ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
খননের অভাবে ঝিনাইদহের অধিকাংশ নদ-নদী পরিনত হয়েছে মরা খালে। ফলে নদীর
তীরে জেগে ওঠা চরে করা হচ্ছে চাষাবাদ। অন্যদিকে নদী দখল উৎসবে মেতে
উঠেছেন নদীর তীরে বসবাসকারী প্রভাবশালীরা। নদী দখলমুক্ত করতে বা খনন করে
পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করছেন না সংশ্লিষ্ট
কর্তৃপক্ষ।
জেলা প্রশাসকের দেওয়া তথ্যমতে, ঝিনাইদহের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদ-নদীগুলো
হল নবগঙ্গা, চিত্রা, কুমার, বেগবতী,গড়াই, ইছামতি, ডাকুয়া, কপোতাক্ষ,
কালীগঙ্গা, কোদলা, ফটকি ও বুড়ি। যার আয়তন ১৬ শ’ ৪১.৭৫ হেক্টর।
উপবিভাগীয় প্রকৌশলী, ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কনক কুমার
বিশ^াস জানান, ঝিনাইদহের নদ-নদীগুলো পূনঃখননের জন্য মন্ত্রনালয়ে প্রকল্প
পাঠানো হয়েছে। তা অনুমোদন হলে পূনঃখনন শুরু করা হবে।
একসময় ঝিনাইদহ নবগঙ্গা নদীতে পাওয়া যেত পর্যাপ্ত ঝিনুক। সেই সূত্র
ধরেই জেলার নামকরন করা হল ঝিনাইদহ। নদীপাড়ের বাসিন্দারা জানান,
ঝিনাইদহের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ১২ টি নদী। এ নদীগুলো ছিল প্রচন্ড প্রমত্তা।
নদীতে পাওয়া যেত মিঠা পানির মাছ, চলাচল করত বড় বড় নৌকা। যার সূত্র ধরে
নদী পাড়ে গড়ে উঠেছিল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
নদীর পানি দিয়ে করা হত চাষাবাদ। কিন্তু এ চিত্র এখন একেবারেই উল্টো। নদীর
বিভিন্ন স্থানে জেগে উঠেছে বড় বড় চর। করা হচ্ছে ধান, সরিষা, কলাই,মশুরী,
পেঁয়াজ সহ ফসলের চাষাবাদ, চরানো হচ্ছে গবাদি পশু। নদীতে কমছে মিঠা
পানির মাছ। বর্ষা মৌসুমে নদীতে কিছুটা পানি থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে
চলাচল করা যায় হেটে। জেলার সব নদীর একই অবস্থ্ধাসঢ়; । এসব জেগে ওঠা চরে মরার
উপর খাড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে নদী দখল। নদী পাড়ের প্রভাবশালী বাসিন্দারা
দেদার মেতে উঠেছে নদী দখল উৎসবে । একারনে একদিকে যেমন কমছে নদীর
প্রশস্থতা অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়েছে মাছ সহ জলজ প্রাণী। পরিবেশবিদদের
দাবী নদীগুলো অতিদ্রুত খনন ও দখল মুক্ত করে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহমানতা
ফিরিয়ে আনার।