মোঃ বাবুল হোসেন, পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধিঃ
সকল যোগ্যতা থাকা স্বত্তেও জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ছাতিনালী
গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম নৈশ্য প্রহরী পদে
মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে চাকুরী না দেওয়াসহ এ নিয়োগকে কেন্দ্র করে
অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগ করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ
আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের অনেকেই।
একই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলামের সন্তান নিয়োগ প্রার্থী
আব্দুল আউয়ালের অভিযোগে জানা গেছে, সরকারি ছাতিনালী প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের জন্য দপ্তরী কাম নৈশ্য প্রহরী পদের জন্য গত ২০১৪ সালের ১৫
জানুয়ারীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর চলতি বছরের
গত ২৩ আগষ্ট অনুষ্ঠিত নিয়োগ পরীক্ষায় তিনিসহ ৪ জন অংশ গ্রহন করেন।
নিয়োগ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ২০ সেপ্টেম্বর ওই পদে নিয়োগ
লাভ করেন একই উপজেলার বয়রা গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে আবু তৈয়ব হিরা।
আউয়াল আরো অভিযোগ করে বলেন, ১০ লাখ টাকারও বেশী উৎকোচের
বিনিময়ে অন্য এক প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি
কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, “আমার বাবা মরন পন লড়াই করে দেশ স্বাধীনে অংশ
গ্রহন করেন, স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর সামান্য নৈশ্য প্রহরী ও কাম দপ্তরীর
চাকুরীটাও আমার কপালে জুটল না। এখন কি করে খাব ? আর যাকে টাকার
বিনিময়ে চাকুরী দেওয়া হলো, তিনি তো এমনিতেই সম্পদশালী ঘরের
সন্তান।” এসব বলতে বলতে বুক চাপরিয়ে কাঁদতে থাকেন মুক্তিযোদ্ধা
সন্তান আউয়াল।
প্রায় একই অভিযোগ করেন স্থানীয় আওলাই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ
সভাপতি আব্দুর রউফসহ নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক বেশ কয়েক জন স্থানীয়
আওয়ামলীগ নেতা।
পাঁচবিবি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার এ কে এম মিছির
উদ্দিনসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধা বলেন, শুধু এ নিয়োগেই নয়, সকল যোগ্যতা
থাকার পরও অনেক চাকুরীর ক্ষেত্রেই মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের কোটা মানা হয় না
বলে তারা হতাশ হয়েছেন ।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার সোলায়মান আলী মিয়ার সাথে মোবাইল
ফোনে বারবার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি। এ ছাড়া ছানিতালী
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ ও বিদ্যালয়
পরিচালনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিপ্লব কুমারের সাথে যোগাযোগ
করা হলেও বারবারই তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে পাঁচবিবি উপজেলা চেয়ারম্যান ও শিক্ষা কমিটির সভাপতি
মোস্তাফিজুর রহমান এবং নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি উপজেলা নিবার্হী
নূর উদ্দিন আল ফারুখ বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হওয়ায় ও সকল নিয়ম
মেনে আউয়ালের প্রতিদ্বন্দি আবু তৈয়ব হিরাকে নৈশ্য প্রহরী কাম দপ্তরী পদে
নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অর্থ লেনদেনের অভিযোগটি ভিত্তিহীন বলেও
জানান তারা।
মুক্তিযোদ্ধার কোটা না থাকলেও সামান্য নৈশ্য প্রহরীর মত একটা চাকুরীতে
সম্পদশালীর সন্তানের পরিবর্তে অসহায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে নিয়োগ
দেওয়া হলে তেমন ক্ষতি হতো না বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাগন।