বাংলার প্রতিদিন ডেস্কঃ
বিএনপির রাজনীতিকে ‘আষাঢ়ের তর্জনগর্জন সার (অন্তঃসার শূন্য)’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বিগত আট বছরের আটটি দিনও বিএনপি রাজপথে নামতে পারেনি। এই ঈদে না সেই ঈদে রাজপথে নামবে বলে তারা ঘোষণা দেয়। বিগত আট বছরে ১৭টি ঈদ চলে গেল, কিন্তু বিএনপির মরা গাঙে আর জোয়ার এল না।’
সোমবার যশোর শহরের ঈদগা ময়দানে জেলা ছাত্রলীগের ১৭তম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে না এসে ভুল করেছিল। এজন্য হতাশ মির্জা ফখরুল সাহেব এখন শুধু কাঁদেন। আমি বলি, আপনারা তো ভাল আছেন। আপনার ওপর চোরাগুপ্তা হামলা হয়েছে, কিন্তু আহত হননি। অথচ রাজপথে আমাদের রক্তাক্ত করা হয়েছিল।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির আমলে বাংলাদেশ রক্তের নদী হয়েছিল। ২০০১-২০০৫ সালে কত গুম-খুন হয়েছিল, ভুলে গেছেন? আপনারা কাঁদছেন। আমাদেরও কাঁদতে কাঁদতে চোখের জল শুকিয়ে গেছে।’সম্মেলনে সভাপতিত্ব করছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুল ইসলাম রিয়াদ।প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফখরুল সাহেব ২০০১-২০০৫ সাল আর আজকের অবস্থা মিলিয়ে নিন। সেইদিন ছিল আমাদের কান্না। আর আজ আপনারা মায়াকান্না করছেন।’
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যাদের ইমেজ ড্যামেজ হয়েছে, তাদের আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। জনগণের কাছে যাদের গ্রহণযোগ্যতা নেই, তাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না। ঘরের মধ্যে যেন ঘর তৈরির প্রতিযোগিতা না হয়। অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে।’
ছাত্রলীগের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অনিয়মিত, অছাত্র ও মাদকাসক্তরা যেন ছাত্রলীগের কমিটিতে স্থান না পায়, তা শক্তভাবে দেখতে হবে। কমিটি বিলম্বিত করা যাবে না। বিলম্ব হলে অযোগ্যরা স্থান পেয়ে যায়। এজন্য যশোরের কমিটি যশোর থেকেই ঘোষণা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যশোরে কমিটি ঢাকায় নেওয়া হলে ঘাটে ঘাটে অন্ধকারের খেলা হবে। নানা লবিং হবে, কেন্দ্রীয় নেতারা ঠিকমত কাজ করতে পারবে না।’
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সদস্য এসএম কামাল হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী সাইফুজ্জামান শিখর, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ, যশোর-১ আসনের এমপি শেখ আফিল উদ্দিন, যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম, যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য রণজিৎ কুমার রায়, যশোর-৫ আসনের সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, যশোর পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু, বেনাপোলের পৌরমেয়র আশরাফুল আলম লিটন প্রমুখ।
সম্মেলন উদ্বোধন করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ। সম্মেলনের প্রধান বক্তা সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন।
উল্লেখ্য, স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুটি গ্রুপের বিভাজনে ২০১০ সালের ১৪ মার্চ জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। সে সময় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সম্মেলন স্থগিত করতে বাধ্য হন।
এ ঘটনার পর দিন সদর উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক দাদা রিপনকে হত্যা করে দলীয় প্রতিপক্ষের কর্মীরা। পরবর্তীতে ২০১১ সালের ১০ জুলাই সমঝোতার ভিত্তিতে কেন্দ্র থেকে আরিফুল ইসলাম রিয়াদকে সভাপতি ও আনোয়ার হোসেন বিপুলকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করে যশোর জেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ছয় বছর পর আজ জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল।