স্পোর্টস ডেস্ক:
দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিং করলে ব্যাটিং উইকেট আর বাংলাদেশের সময় সেটাই হয়ে যাচ্ছে বোলিং উইকেট! সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এভাবেই কেউ কেউ ব্লুমফন্টেইনের উইকেটকে ব্যাখ্যা করছেন। কথাটা যে মিথ্যে নয়, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সেটা প্রমাণ করে যাচ্ছেন। দ্বিতীয় দিন শেষে প্রথম ইনিংসে ১৪৭ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশের ইনিংস। বোঝাই যাচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাটিং করার সময় ব্লুমফন্টেইনের উইকেট পেসারদের পক্ষেই কথা বলেছে। দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য বাংলাদেশের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। কোনো উইকেট না হারিয়ে ৭ রান করেছে সফরকারীরা। প্রোটিয়াদের প্রথম ইনিংসের চেয়ে ৪১৯ রানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন সৌম্য-ইমরুল কায়েসরা।
উইকেট যে আসলেই পেসবান্ধব আজ ব্যাটিংয়ের শুরুতেই সেটা প্রমাণ করে দেন সৌম্য সরকার। কাগিসো রাবাদার বলে স্টাম্প উড়ে যায় তাঁর। তামিম ইকবালের বদলে ওপেনিংয়ে নামা এই ব্যাটসম্যান ফিরেছেন মাত্র ৯ রান করে। এরপর মুমিনুলও সৌম্যর দেখানো পথ অনুসরণ করেন। এরপর মুমিনুলকে কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসবন্দি করেন অলিভিয়ের।
এরপর এ কে মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ ও সাব্বিররা ফিরে গেলে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা। দলীয় ২৬ রানে মুমিনুলের পর ফিরে আসেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। মাত্র ৭ রান করেন টাইগার অধিনায়ক। এরপর দলীয় ৪৯ রানে দলের বিপদ বাড়িয়ে দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। পারনেলের বলে ডি ককের গ্লাভসে ধরা পড়েন তিনি। ভালো খেলতে থাকা ইমরুল কায়েস ফিরে যান ২৬ রান করে। টাইগারদের সংগ্রহ তখন মাত্র ৬১! এরপর রাবাদার বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন সাব্বির রহমান।
৬৬ রানে টপঅর্ডারের ছয় ব্যাটসম্যান হারিয়ে বাংলাদেশ তখন দারুণ বিপদে। প্রথম টেস্টের মতো এবারও কি ৯০ রানে অলআউট হতে বাংলাদেশ? এমন প্রশ্নই তখন টাইগার সমর্থকদের মনে ঘুরতে থাকে। তবে দেশকে আরেকটি সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডের লজ্জার হাত থেকে রক্ষা করেন লিটন দাস। এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের হাফ সেঞ্চুরিতে শেষ পর্যন্ত দলীয় স্কোরটা ১০০ পার হয়। তাঁকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন তাইজুল ইসলাম। দলীয় ১১৫ রানে তাইজুলকে ফেরান অলিভিয়ের। স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের লজ্জা দিয়ে ১৫ রান করেন এই স্পিনার।
ব্যাটসম্যানদের যাওয়া-আসার দিনে বাংলাদেশের হয়ে একাই লড়াইটা চালিয়ে যান লিটন দাস। ওয়ানডে সুলভ ব্যাটিং করে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন এই ব্যাটসম্যান। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁকেও স্বস্তিতে থাকতে দেননি রাবাদা। দিনের খেলা শেষ হওয়ার খানিক আগেই তাঁকে প্যাভিলিয়নে ফেরান প্রোটিয়া পেসার। এরপরই মুস্তাফিজকে ফিরিয়ে দেন কেশব মহারাজ। রুবেলকে ফিরিয়ে দিয়ে টাইগারদের ইনিংসটাকে মুড়িয়ে দেন রাবাদা।
দক্ষিণ আফ্রিকার রাবাদা পাঁচটি ও অলিভিয়ের নেন তিনটি উইকেট।
এর আগে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে চার উইকেটে ৫৭৩ রান করে ইনিংস ঘোষণা করেছে স্বাগতিকরা। এইডেন মার্করাম ১৪৩, ফাফ ডু প্লেসিস ১৩৫, হাশিম আমলা ১৩২ ও ডিন এলগার করেন ১১৩ রান।
বৃষ্টির কারণে আজ প্রায় দেড় ঘণ্টা পর দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু হয়। তবে বাংলাদেশের ভাগ্য বদলায়নি। এদিন মাত্র একটি উইকেট নিতে পেরেছেন টাইগার বোলাররা। ব্যক্তিগত ১৩২ রানে শুভাশীষের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে আসেন হাশিম আমলা। আজ তিন উইকেটে ৪২৮ রান দিয়ে ব্যাটিং শুরু করেন হাশিম আমলা ও দু প্লেসিস। প্রথম সেশনেই শতক তুলে নেন তাঁরা। মধ্যাহ্নভোজের পর হাশিম আমলা ফিরলেও ১৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। এ ছাড়া ২৭ বলে ২৮ রান করেন কুইন্টন ডি কক।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে শুভাশীষ তিনটি ও রুবেল হোসেন এক উইকেট নেন।