বিদেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে জয়ের সুখস্মৃতি নিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচেও চালিয়েছিল হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। কিন্তু আজ ভারতের বিপক্ষে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে শুধু হতাশাই উপহার দিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ৩২৫ রানের বড় লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে দলীয় সংগ্রহটা তিন অঙ্কের কোটাতেও নিয়ে যেতে পারলেন না সাকিব-মুশফিকরা। হারতে হলো ২৪০ রানের বিশাল ব্যবধানে।
জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্যটা ছিল বেশ বড়ই। ৩২৫ রান। সেই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দুঃস্বপ্নের মতোই হয়েছে টাইগারদের। প্রথম আট ওভারের মধ্যেই বাংলাদেশ হারিয়েছিল ছয় উইকেট। শুরুর এই ধাক্কা শেষপর্যন্ত আর সামলাতে পারেনি বাংলাদেশ। অলআউট হয়ে গেছে মাত্র ৮৪ রানে। সর্বোচ্চ ২৪ রানের ইনিংসটি এসেছে মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাট থেকে।
চতুর্থ ওভারে বাংলাদেশের প্রথম উইকেটটি নিয়ে অবশ্য তৈরি হয়েছে বিতর্ক। উমেশ যাদবের অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করা বলটি সজোরে মারতে চেয়েছিলেন সৌম্য সরকার। কিন্তু ব্যাটে-বলে সংযোগ না হওয়ায় বল চলে যায় উইকেটরক্ষকের হাতে। কট বিহাইন্ডের জোরালো আবেদন করে ওঠেন ভারতের ফিল্ডাররা। আম্পায়ারও তুলে দেন আঙুল। কিন্তু সত্যিই বলটা ব্যাটে লেগেছিল কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থেকে গেছে। সৌম্যও ঠিক মেনে নিতে পারছিলেন না আম্পায়ারের সিদ্ধান্তটা। প্রস্তুতি ম্যাচ বলে কোনো রিভিউয়ের সুযোগ নেই। ফলে কিছুটা হতাশা নিয়েই সাজঘরে ফিরে যেতে হয়েছে সৌম্যকে।
উমেশ যাদবের সেই ওভারেই সাব্বিরের আউটটি নিয়ে অবশ্য কোনো বিতর্কের অবকাশ নেই। ক্লিন বোল্ড হয়ে আউট হয়েছেন সাব্বির। পরের ওভারে ইমরুল আউট হয়েছেন মিড অনে সহজ ক্যাচ দিয়ে। সপ্তম ওভারে বাংলাদেশ হারিয়েছে দুটি উইকেট। ভুবনেশ্বর কুমারের বলে আউট হয়েছেন সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ। পরের ওভারে মোসাদ্দেক হোসেনের উইকেট তুলে নিয়েছেন উমেশ যাদব। সপ্তম উইকেটে ২৫ রানের জুটি গড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজ। কিন্তু ১৩তম ওভারে মুশফিক সাজঘরে ফিরেছেন মোহাম্মদ সামির শিকার হয়ে। অষ্টম উইকেটে সানজামুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে আরো কিছুক্ষণ লড়াই চালিয়েছিলেন মিরাজ। এই জুটি থেকে এসেছে ৩০ রান। কিন্তু ২০তম ওভারে ২৪ রান করা মিরাজকে আউট করে বাংলাদেশের প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে দেন জাসপ্রিত বুমরা। বাকি দুটি উইকেট তুলে নিতে ভারতের বোলারদের বোলিং করতে হয়েছে মাত্র চার ওভার। ১৮ রান এসেছে সানজামুলের ব্যাট থেকে।
ভারতের পক্ষে দারুণ বোলিং করেছেন দুই পেসার ভুবনেশ্বর কুমার ও উমেশ যাদব। দুজনেই নিয়েছেন তিনটি করে উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ সামি, জাসপ্রিত বুমরা, রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও হার্দিক পান্ডে।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শিখর ধাওয়ানের ৬০, দীনেশ কার্তিকের ৯৪ ও হার্দিক পান্ডের ৮০ রানের ঝড়ো ইনিংসে ভর করে স্কোরবোর্ডে ৩২৪ রান জমা করেছে ভারত।