অনলাইন ডেস্ক,
বঙ্গবন্ধুর ছবি `বিকৃতির’ অভিযোগে বরিশালের আগৈলঝাড়ার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক সালমনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বাদী আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়েদ উল্লাহ সাজুকে ১৫ দিনের সময় দিয়েছে দলটি।শনিবার নারায়ণগঞ্জে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের একথা জানান।
তিনি বলেন, সাজুকে কারণ দর্শানোর জন্য ১৫ দিনের সময় দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে তিনি উপযুক্ত জবাব দিতে ব্যর্থ হলে তাকে চূড়ান্তভাবে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।এর আগে শুক্রবার সাজুকে আওয়ামী লীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এদিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় অংশ নেয়া নেতারা ইউএনও তারেক সালমনের প্রসঙ্গ তোলেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাজু সম্পর্কে জানতে চান। তিনি বরিশাল বিভাগের দায়িত্বে থাকা নেতাদের বলেন, তার বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে।ওবায়েদউল্লাহ সাজু বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তিনি একইসঙ্গে বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি।শুক্রবার মনোনয়ন বোর্ডের সভা শেষে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ইউএনওর বিরুদ্ধে অতি উৎসাহী হয়ে মামলা করেছেন ওবায়েদুল্লাহ সাজু।
তিনি অহেতুক মামলা করেছেন। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ৪৭ (ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।তিনি আরো বলেন, ইউএনও নির্দোষ। তিনি বরং বাচ্চাদের আঁকা সবচেয়ে ভালো ছবিটাই ব্যবহার করেছেন। অতি উৎসাহী হয়ে মামলা করে সাজু দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। আওয়ামী লীগ ইউএনওর পক্ষে।এদিকে, মামলার বাদী সাজু আরটিভি অনলাইনকে বলেন, এই মামলার মধ্য দিয়ে তিনি জানান দিতে চান, জাতির জনকের ছবি বা বক্তব্য যাতে করে কেউ আর ‘বিকৃতভাবে’ উপস্থাপন করতে না পারে।
অন্যদিকে, বরিশাল সম্মিলিত নাগরিক সমাজে পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তারিক সালমনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।নাগরিক সমাজে প্রতিনিধিরা বলেন, তারিক সালমন আগৈলঝাড়া উপজেলায় নির্বাহী অফিসার থাকার সময়ে পরীক্ষায় নকল প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইতে তিনি কঠোর অবস্থনে ছিলেন। এসব কারণে তার বিরুদ্ধে এই মামলা হতে পারে।সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সভাপতি এ্যাডভোকেট এসএম ইকবাল বলেন, শিশুর আঁকা ছবি ব্যবহার করায় এতে বঙ্গবন্ধুর কোনো অসম্মান হয়নি। উল্টো মামলা করে হয়রানির ঘটনায় আওয়ামী লীগই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।গেলো ৭ জুন ইউএনও তারেক সালমানের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওবায়েদ উল্লাহ সাজু। মামলায় অভিযোগ বলা হয়, আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠানের ছাপানো আমন্ত্রণপত্রে পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া এক শিশুর আঁকা বঙ্গবন্ধুর ‘বিকৃত’ ছবি ব্যবহার করেছেন তারেক সালমন। এজন্য বরিশাল মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে ওই ইউএনওর বিরুদ্ধে ৫ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেন সাজু।ওই মামলায় ১৯ জুলাই প্রথমে তার জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। প্রায় দু’ঘণ্টা হাজতবাসের পরে একইদিনে তাকে জামিন দেয়া হয়। তবে ঘটনার পর দেশজুড়ে ব্যাপক সামলোচনা শুরু হয়।