গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি:
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার এককালের সেরা প্রতিষ্ঠান নাজিরপুর দ্বি-মূখী
উচ্চবিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীদের আনাগোনায় ষোলকলায় পূর্ণ হলেও নানামূখী
সমস্যায় জর্জরিত হয়ে বর্তমানে অবকাঠামোগত আসন সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ঘরের
ওপর ঘর বানিয়ে পাঠদান কর্মসুচি অব্যাহত রাখা হচ্ছে।
সরেজমিন গিয়েদেখা যায়, নাজিরপুর দ্বিমূখী উচ্চবিদ্যালয়টি বিগত ১৯৫৬
সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ৬বছর পর ১৯৬২সালে একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ
করে।সমকালীন উচ্চবিদ্যালয়টি সমস্যার আবর্তে নিমজ্জিত থাকলেও সাংগঠনিক
কর্মকান্ড জোরদার করার জন্য হয়তো বা সমস্যাগুলো নজরে আসেনি কারো। কিন্তু
কালের বিবর্তনে হাজারো সমস্যার মধ্যদিয়েও বিগত ২০১৪ সালে বিদ্যালয়টি
উপজেলার সেরা বিদ্যালয়ের গৌরব অর্জন করেছিল। বর্তমানে বিদ্যালয়টি ছাত্রছাত্রীর
সংখ্যা ১হাজার ৫৩৯জন। শিক্ষার্থী বাড়লেও বাড়েনি শিক্ষকদের ষ্টাফিং প্যাটার্ন ।
বিধিমোতাবেক ৫০জন শিক্ষার্থীর জন্য ১জন শিক্ষক পাঠদানে কর্মরত থাকার কথা
থাকলেও বর্তমানে সেখানে ৩২জন শিক্ষকের স্থলে মাত্র ২৩জন শিক্ষক দিয়ে ১৯টি
শাখায় ডাবল শিফটে ক্লাশ পরিচালনা করা হচ্ছে। এরমধ্যে দুইজন শিক্ষকের
বেতনভাতাদি দেয়া হচ্ছে স্কুল ফান্ড থেকে। লাইব্রেরীয়ানসহ মোট ৬জন কর্মচারি
কর্মরত থাকলেও কাজের পরিধি অনুপাতে কর্মচারি সংখ্যা বাড়ানো উচিত বলে
মনে করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। হিন্দু ধর্ম বিষয়ে শিক্ষক না থাকায় প্রধান শিক্ষক
নিজেই হিন্দু ধর্ম ক্লাশ নিয়ে থাকেন বলে জানান তিনি।
প্রধান শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন আরো জানান, ৯০ফুট বাই ৩০ফুট পুরাতন একটি
একাডেমিক ভবন সম্পূর্ণ রুপে পরিত্যক্ত। বিজ্ঞান ভবনের জীর্ণদশা বর্তমান তথ্য-
প্রযুক্তির বিশ্বায়নের যুগে ক্লাশ সমূহকে নিরুৎসাহিত করতে চলেছে। স্কুলের
মাত্র ১৬টি কক্ষে পাঠদান বর্তমান শিক্ষার্থীদের জন্য অপ্রতুল হওয়ায় বাধ্য হয়েই
ঘরের উপর ঘর বানিয়ে একই শিক্ষক দ্বারা ডাবল শিফটে ক্লাশ নিতে বাধ্য হচ্ছেন
তারা।
শিক্ষার্থী অনুপাতে ২৮৮ জোড়া বেঞ্চ দরকার হলেও অর্থনৈতিক দৈন্যতার কারনে মাত্র
২৫০ জোড়া বেঞ্চ দিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। একদিকে
অপ্রতুল শিক্ষক সংখ্যা অপর দিকে শ্রেণী কক্ষ ও আসন স্বল্পতায় ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা
কার্যক্রম। তবে একটি দ্বিতল ভবন থাকলেও সুষ্ঠুভাবে শিক্ষাক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে
প্রধান শিক্ষক আপন উদ্যোগে একতলা ভবনের ছাদে টিনশেডের নতুন ভবন তৈরি করে
২০১০ সাল থেকে শ্রেণিকক্ষের অপ্রতুলতা মেটানোর চেষ্টা করছেন। তার ভাষ্যমতে
কমপক্ষে ২৩টি কক্ষ দ্বারা শিক্ষার্থী আসন সংকুলান করা সম্ভব হবে।
মোটকথা স্কুলটির অভাব অভিযোগ সমস্যা যাই থাকুকনা কেন সেখানে শিক্ষার
পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখতে ইচ্ছার কমতি নেই বলে প্রতিয়মান হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ
জানান, তাদের অভাব অভিযোগ নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে বারবার আবেদন নিবেদন করেও
কোন সুফল পাননি তারা। অবিলম্বে স্কুলটির সমস্যা সমাধানের জন্য শিক্ষার
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা একান্ত জরুরী বলে জানান প্রধান শিক্ষক মো. ফরিদ
উদ্দিন মন্ডল।