ঝালকাঠি সংবাদদাতাঃ- সাড়ে ৩শ বছরের ঐতিহ্যবাহি হিন্দু সম্প্রদায়ের পরম শ্রদ্ধেয় রামনন্দ বাউল ঠাকুরের সেবাশ্রম সংঘের সম্পত্তি আত্মসাতের লক্ষে আশ্রমের সেবাইত মহেন্দ্র নাথ দাস কে ১০লাখ টাকা দাবী অন্যথায় হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তৎকালীন চন্দ্রদীপ রাজার দানকৃত এ সম্পত্তি বিগত সাড়ে ৩শ বছর ধরে সেবাশ্রমের ধর্মীয় ক্রীয়াকর্মে ব্যবহৃত হয়ে আসলেও ¯’ানীয় রঙ্গলাল হালদার ও তার সহযোগী পার্শবর্তী উজিরপুর, চর খাজুরতলা গ্রামের একদল ভূমিদস্যু উক্ত সম্পত্তি আত্মসাৎ করার লক্ষে হুমকি-ধুমকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগে জানাগেছে। এ অব¯’ায় প্রানের ভয়ে সেবাইত মন্দির ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যব¯’া গ্রহনের জন্য ঝালকাঠি পুলিশ সুপারের নিকট লিখিত আবেদন জানিয়েছে।
সরেজমিন মন্দির কমিটির সভাপতি জগদিশ চন্দ্র সহ অতুল চন্দ্র হালদার, মুক্তিযোদ্ধা মাধব চন্দ্র সিকদার, মন্দিরের পরিচালক শান্তিরঞ্জন সিকদার জানায়, ১১৮০ সালে ঝালকাঠি সদরের গাভারাম চন্দ্রপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের এ¯’ানে রামনন্দ বাউল ঠাকুরের আবির্ভাব ঘটে। প্রায় ৬০/৭০ বছরের এখানে অব¯ি’ত একটি বট গাছের নীচে অব¯’ান করার পর তৎকালীন চন্দ্রদীপ রাজা রামনন্দ বাউল ঠাকুরের অলৌকিক ক্ষমতায় মুগ্ধ হয়ে তাকে ৩.৪৫ একর সম্পত্তি দান করেন।
পরবর্তীতে ১২৬১ সালে রামনন্দ বাউল ঠাকুরের (বর্তমান মন্দির ¯’লে) তিরোদান হলে তার ভাবশিষ্য রায় চন্দ্র গোষাই তার সমাধি রক্ষনাবেক্ষন ও সেবাশ্রমের দায়িত্ব পালন করেন। তারপর থেকে পর্যায় ক্রমে গত ১৯৭২ সাল থেকে বর্তমান সেবাইত মহেন্দ্র নাথ দাস সেবাশ্রমের দায়িত্ব পালন করছে আসছেন। এ অব¯’ায় ২০১৪ সালে ¯’ানীয় রঙ্গলাল হালদার উক্ত মন্দিরের ৬১ শতাংশ জমি তার মালিকানা দাবী করে মামলা-মোকদ্দমা ও উর্ধতন দপ্তরে বিভিন্ন মনগড়া অভিযোগ প্রদান শুরু করে।
এরপ্রেক্ষিতে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের নির্দেশে গত ৩০ জুন ২০১৬ তারিখ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মানিকহার রহমান তদন্ত শেষে উক্ত সম্পত্তি সেবাশ্রমের, অভিযোগের কোন সত্যতা নাই ও অভিযোগকারী রঙ্গলাল হালদার একজন প্রতারক মর্মে প্রতিবেদন দেন। এরপর উক্ত ভূমিদস্যুরা নতুন কৌশল হিসাবে ১০লাখ টাকা দাবী ও সেবাইতকে হত্যার হুমকি সহ নানা অপতৎপরতা শুরু করে।
যে কারনে সেবাইত মহেন্দ্র নাথ দাস প্রানের ভয়ে মন্দির ছেড়ে পালিয়ে যায়। এতে ধর্মীয় পূজা-অর্চনায় বিগ্ন সৃষ্টি হলে নিরুপায় হয়ে মন্দির কমিটি পুলিশ সুপারের নিকট আইনী প্রতিকারের লক্ষে আবেদন জানান।
এ ব্যাপারে ¯’ানীয় প্রবীন অব:শিক্ষক ও মুক্তিযোদ্ধা আঃ ছত্তার, ¯’ানীয় অধিবাসী আঃ ছত্তার হাওলাদার ও গাভা ইউপি সাবেক চেয়ারম্যানের ভাই প্রধান শিক্ষক সৈয়দ আলমগীর হোসেন জানায়, তারা ছোট থেকে মন্দির দেখে আসছে ও প্রতিবেশী হিসাবে মন্দিরের কাজে সাহায্য করেছে। এ মন্দিরের জমি রামনন্দ বাউল ঠাকুরের এতে রঙ্গলাল হালদারের দাবীর কোন সত্যতা নাই।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার সুভাস চন্দ্র সাহা জানায়, সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে যেহেতু দুপক্ষই হিন্দু তাই বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে আইনগত ব্যব¯’া নেয়া হবে।#