মোঃ সামিউল আলম, বিরামপুর (দিনাজপুর):
দিনাজপুরের বিরামপুরে ধানজুড়ী এগ্রিকালচারাল কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড- এর সভাপতি, সম্পাদক ও
ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে পত্রিকায় মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ এবং
সোসাইটি ধ্বংসের পায়তারার বিরুদ্ধে ১৩ই ফেব্রুয়ারী, সোমবার বেলা ১০টায়
উপজেলার ধানজুড়ীতে অবস্থিত সোসাইটি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন
অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সোসাইটির সভাপতি ও সম্পাদক স্বাক্ষরিত
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সম্পাদক ফ্লারিয়াস হেমব্রম। এ সময় সোসাইটির ৭৪ জন
সদস্যের মধ্যে ৬০ জনই উপস্থিত ছিলেন।
এতে বলা হয়, বিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নে স্থায়ীভাবে বসবাসরত সমাজের
অনগ্রসর আদিবাসী জনগোষ্ঠীর নারী-পুরুষদের নিয়ে ১৯৫৮ সালে ধানজুড়ী
এগ্রিকালচারাল কো-অপারেটিভ সোসাইটি গঠিত হয়। যার সরকারী (সমবায়
অধিদপ্তর) রেজিঃ নং-৪৭/১। উক্ত সোসাইটি গঠিত হবার পর থেকে অত্র এলাকার
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক উন্নয়নে অত্যন্ত সুনামের সাথে
অদ্যবধি কাজ করে আসছে। বর্তমানে সোসাইটির নামে প্রায় ৩’শ বিঘা
চাষাবাদের জমি সহ অন্যান্য অর্থ-সম্পদ রয়েছে। যার মালিকানা সোসাইটির
সদস্যগণের।
সমবায় সমিতি বিধিমালা অনুযায়ী প্রতি তিন বছর পর পর সদস্যদের প্রত্যক্ষ
ভোটে ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়। এ ব্যবস্থাপনা
কমিটি সোসাইটির গঠনতন্ত্র মোতাবেক যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে। গত
১৩/০৭/২০১৬ইং তারিখে সোসাটির ৩ বছর মেয়াদে নতুন ব্যবস্থাপনা কমিটি
নির্বাচিত হয়। এতে সাবেক সভাপতি বারনাবাস মূরমূকে পরাজিত করে বিপুল
ভোটের ব্যবধানে সেরাফিন হেমব্রম সভাপতি পদে নির্বাচিত হন। সোসাইটি’র
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে তৎকালীন উপজেলা সমবায়
অফিসার (অঃদাঃ) প্রদীপ কুমার রায় দায়িত্ব পালন করেন। নব-নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা
কমিটি দায়িত্ব গ্রহন করার পর হতে সুষ্ঠুভাবে সোসাইটির যাবতীয় কার্যক্রম
পরিচালনা করে চলেছেন। কিন্তু নির্বাচনে পরাজিত হয়ে সাবেক সভাপতি
বারনাবাস মূরমূ উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা (অঃদাঃ) প্রদীপ কুমার রায় এর
যোগসাজসে চক্রান্ত করে সোসাইটির ক্ষতি সাধনের অপচেষ্টা করছেন। এ কারণে
আমরা গত ১৭/১২/২০১৬ইং তারিখে রংপুর বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়ের যুগ্ম
নিবন্ধকের বরাবর সমবায় কর্মকর্তা (অঃদাঃ) প্রদীপ কুমার রায়-এর বিরুদ্ধে লিখিত
অভিযোগ প্রদান করি। পরবর্তীতে প্রদীপ কুমার রায়কে উপজেলা সমবায়
কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্ব হতে প্রত্যাহার করা হয়।
এতে আরো বলা হয়, গত ৬ ফেব্রুয়ারী, সোমবার দিনাজপুরের স্থানীয় একটি
পত্রিকায় আমাদের সোসাইটির বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা ও বানোয়াট খবর প্রকাশ
করা হয়। প্রতিবেদক সোসাইটির বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটির কারো সাথে
কোন যোগাযোগ না করে এবং বক্তব্য না নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন। সংবাদে
লেখা হয়েছে, সাজানো নির্বাচন কমিটি দিয়ে অবৈধভাবে আমাদের বর্তমান
কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংবাদটিতে আরো লেখা হয়, সমবায় কর্মকর্তা
(অঃদাঃ) প্রদীপ কুমারের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী নাকি বর্তমান
সভাপতি ও সম্পাদক অবৈধভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। অথচ এই সমবায় কর্মকর্তা
প্রদীপ কুমার রায়-ই ছিলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি। তাহলে প্রদীপ
কুমার রায় কিভাবে বর্তমান কমিটিকে অবৈধ বলেন? তিনি নির্বাচন কমিটির
সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে যাচাই-বাছাই করে আমাদের সকল প্রার্থীর মনোনয়ন
পত্র বৈধ ঘোষনা করেন এবং নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটিকে
নির্বাচিত ঘোষনা করেন। যার লিখিত রেজুলেশন আমাদের কাছে রয়েছে।
সুতরাং, এ বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদটি পুরোপুরি মিথ্যা। নির্বাচিত
ব্যবস্থাপনা কমিটি দায়িত্ব গ্রহনের পরে প্রদীপ কুমার রায় মোটা অংকের টাকা
ঘুষ দাবি করলে সোসাইটির বর্তমান সভাপতি ও সম্পাদক তা দিতে অপারগতা
জানান। এতে প্রদীপ কুমার রায় রেগে গিয়ে পরাজিত সভাপতি প্রার্থী
বারনাবাস মূরমূকে সাথে নিয়ে সোসাইটির পেছনে উঠেপড়ে লেগেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে পত্রিকায় মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশের জন্য তীব্র
প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়। সেই সাথে সাংবাদিকদের সঠিক তথ্য নিয়ে
সংবাদ প্রকাশের অনুরোধ জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সোসাইটির সম্পাদক ফ্লারিয়াস হেমব্রম সাংবাদিকদের
জানান, সোসাইটি বিরোধী কার্যকলাপের জন্য সাবেক সভাপতি বারনাবাস
মূরমূ ও সদস্য মর্চেলিউস কিস্কুকে কারণ দর্শানোর নোটিস প্রেরনের সিদ্ধান্ত
গ্রহণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সদ্য প্রত্যাহারকৃত সমবায় অফিসার (অঃদাঃ) প্রদীপ কুমার
রায় এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার দু’টো নম্বরই বন্ধ পাওয়া
যায়।
জেলা সমবায় অফিসার তোজাম্মেল হক মুঠোফোনে জানান, তিনি ছুটিতে
আছেন। তাকে জড়িয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়েছে বলে তিনি জেনেছেন।
তিনি আরো জানান, অফিসে যোগদান করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ
করা হবে।