বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৪৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কবে হবে জাতীয় নির্বাচন, জানালেন প্রধান উপদেষ্টা কুমিল্লায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কা, নিহত ৩ মোরেলগঞ্জে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রশাসনের আয়োজনে ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলার উদ্বোধন জাতীয়তাবাদী রেলওয়ে শ্রমিক ও কর্মচারী দলের ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন তারেক রহমান দেশে ফিরবেন কখন, যা বললেন মির্জা ফখরুল গুম-খুনে আর জড়াবে না র‍্যাব : মহাপরিচালক শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম সমর্থন করে না ভারতের মোদি সরকার সোনারগাঁয়ে দুটি চুনা কারখানার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিছিন্ন পাঁচবিবিতে জনবল সংকট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে ক্যারিবিয়ান জয়ের পর তাসকিন-তাইজুল যা বললেন

এবার হেপাটাইটিস ‘বি’ চিকিৎসার ওষুধ উদ্ভাবন করলেন দুই বাংলাদেশি

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৭
  • ২২০ বার পড়া হয়েছে
এবার হেপাটাইটিস ‘বি’ চিকিৎসার ওষুধ উদ্ভাবন করলেন দুই বাংলাদেশি

অনলাইন ডেস্কঃ হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তিদের চিকিৎসায় বাংলাদেশি দুজন গবেষক অধিক কার্যকর ও উন্নততর ওষুধ উদ্ভাবন করেছেন। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন পেলে আগামী বছরের শুরুতেই এটি বাজারে আসবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মামুন-আল-মাহতাব এবং জাপান প্রবাসী বাংলাদেশি লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবর হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য নতুন ধরনের এই ওষুধ ‘ন্যাসভ্যাক’ উদ্ভাবন করেন। এ দেশেরই একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ওষুধটি প্রস্তুত ও বাজারজাত করবে। বাজারে প্রচলিত হেপাটাইটিস বি’র অন্যান্য ওষুধের তুলনায় এর দাম কম এবং সহজলভ্য হবে।

অধ্যাপক ডা. মামুন-আল-মাহতাব বাসসকে বলেন, ‘ন্যাসভ্যাক কোনো জাদুকরি ওষুধ নয়। কিন্তু এই ওষুধের ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসে আক্রান্ত শতকরা ৫০ ভাগ রোগীর ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে। আর লিভারের প্রদাহে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় আরোগ্য লাভের হার শতভাগ।

ডা. মাহতাব এই ওষুধের কার্যকারিতা যাচাইয়ের প্রধান পরীক্ষক এবং ডা. আকবর এই ওষুধ উদ্ভাবনের জন্য মৌলিক গবেষণা সম্পন্ন করেন।

জাপান প্রবাসী বাংলাদেশি লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আকবর ২৫ বছর ধরে হেপাটাইটিস বি চিকিৎসায় নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছেন। তাঁর গবেষণার মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে, হেপাটাইটিস বি’র বিরুদ্ধে মানুষের নিজের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকে বাড়িয়ে দিয়ে ভাইরাসটিকে নিয়ন্ত্রণ করা।

ডা. আকবর প্রথমে ইঁদুরের ওপর গবেষণা করেন। পরে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে হেপাটাইটিস বি রোগীদের ওপর ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা পরিচালনা করেন। পরবর্তী সময়ে আরো গবেষণার জন্য ডা. মাহতাব বাংলাদেশে প্রায় এক হাজার হেপাটাইটিস ‘বি’ রোগীর ডেটাবেস তৈরি করেন।

২০০৯ সালে বাংলাদেশে ১৮ জন ক্রনিক হেপাটাটিস ‘বি’ রোগীর ওপর ‘ন্যাসভ্যাক’-এর প্রথম ও দ্বিতীয় দফা ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালিত হয়। এতে আশাব্যঞ্জক ফলাফল পাওয়ায় ২০১১ সালে পুনরায় ১৫১ জন রোগীর ওপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালনা করা হয়।

তৃতীয় দফায় এই ১৫১ জন ক্রনিক হেপাটাইটিস ‘বি’ রোগীকে দুই দলে ভাগ করে তাদেরকে যথাক্রমে ‘ন্যাসভ্যাক’ ও পেগাইলেটেড ইন্টারফেরনের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। ট্রায়ালটিতে সর্বমোট ৭৫ জন রোগীকে মোট ১৫ বার ‘ন্যাসভ্যাক’ আর অন্য ৭৬ জন রোগীকে মোট ৪৮ বার পেগাইলেটেড ইন্টারফেরন প্রয়োগ করা হয়।

ডা. মাহতাব বলেন, ‘এ পরীক্ষায় দেখা যায় ন্যাসভ্যাক পেগাইলেটেড ইন্টারফেরন-এর চেয়ে অধিক কার্যকর।’ তিনি বলেন, এশিয়া, লাতিন আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া এবং এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে এর চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল দেওয়া হয়েছে।

ডা. মাহতাব বলেন, কিউবার ওষুধ প্রশাসন এরই মধ্যে ন্যাসভ্যাককে অনুমোদন দিয়েছে। পাশাপাশি বেলারুশ, ইকুয়েডর, নিকারাগুয়া ও এঙ্গোলাতেও হেপাটাইটিস বি’র চিকিৎসায় ন্যাসভ্যাক ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে।

বর্তমানে হেপাটাইটিস ‘বি’ সংক্রমণ থেকে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ করে তোলার মতো কোনো ওষুধ নেই। চিকিৎসকরা এ রোগের চিকিৎসার জন্য প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতির আশ্রয় নেন। যাতে এসব রোগী ধীরে ধীরে সংক্রমণ থেকে আরোগ্য লাভ করে এবং লিভার সিরোসিস বা লিভার ক্যানসারের মতো রোগে আক্রান্ত না হয়।

ডা. মাহতাব বলেন, এমনকি এ ধরনের চিকিৎসাও দীর্ঘদিন কোনো রোগীর ওপর প্রয়োগ করলে তার নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। তবে ন্যাসভ্যাক-এর ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে এটি ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে অনেক বেশি কার্যকর। তিনি বলেন, ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় আরো প্রমাণিত হয়েছে যে, ন্যাসভ্যাক কেবলমাত্র হেপাটাইটিস বি’র চিকিৎসার জন্যই কার্যকর নয়, যে কোনো ক্রনিক ইনফেকশনের জন্যও এটি কার্যকর।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের দুই কোটি ৪০ লাখ লোক ক্রনিক হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসে আক্রান্ত।

একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণার উল্লেখ করে ডা. মাহতাব বলেন, ‘দেশে পাঁচ কোটির বেশি লোক হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসে আক্রান্ত। এদের মধ্যে ৮০ লাখ লোক ক্রনিক হেপাটাইটিস ‘বি’ দ্বারা সংক্রমিত এবং তাদের লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সুত্র/ntvbd

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451