অনলাইন ডেস্কঃ
বিএনপির ভিশনে (রূপকল্প ২০৩০) আওয়ামী লীগ ভীত হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের যদি সেই শক্তি থাকত, চুপ করে থাকত। দেখত, বেগম জিয়া কী করতে পারেন ২০৩০ সালে। এমন বাকযুদ্ধে আওয়ামী লীগের দুর্বলতা প্রকাশ পাচ্ছে।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলনে এসব কথা বলেন এইচ এম এরশাদ।
এইচ এম এরশাদ বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ ঘোষণা করেছেন। এখন ২০১৭। বাকি আছে আর ১৩ বছর। আমরা একটা কথাও বলিনি। আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা বলছেন- আমাদের কথা অনুসরণ করে, নকল করে বেগম জিয়া ভিশন দিয়েছেন। কত কথা হচ্ছে! আওয়ামী লীগ যেন ভীত হয়ে গেছে। এদিকে তীব্র দাবদাহ যেমন, রাজনীতিতেও তাপদাহ। রাজনীতিতে বাকযুদ্ধ চলছে।’
এরশাদ বলেন, ‘আমাদের সামনে ভিশন একটা আছে। খালেদা জিয়ার ভিশন ২০৩০, আমাদের ভিশন দুটি। প্রাদেশিক সরকার আর নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তন। আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাই না। কারণ, অতীতের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানরা জাতীয় পার্টির প্রতি সুবিচার করেনি। সবাই বেইমানি করেছে। অতীতে সবাই জাতীয় পার্টিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে। একটা নির্বাচনও আজ পর্যন্ত বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয়। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে একটা সুষ্ঠু পরিবেশের মধ্যে নির্বাচন করতে চাই এবং ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে চাই। আর প্রাদেশিক সরকার করতে চাই। প্রাদেশিক সরকারে রাজশাহী হবে একটা প্রদেশ। এর নাম হবে ‘বরেন্দ্র প্রদেশ’।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, ‘আমি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাই না। তিন তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসেছিল। সাহাবুদ্দিন বেইমান, হাবিবুর রহমান বেইমান, লতিফুর রহমান বেইমান। তিনজন আমার প্রতি সুবিচার করেনি। আমার বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিল টেলিভিশনে, তা দেননি হাবিবুর রহমান। লতিফুর রহমান আমাকে ছয় মাসের জেল দিয়ে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করলেন।’
এইচ এম এরশাদ বলেন, ‘আমাদের মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। সব চেষ্টা ব্যর্থ করে এমন জায়গায় এসেছি আজ, আমাদের প্রয়োজন দুই দলেরই।’ তিনি আরো বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে কার ভাগ্য সুপ্রসন্ন হবে তা নির্ধারণ করব আমরা।’
এরশাদ বলেন, ‘রমজান আসছে। চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে। কিন্তু কারো কোনো কথা নেই। খুন, গুম নিয়ে সবাই শঙ্কিত। কারোই নিরাপত্তা নেই। কিন্তু জাতীয় পার্টির শাসনামলে এসব ছিল না। আমার হাতে রক্তের দাগ নেই। নূর হোসেনকে পুলিশ হত্যা করেনি। তাই তার পরিবারকে আমি সহায়তা দিয়েছি। এখনো মানুষ বিশ্বাস করে, জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় এলে জনগণের সুদিন ফিরবে।’
সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নুরু, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সাল চিশতি, মজিবর রহমান সেন্টু, সুনীল শুভ রায়, মেজর (অব.) খালেদ আকতার, কাজী ফিরোজ রশীদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি অধ্যাপক আবুল হোসেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন রিন্টু। ২০১৪ সাল থেকে তাঁরা দায়িত্ব পালন করছেন। চেয়ারম্যানের নির্দেশনা মোতাবেক জেলা জাতীয় পার্টি তিন বছর পর এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
সম্মেলনের পার্টির চেয়ারম্যানের জেলার নতুন সভাপতি ও সম্পাদকের নাম ঘোষণা করার কথা ছিল। তবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তা করেননি। পরে জাতীয় পার্টির জেলার সভাপতি-সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হবে বলে অনুষ্ঠানে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।