বাংলার প্রতিদিন ডেস্কঃ
বিএনপি দেশপ্রেমিক দল বলেই সরকার তাদের সঙ্গে কোনো ঐক্য করবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন বিএনপির সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না। ঐক্য হবে কীভাবে, বিএনপি তো একটি দেশপ্রেমিক দল। আর আপনার দলের লোকেরা তো এখন ত্রাণও লুট করছে। আমরা আমাদের সঙ্গে ঐক্য নয়, জনগণের সঙ্গে ঐক্য করতে বলেছি।’
আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব। জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) এ সভার আয়োজন করে।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এখন পর্যন্ত জাতিসংঘে গণহত্যা বলতে পারলেন না, রোহিঙ্গা গণহত্যার নিন্দা করেননি। আপনি ভয় পান। পাছে যারা মিয়ানমারকে সমর্থন দিচ্ছে, তারা আপনাদের প্রতি বিরাগভাজন হবে।’
‘উল্টো বিএনপিকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিলেন। কত ভয় পান বিএনপিকে, আমাদের ত্রাণ আটকে দিলেন। এটা তো হীনমন্যতা, ক্ষুদ্রতা। এসব বাদ দেন, ভয় পাওয়া বাদ দেন। আমিত্ব পরিহার করুন। রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে আমাদের কথা স্পষ্ট। রোহিঙ্গা গণহত্যা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে’—বলেন মির্জা ফখরুল।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, খালেদা জিয়া প্রথম দিনেই বলেছেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে হবে, খাদ্য দিতে হবে। ১৯৭৮ সালে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পাঠিয়েছিল, তখন জিয়াউর রহমান চুক্তির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠান। ১৯৯২ সালেও খালেদা জিয়া জাতিসংঘের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের পাঠাতে সফল হয়েছিলেন।
আজকে চালের দাম কত? তাদের লোকেরা সব ক্ষেত্রে চুরি করছে, আজকে উন্নয়নের কথা বলছে। পদ্মা সেতুর পাইলিং এত বেশি ডিজাইন করেছে যে এখানেও দুর্নীতি করেছে। আজকে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে পদ্মা সেতু।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজকে রুখে দাঁড়াতে হবে। রুখে তো দাঁড়িয়েছেই বাংলাদেশের মানুষ। নিরপেক্ষ নির্বাচন আমাদের আদায় করে নিতে হবে। কেউ আমাদের দেবে না।’
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় এক অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে বিশ্ব জনমত তৈরির জন্য সবার আগে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্ব জনমত তৈরি করতে হবে এবং সেই বিশ্ব জনমত তৈরি করতে গেলে আজকে বাংলাদেশেই সবচেয়ে বড় প্রয়োজন ঐক্য সৃষ্টি করা। আমরা সেই ঐক্য সৃষ্টি করতে চাই, আমরা সেই কথা বারবার বলে আসছি। সমবেত ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমে আমরা নির্যাতিত মানুষগুলোকে সাহায্য করতে পারব। ইনশাল্লাহ তাদের বাসভূমিতে, নিজের দেশে ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হব। কিন্তু এখন তারা কোনো প্রপার ম্যানেজমেন্ট তৈরি করতে পারেনি। এখনো লাখ লাখ মানুষ সেই বৃষ্টির মধ্যে ভিজছে, কাদার মধ্যে ডুবে আছে।’
এরপর গতকাল শুক্রবার নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির সঙ্গে কখনো সমঝোতা হতে পারে না। তিনি বলেন, ‘যারা সন্ত্রাস ও হত্যার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, আমি তাদের কাছে ফিরে যেতে আগ্রহী নই। তাই বিএনপির সঙ্গে রাজনৈতিক সমঝোতার প্রস্তাব দেওয়া কারো উচিত হবে না।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা আমার বাবা-মাকে হত্যা করেছে, তাদের সঙ্গে কখনো সমঝোতা হতে পারে না।