আঁচিল মুখের সৌন্দর্য নষ্ট করতে পারে। তাই আঁচিল নিয়ে দুর্ভাবনা আছে অনেকের। এই ভাবনা থেকেই জন্ম হয়েছে আঁচিল সম্পর্কিত অনেক ভ্রান্ত ধারণার।
অনেকের ধারণা, ভাতের চাল খেলে মুখে আঁচিল ওঠে। আবার অনেকের ধারণা, প্রচলিত আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে আঁচিল ভালো হয় না, তবে অন্য সব পদ্ধতিতে ভালো হয়। দুটো ধারণাই একেবারে ভুল। প্রথম, ভাতের চাল খাওয়ার সঙ্গে আঁচিল হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। যেহেতু কিছু কিছু আঁচিল দেখতে সিদ্ধ চালের দানার মতো, তাই আঁচিলের সঙ্গে চালের সম্পর্ক খোঁজেন অনেকে। আর এভাবেই প্রচলন ঘটেছে এই ভ্রান্ত ধারণার।
কেউ কেউ আছেন, যাঁরা একটু-আধটু ভাতের চাল দাঁত দিয়ে কাটার বদঅভ্যাসে আক্রান্ত। এটা বদঅভ্যাস অবশ্যই এবং এতে বদহজমও হতে পারে, তবে আঁচিল হয় না। ভাতের চাল খেলে তা পেটে গিয়ে হজম হয়ে পুষ্টিটুকু রক্তে চলে যায়। এতে আঁচিল হওয়ার মতো কোনো ঘটনার সূত্রপাত হবে না।
আঁচিল মূলত দুই ধরনের। আর দুটোর কারণই ভাইরাস। এক ধরনের আঁচিলের নাম মলাস্কাম কন্টাজিওসাম। এটি পক্স ভাইরাস দলের ভাইরাস থেকে তৈরি। আঁচিলের অন্য একটি ধরন ওয়ার্টস বা ভেরুকা। এটি হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস থেকে তৈরি হয়। উভয় ধরনের আঁচিলই ছোঁয়াচে; একজন থেকে অন্যজনের এটি হতে পারে। অনেকেই এই কথা জানেন না। মলাস্কাম কন্টাজিওসাম আঁচিল সাধারণত এমনিতেই সেরে যায়। আর ভেরুকার জন্য চিকিৎসা প্রয়োজন। ক্রায়োসার্জারি বা ইরেকট্রোডেসিকেশনের মাধ্যমে এটি ভালো করা যায়। তবে রোগের সূচনাতেই চিকিৎসা করা ভালো ও সহজ।
আঁচিলের সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা জানেন চর্ম বিশেষজ্ঞরাই; অস্ত্রোপচার তাঁরাই করেন। আঁচিলের ভ্রান্তকর অপচিকিৎসার ফাঁদে না পড়ে সঠিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিন এবং নিজেকে সুস্থ রাখুন।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ।
সূত্র, ntv/