জাকির হোসেন, পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাও) থেকে : রক্ষ ক্ষরণ বন্ধ করতে
একাধিকবার সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়েছে ঠাকুরগাওয়ের
পীরগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধিন মুক্তারিয়া নামে এক
সিজারিয়ান রোগীর। তার পরেও বন্ধ হচ্ছে না তার রক্ত ক্ষরণ। ১২ দিন
ধরে মৃত্যু যন্ত্রনায় ভুগছেন তিনি। টাকা পয়সার পাশাপাশি
খোজ খবর নেওয়া তেমন কেউ না থাকায় ডাক্তাররাও বিষয়টির
প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে অভিযোগ রোগীর স্বজনদের। এ
নিয়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে স্বজনদের মাঝে। শনিবার খোজ
নিয়ে জানা যায়, পীরগঞ্জ পৌর শহরের রঘুনাথপুর মহল্লার গরীব
মোজাহারুল ইসলামের স্ত্রী মুক্তারিয়ার প্রসব বেদনা হলে গত ১৫
মে সকালে তাকে নিয়ে আসেন পীরগঞ্জ হাসপাতালে।
হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী) ডাক্তার নজরুল
ইসলাম সিজারের জন্য রোগীকে শহরের আদর্শ ক্লিনিকে ভর্তি
করাতে বলেন। হাসপাতালে সিজার হবে না এমন কথা শুনার পর বাধ্য
হয়েই স্ত্রীকে ভর্তি করান ঐ ক্লিনিকে। সেখানে মুক্তারিয়ার
সিজার করেন চিকিৎসক নজরুল। সিজারের পর রোগীকে বেডে
দেওয়া হলেও ক্ষত থেকে ঝড়তে থাকে রক্ত। সেখানে ৫ দিন থাকার পরও রক্ত
ঝড়তে থাকে। ওষুধ খেলে ঠিক হয়ে যাবে এই বলে ২০ মে তাকে
বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর রক্ত ক্ষরণ বন্ধ না হলে ২৩ মে
ক্লিনিকে ডাক্তার নজরুলের সাথে দেখা করেন রোগী ও তার
স্বামী। তখন তাদের বলা হয় হাসপাতালে ভর্তি হতে। ২৪ মে
মুক্তারিয়া ভর্তি হন পীরগঞ্জ হাসপাতালে। এরপর হাসপাতালে
আবারো অপারেশন করা হয় তার। তার পরেও বন্ধ হচ্ছে না রক্ত ক্ষরণ। এরই
মধে কয়েক ব্যাগ রক্ত যোগাড় করে ঢুকানো হয় রোগীর শরীরে।
এখনও হাসপাতালেই মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন মুক্তারিয়া।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, তারা গরীব হওয়ায় ডাক্তার গুরুত্ব
দিচ্ছে না। তাছাড়া তাদের হয়ে কথা বলার তেমন কেউ না থাকায়
অবহেলা করা হচ্ছে তাদের সাথে। মুক্তারিয়ার মতো অভিযোগ
দিপালী রানীরও। চাদপুরের দিপালীকে শহরের আদর্শ ক্লিনিকে ১০
মে সিজার করেন ডাক্তার নজরুল। এরপর বাড়ি ফিরলে দেখা দেয়
ইনফেকশন। পরে তাকেও ভর্তি করা হয় হাসপাতাতে। তিনি
বর্তমানে হাসপাতালেও ডেলিভারী ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন
রয়েছেন। তবে তার অবস্থা এখন উন্নতির দিকে। এ বিষয়ে ডাক্তার
নজরুলের বক্তব্য, চিকিৎসা করতে গেলে দু’একটা দুর্ঘটনা
হতেই পারে। সমস্যা নেই, কিছু হবে না। ঠিক হতে হয়তো
একটু সময় লাগবে।