গাইবান্ধা থেকে শেখ হুমায়ুন হক্কানী ঃ পুলিশী হেফাজতে সুন্দরগঞ্জের
হাতিয়া গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী রিপন চন্দ্র দাস হত্যা মামলার সাক্ষী ও
প্রতিবাদকারীরা মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেফতার, হুমকিসহ
নানাভাবে অত্যাচার অনাচারের কবলে পড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তদুপরি ওই
এলাকার ইউপি সদস্য মমতাজ উদ্দিনের হুমকিতেও তারা আতংকে রয়েছেন।
এতে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন চরম নিরাপত্তাহীনতায় আসন্ন দুর্গা
পুজা উদযাপনের অংশ নিতে পারছে না। এর প্রতিকার ও প্রতিবাদে
গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলন এবং
প্রেসক্লাব সংলগ্ন সড়কে এক মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে
এলাকাবাসি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিহত রিপন চন্দ্রের মা সুজকি রাণী উলেখ
করেন, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হাতিয়া গ্রামের বাবলু চন্দ্র দাসের ছেলে রিপনের
সাথে প্রতিবেশী সুরেশ চন্দ্র দাসের মেয়ে চ¤পার প্রেমের স¤পর্ক ছিল।
দু’জনে ঘর বাঁধার স্বপ্নে গত ২৯ মে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বগুড়ার
কাহালুতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যায়। এ ঘটনায় চ¤পার বাবা সুরেশ চন্দ্র
বাদী হয়ে অপহরণের অভিযোগে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করে। সুন্দরগঞ্জ থানার
এসআই রাজু আহমেদ, কনস্টেবল শাহানুর আলম, মোস্তাফিজার রহমান,
নার্গিস বেগম গত ১ জুন বগুড়ার কাহালু উপজেলায় আত্মীয়ের বাসা
থেকে চ¤পা ও রিপনকে উদ্ধার করে সুন্দরগঞ্জে নিয়ে আসার জন্য মাইক্রোতে
তোলে। রিপনের পিতা বাবলু চন্দ্র দাসের অনুরোধকে উপেক্ষা করে পুলিশ একই
মাইক্রোতে মেয়ের পিতা ও তাদের অন্যতম সহযোগি ইউপি সদস্য মনতাজ
উদ্দিনকেও তুলে নিয়ে সুন্দরগঞ্জ অভিমুখে রওনা দেয়। পথিমধ্যে পলাশবাড়ির
কাছে পুলিশের সহযোগিতায় রিপন চন্দ্র দাসকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
এব্যাপারে নিহত রিপন চন্দ্রের পিতা বাবলু চন্দ্র দাস বাদি হয়ে ওই ৪
পুলিশসহ সুরেশ চন্দ্র, ইউপি সদস্য মনতাজ উদ্দিনকে আসামি করে
আদালতে মামলা দায়ের করে। ফলে আদালতের নির্দেশে পলাশবাড়ি থানায়
মামলাটি রেকর্ড করে সিআইডিকে তদন্তভার দেয়া হয়। মামলা দায়েরের পর
থেকেই পুলিশসহ হত্যা মামলার আসামিরা নানা অপতৎপরতা শুরু করে এবং
মামলাটি মিমাংসার জন্য চাপ সৃষ্টিসহ নানাভাবে হুমকি ও হয়রানি করতে
থাকে। এমনকি প্রতিপক্ষের দায়েরকৃত মিথ্যা মামলার জের ধরে পুলিশ ওই
হত্যা মামলার বাদি ও সাক্ষী এবং সমর্থক গ্রামবাসিদের গ্রেফতারসহ
নানাভাবে হয়রানি করতে থাকে।
সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসি ও নিহত রিপনের পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য
রাখেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাননু
মিয়া, ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি ও সাবেক
ইউপি সদস্য লতিফুল ইসলাম, জাতীয় পার্টি নেতা হায়দার আলী, বাবলু চন্দ্র
দাস, সুজকি রাণী, পন্ডিত চন্দ্র, মাহবুবার রহমান, জয় কুমার, ঠাকুর দাস,
ষষ্ঠী দাস, ঝন্টু মিয়া, লাল্টু দাস, নাদু দাস, শ্যামল চন্দ্র দাস, জংলু চন্দ্র দাস,
নিপা রাণী, আরতী রাণী প্রমুখ।