আব্দুল্লাহ আল মামুন, পার্বতীপুর প্রতিনিধি ঃ
দিনাজপুরের পার্বতীপুর দুঃস্থ এতিম বিদ্যালয় থেকে অপহৃত ছাত্র আবুল হায়াত আড়াই
বছর পর দলাইকোঠা এলাকার তার নিজ বাড়ি থেকে উদ্ধার করে সি আই ডি।
আনুমানিক রাত দেড়টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আনুমানিক ১৩ বছরের আবুল
হায়াত, পিতা মমিনুল ইসলাম, মাতা হাসনা বানু’র পার্বতীপুর দলাইকোটার বাড়িতে
সে অবস্থান করছিল, সেই সংবাদের ভিত্তিতে সিআইডির তদন্তকারী অফিসার এস আই
জাহিরুল ইসলাম ও তার সঙ্গী এ এস আই কামরুজ্জামান এবং কনস্টেবল ময়নুল হকসহ দ্রুত
যেখানে উপস্থিত হন। আবুল হায়াতকে দেখা যায় তার বাবা মার সাথে বাড়ীতে
জনসম্মুখের মাঝে আঙ্গিনায় বসে আছে। ইতোমধ্যে সংবাদটি জানাজানি হয়ে গেলে
গ্রামের লোকজন ছেলেটিকে দেখবার জন্য ভিড় জমাতে থাকে। উপস্থিত সিআইডি
কর্মকর্তারা তাকে ও তার বাবা মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে রহস্য জনক ভাবে কথা এড়িয়ে
যায় এবং ছেলেটিও মুখ খুলছে না। এমতাবস্থায় তার মা হাসনা বানু এবং মামলাকৃত
বাদীনি নানী আলতা বানুকে দিনাজপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল চীফ
জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে ম্যাজিস্ট্রেট ঈসমাইল হোসেন ২২
ধারার জবানবন্ধীতে বাবা মা ও বাদীনী নানী জিম্মায় আবুল হায়াতকে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য যে, অপহৃত ছাত্র আবুল হায়াত গত ৬ নভেম্বর ২০১৪ সালে পার্বতীপুরের প্রথম ও
অতিহ্যবাহী দুঃস্থ্য এতিমখানা হতে এশার নামাজ পড়ার জন্য সকলে মিলে দল বেঁধে
মসজিদে যায় এবং নামাজ শেষে অন্যান্য ছাত্ররা এতিমখানায় ফিরে এলে আবুল হায়াত
ফিরে আসে নি। পরবর্তীতে অনেক খোঁজাখুজি, এমনকি শহরে মাইকিং এবং পত্রিকায়
প্রকাশ করে এতিমখানার কর্তৃপক্ষ। পরিশেষে তাকে পাওয়া না গেলে এক শ্রেণী
স্বার্থনেশীরা বিষয়টিকে কাজে লাগিয়ে ঐতিহ্যবাহী পুরনো এতিমখানার সুনাম নষ্ট
করার জন্য আবুল হায়াত এর বাবা মা’ কে বাদি না করে নানী আলতাবানুকে দিয়ে বিজ্ঞ
আদালতে মামলা দয়ের করেছেন বলে জনান এতিমখানা কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে এলাকাবাসীর কাছে জানা যায়, আবুল হায়াত প্রায় বাড়ী
থেকেও পালিয়ে যেতো, তাই তাকে দুষ্টমির থেকে বিরতি থাকার জন্য এই এতিমখানায়
ভর্তি করা হয়। ভর্তি করার পর থেকে সে মোট ৩ বার পালিয়ে তার বাড়িতে যায়। এ বিষয়
পার্বতীপুর মডেল থানায় প্রতিবার অভিযোগ দায়ের করে এতিমখানার কর্তৃপক্ষ।
পরিশেষে মামলাটি থানা পুলিশ ও পিবিআই তদন্ত করে ভিকটিমকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হলে
বিজ্ঞ আদালত মামলাটি সিআইডিকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিলে সিআইডি
মামলাটি তদন্তকালে ভিকটিমকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।