বিশেষ প্রতিবেদক-হেলাল শেখঃ
ঢাকার আশুলিয়ার জামগড়ার বেরুণ ছয়তালা এলাকায় (সেড ফ্যাশন লিঃ) নামক একটি শিল্প কারখানয়
দুই মাসের বকেয়া বেতন না পেয়ে হাজার হাজার শ্রমিক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বেতন না দিয়েই
কারখানা বার বার ছুটি ঘোষণা করেছেন মালিক।
২৬ এপ্রিল শ্রমিকরা জানায়, তাদের দুই মাসের বেতন পরিশোধ না করেই মালিক গত ১৩ এপ্রিল
থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করেন। এরপর ১৮ এপ্রিল শ্রমিকরা কাজে যোগ
দিতে গেলে কারখানার মূল ফটকে আবারও ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত কারখানা বন্ধ ঘোষণার নোটিশ দেখতে পায়
শ্রমিকরা। তখন কারখানার সামনে শ্রমিকরা প্রতিবাদ করলে পুলিশ তাদের তাড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ
করেন তারা। পরে শ্রমিকরা রূপায়ন মাঠসসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে আলোচনা করেন, কিভাবে
তাদের বেতন পাবে ? বাসা ভাড়া, দোকান বিলসহ কিছুই দিতে পারছেন না শ্রমিকরা। ওষুধ পর্যন্ত
কিন্তে পারছেন না। কিন্তু মালিক তাদেরকে কেন বেতন দিচ্ছেন না কারণ জানতে চাইলে, শ্রমিকরা বলে
আমরা কিছুই জানিনা।
উক্ত নোটিশ অনুযায়ী গত রবিবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে কারখানার সামনে হাজির
হয়। পরে তারা দেখেন, আগের মতোই আবার ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত ওই কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছেন
মালিক। আবারও একটি নোটিশ ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ওই কারখানার সামনে শ্রমিকরা
অবস্থান নিয়ে দ্ধুসঢ়;ই মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধসহ কারখানাটি খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে
আনন্দোলন করার ঘোষণা দিয়েছেন। পরে ওই দিন দুপুরে শিল্প পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে
আনন্দেলমুখী শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদেরকে কারখানার এড়িয়া থেকে সরে যেতে বলেন।
উক্ত সেড ফ্যশন লিঃ কারখানাটির অপারেটর জান্নাতী ও রাজন জানান, গত কয়েক মাস ধরেই এই
কারখানায় তাদেরকে অনিয়মিত ভাবে বেতন-ভাতা পরিশোধ করে আসছেন মালিক। সব শেষে গত দুই
মাস যাবৎ মালিক তাদের বেতন বকেয়া রেখেছেন। এ রকম ঘটনা ওই কারখানা চালু হওয়ার পর ঘটেনি। ওই
কারখানার শ্রমিক সিরাজুল, সাইফুল, বকুল, শহিদুল, হাবিব জানান, বার বার বেতন পরিশোধের
আশ্বাস দিয়ে মালিক শ্রমিকদেরকে ঘুরানোর পরেও বেতন না দিয়েই কারখানাটি কৌশলে
একাধিকবার নোটিশের মাধ্যমে ছুটি ঘোষণা করছেন। শ্রমিকরা বলছে, সামনে মে দিবস
শ্রমিকদের দাবি আদায়ের মাস। আমাদের দাবি আদায় না হলে আনন্দোলন করা হবে। অন্যদিকে বেতন না
দিয়ে মালিক ওই কারখানা বন্ধ করে দেয়ার পায়তারা করছেন বলে শ্রমিকরা জানান। উক্ত কারখানায় শ্রমিক
সংখ্যা প্রায় তিন হাজারেরও বেশি বলে শ্রমিকরা জানান।
উক্ত বিষয়ে শিল্প পুলিশ-১ এর পরিচালক এএসপি কায়সার শেখ বলেন, সেড ফ্যাশন লিঃ এর কারখানার
শ্রমিকদের বেতন বকেয়ার বিষয়ে মালিকের সাথে আলাপ-আলোচনা করা হচ্ছে। খুব শীর্ঘই শ্রমিকদের
বকেয়া বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা করা হবে। আর যদি শ্রমিকদের বেতন না দেয়া হয়, তাহলে মালিকের
বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। কারখানার সামনে গিয়ে
মালিকের কোনো লোকজন পাওয়া যায়নি, শুধু পুলিশ সদস্য ও নিরাপত্তা কর্মীদের দেখা গেছে। এ
কারখানাটি কবে খুলে দেয়া হবে কেউ জানে না।