বহিরাগত
অনেকেই ভোটার হতে আগ্রহী হলেও বিভিন্ন কারণে তাদেরকে ভোটার করা হয় না এখানে।
সুত্র জানায়, সাভারে শিল্প এলাকা হওয়ায় প্রতিদিন অনেক মানুষ দেশের ৬৪ জেলা ও উপজেলা
থেকে কাজের সন্ধানে আসেন এবং অনেকেরই চাকুরি না হলে গ্রামের বাড়িতে ফিরে যান।
এটিও একটি কারণ। অন্যদিকে সাভারে হাজার হাজার লাইসেন্সবিহীন অবৈধ যানবাহন
চলাচল করায় দুর্ঘটনা বাড়ছে। পুলিশ যদি গাড়ির কাগজপত্র দেখতে যান, বিভিন্ন কৌশলে
গাড়ির চালকরা তদবির শুরু করেন বলে কয়েকজন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য জানান।
জানা গেছে, সাভার এলাকায় অফিস আদালত, স্কুল-কলেজ, শিল্প কারখানাসহ বিভিন্ন
প্রতিষ্ঠানে সকালে ও বিকালে রাস্তায় যানজটে পড়েন, এ দুর্ভোগের শেষ নেই। সাভারে
প্রায়ই দেখা যায়, ৩টি থানা পুলিশই ‘ভিআইপি ও ভিভিআইপি’ ডিউটি করেন। এর
কারণে পুলিশ সদস্যদের অনেকেই বলেন, ২৪ ঘন্টা ডিউটিও করতে হয় তাদেরকে। অন্য সমস্যা
থাকলেও সাভারের ৪৮৬ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে বিদ্যুতের সংযোগের বিষয়ে তেমন কোনো
অভিযোগ নেই। তাছাড়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেই অনিয়ম রয়েছে।
বিশেষ করে সাভারে সরকারী জমি দখল, রাস্তা-ঘাট, ফুটপাথ দখল করে ভেজাল ও নি¤œমানের
খাবার বিক্রি করছেন হকারসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক। সাভারের এক নজরে “৩
টি থানা-সাভার মডেল থানা, হাইওয়ে থানা, আশুলিয়া থানা” বিভিন্ন এলাকায়
ছাড়পত্রবিহীন ইটভাটা, লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসিসহ অনেক ভেজাল ও নি¤œমানের খাবারের
প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে জমজমাট ভাবে বেচা-কেনা হয় বিকালে। অনুসন্ধানে
জানা গেছে, সাভারের বিভিন্ন এলাকায় অটো রিকসাসহ প্রায় ৫ হাজারেরও বেশি
লাইসেন্সবিহীন গাড়ি চলাচল করে। বিভিন্ন খাত থেকে সরকার প্রতি বছরে কোটি
কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে বলে অনেকেই জানান।
এ বিষষে প্রশাসন কর্মকর্তা বিকাশ বিশ্বাস জানান, বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চলছে।
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে উক্ত ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ
বিষয়ে ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী আব্দুস সবুর আরাফ বলেন, একটি পত্রিকায় নিউজ
দেখলাম, সাভার আশুলিয়ায় বাদাম বিক্রেতা হকার থেকে শুরু করে প্রায় অর্ধশতাধিক খাত
থেকে কিছু পুলিশ মাসোয়ারা উঠাচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। চোরে চোরে খালাতো ভাই,
সেখানে সাধারণ জনগণ কি আশা করতে পারে?।