বাংলার প্রতিদিন ডটকম ঃ দেশের শান্তিতে কেউ আঘাত হানলে তাকে সমুচিত জবাব দেবে বাংলাদেশ। সব ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মোকাবেলায় সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।রোববার দুপুরে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় ঈশা খাঁ নৌ ঘাঁটিতে নৌ-বাহিনীর বহরে দু’টি সাবমেরিন অন্তর্ভুক্তির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী সাবমেরিন নবযাত্রা ও জয়যাত্রা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। এর মাধ্যমে বিশ্বের ৪১তম দেশ হিসেবে সাবমেরিন ক্ষমতার মালিক হলো বাংলাদেশ।শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় দেশ।
যারা দেশে অশান্তি তৈরি করতে চাইবে তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে। ভেতরে ও বাহিরে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য কাউকে এ দেশের মাটি ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। এরই মধ্যে দেশের অভ্যন্তরে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা জঙ্গিদের সরকার কঠোরভাবে দমন করেছে।
তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। প্রতিবেশি রাষ্ট্রসহ সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলে জনগণের সার্বিক উন্নয়ন করাই বর্তমান সরকারের লক্ষ্য। জাতির পিতার নীতি ছিল সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়।
দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নৌ-বাহিনীকে সবসময় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, সাবমেরিন যুক্ত হবার ফলে নৌ-বাহিনী এখন অনেক শক্তিশালী হলো। আপনারা দক্ষতার সঙ্গে সমুদ্রে নবযাত্রা ও জয়যাত্রা পরিচালনা করবেন। শত্রুর মোকাবেলায় সবসময় সচেষ্ট থাকবেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় নৌ-বাহিনীর উন্নয়নে কাজ করে।
বঙ্গবন্ধু স্বাধীন দেশে নৌ-বাহিনীকে আধুনিকভাবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সবকিছু বাস্তবায়ন করতে পারেননি। ৭৫-এ ঘাতকরা তাকে স্বপরিবারে হত্যা করে।৭৫ পরবর্তী যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে তারা দেশকে পিছিয়ে দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের উন্নয়নে তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীদের উদ্দেশ্য ছিল নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখা। দেশের জনগণের ভাগ্যোন্নয়ন না।গেলো বছরের ১৫ নভেম্বর চীনের দালিয়ান প্রদেশের লিয়াওয়ান শিপইয়ার্ডে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদের কাছে ০৩৫জি সিরিজের দু’টি সাবমেরিন হস্তান্তর করেন চীনের পিপলস লিবারেশন নেভির রিয়ার অ্যাডমিরাল লিউ জিঝু। গেলো জানুয়ারির শেষ দিকে এগুলো বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর বহরে যোগ হয়।
হস্তান্তর অনুষ্ঠানে নৌ-বাহিনী প্রধান বলেন, সাবমেরিন দু’টি সংগ্রহের মাধ্যমে নৌ-বাহিনী ত্রিমাত্রিক শক্তি হিসেবে যাত্রা শুরু করলো। সাবমেরিনগুলো নতুনভাবে সজ্জিত করা এবং ক্রুদের প্রশিক্ষণ দেয়ায় চীনা নৌবাহিনীর প্রশংসা করেন তিনি।সাবমেরিনগুলো হলো ডিজেলচালিত ইলেকট্রিক ডুবোজাহাজ। এগুলোর দৈর্ঘ্যে ৭৬ মিটার ও প্রস্থে ৭ দশমিক ৬ মিটার। টর্পেডো ও মাইন দ্বারা সুসজ্জিত এ ডুবোজাহাজ শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজ ও ডুবোজাহাজে আক্রমণ করতে সক্ষম।সাবমেরিনের মূল ঘাঁটি হবে কক্সবাজারের পেকুয়ার কুতুবদিয়া চ্যানেল। এছাড়া পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় রাবনাবাদ চ্যানেলের কাছে আরেকটি ঘাঁটি তৈরি করা হচ্ছে। সেখানেও সাবমেরিন নোঙর করার সুবিধা থাকবে। সাবমেরিনের মূল্য ২০ কোটি ৩৩ লাখ ডলার বা প্রায় ১ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা।