অনলাইন ডেস্ক ঃ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ অস্ত্রের তথ্য পুলিশকে জানিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। আজ শনিবার বিকেলে নগরীর চাষাঢ়া বিজয়স্তম্ভ চত্বরে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এই দাবি করেন তিনি।
নিজের বক্তব্যে শামীম ওসমান বলেন, ‘ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। রূপগঞ্জে অস্ত্র ধরা পড়েছে। এই অস্ত্র সামান্য অস্ত্র না। হেভি মেশিনগান, রকেটলঞ্চার, গ্রেনেডসহ অত্যাধুনিক অস্ত্র। যেই অস্ত্রের মধ্যে কোনো মেড ইন (প্রস্তুতকারক দেশের নাম) লেখা নাই। এই অস্ত্র নারায়ণগঞ্জের পুলিশ ধরেছে। অস্ত্রের ব্যাপারে আমি তাঁদেরকে ইনফরমেশন দিয়েছিলাম। নারায়ণগঞ্জের পুলিশের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। দ্রুততার সাথে এই অস্ত্র উদ্ধার করেছিলেন।’
শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে এই সংসদ সদস্য আরো বলেন, ‘এত অস্ত্র ওই রূপগঞ্জে কেন আনা হয়েছিল? তিনশ ফিটের বাইরে কেন ওই অস্ত্র রাখা হয়েছিল? ওইখান দিয়ে প্লেন ওড়ে। ওই প্লেনে আমার নেত্রী যায়। তাঁদের টার্গেট একটাই, বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে হলে শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে হবে।’
চলতি বছরের ১ জুন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল থেকে বিপুলসংখ্যক অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। সে সময় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক সাংবাদিকদে জানান, জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল থেকে বিপুলসংখ্যক অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
তবে আজকের বক্তৃতায় শামীম ওসমান পুলিশকে তিনিই তথ্য দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন।
শামীম ওসমান বলেন, ‘আমি এক বছর আগেই বলেছিলাম ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। বিচার বিভাগের থেকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। জনগণ আজকে গান গাচ্ছে আবার নতুন করে, বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা আজ জেগেছে সেই জনতা। যারা ভাবছেন, যারা ভাবছেন বাংলাদেশটা পাকিস্তান, যারা ভাবছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। যাঁর শরীরে জাতির পিতার রক্ত সেই শেখ হাসিনা নওয়াজ শরিফ, যাঁরা ভাবছেন বাংলাদেশের মানুষ পাকিস্তানের নাগরিক, যারা ভাবেন বাংলাদেশের সেনাবাহিনী, বাংলাদেশের পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পাকিস্তানের বাহিনী তাঁরা বোকার রাজ্যে বাস করছেন। বাংলাদেশ পাকিস্তান না, আর শেখ হাসিনাও নওয়াজ শরিফ না। আমার নেত্রী বলেছেন, শত্রুরা না কি ছোবল মারতে চেষ্টা করছেন। নেত্রী আপনার কাছে এই নারায়ণগঞ্জবাসীর পক্ষ থেকে ওয়াদা করতে চাই, যেই সকল শকুনরা আপনার দিকে নজর দেবে অন্য কিছু বুঝি না ওই শকুনের গলার টুটি এই নারায়ণগঞ্জের মানুষ ছিঁড়ে ফেলবে টেনে। আমরা প্রস্তুত আছি। আমরা প্রস্তুত ছিলাম, আমরা প্রস্তুত থাকব।’
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল। তবে অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহাসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতাকেই দেখা যায়নি।
এদিকে শামীম ওসমানের বক্তব্য চলাকালে হঠাৎ আকাশ থেকে ড্রোনের মাধ্যমে ভিডিও করা শুরু হলে ক্যামেরার শব্দে দর্শকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দর্শক দ্বিগ্বিদিক ছুটতে শুরু করলে শামীম ওসমান মাইক্রোফোনে অভয় বাণী দেন, ‘কিছু হয়নি, কিছু হয়নি’। এতে দর্শকরা স্বস্তি পান।
সমাবেশ শেষে শামীম ওসমানের নেতৃত্বে একটি শোক র্যালি বের হয়ে চাষাড়া থেকে ডিআইটি চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।