জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দিতে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে জাদুর কাঠি আছে। সেই কাঠির মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল মামলা সরকারে আসার পর খারিজ হয়ে গেছে। আমাদের কাছে জাদুর কাঠি নেই। তাই আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা রকেটের গতিতে চলছে।’
বৃহস্পতিবার ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে হাজির হয়ে অসমাপ্ত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অসমাপ্ত বক্তব্যে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমাকে রাজনীতি থেকে সরাতে এবং নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে নীলনকশা করছে ক্ষমতাসীনরা।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের উচ্চমহলের তৎপরতায় এটা প্রতীয়মান। আর এসব কারণে দেশবাসীর মনে গুরুতর সন্দেহ রয়েছে আমার বিরুদ্ধে মামলাগুলোর ন্যায় বিচার হবে কিনা।’
এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্থায়ী জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত।
সকাল ১১টা ২৪ মিনিটে আদালতে হাজির হন তিনি। আদালতে হাজির হওয়ার পর তার আইনজীবীরা স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক স্থায়ী জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে মামলার আগামী শুনানির দিন পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তিনি ১৫ মিনিটের মতো আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেওয়ার পর মুলতবি প্রার্থনা করেন। পরে আদালত ৯ নভেম্বর শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
এর আগে ২৬ অক্টোবর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে বক্তব্য উপস্থাপনের সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন খালেদা জিয়া। নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আদালতে তিনি বলেন, ‘এ মামলা ভুয়া, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
ওই দিন প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এরপর খালেদা জিয়া পরবর্তী সময়ে বাকি বক্তব্য রাখার অনুমতি চাইলে আদালত তা মঞ্জুর করে ২ নভেম্বর শুনানির পরবর্তী দিন ঠিক করেন।
এর আগে গত ১৯ অক্টোবর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন চান খালেদা জিয়া। পরে জামিন আবেদনের শুনানি শেষে আদালত এক লাখ টাকা মুচলেকায় তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। ভবিষ্যতে মামলা চলাকালে খালেদা জিয়া আবারও বিদেশে যেতে চাইলে তাকে আদালতের অনুমতি নিতে হবে বলে জানান বিচারক।
এই দুই মামলার শুনানিতে গত ১২ অক্টোবর হাজির না হওয়ায় একই আদালত খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। তখন তিনি বিদেশে ছিলেন।