বাংলার প্রতিদিন ডটকম,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আওয়ামীলীগ সমর্থিত নীল দলের শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সিনেট সদস্য ও নীল দলের সদস্য অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দিন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহত ওই শিক্ষককে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
নীল দল সূত্রে জানা যায়,বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টার দিকে টিএসসির সম্মেলন কক্ষে নীল দলের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শেষ পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সময়ের ইতিবাচক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন ড. জামাল উদ্দিন। তাঁর আলোচনা শেষ হলে বর্তমান প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বক্তব্য দেন। তাঁর বক্তব্যে সাবেক উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক ও তাঁর সমর্থিত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেন গোলাম রব্বানী। এ বক্তব্যের প্রতিবাদ করলে অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের দিকে তেড়ে আসেন প্রক্টর গোলাম রব্বানী। পরে এপলাইড ক্যামেস্ট্রি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. শাহ মোহাম্মদ মাসুম ও ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শীতেশচন্দ্র বাসার তাঁকে লাথি ও চেয়ার দিয়ে মারেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নীল দলের এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, দীর্ঘ কয়েকমাস পরে বৃহস্পতিবার নীল দলের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে বর্তমান উপাচার্য ও সাবেক উপাচার্যের পক্ষে বিপক্ষের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিল। সভায় সাবেক উপাচার্য আরেফিনের প্রশাসনের পক্ষে বিপক্ষে নানা কথা উঠে আসে। সভায় জামাল উদ্দিন সাবেক প্রশাসন, প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান প্রশাসন নিয়ে কথা বলেন। তাঁর কথা শেষ হলে বর্তমান প্রক্টর তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের কটুক্তির ভাষায় কথা বলেন। এক পর্যায়ে প্রক্টর তাঁর দিকে এগিয়ে আসেন। পরে মাসুম ও শীতেশচন্দ্র এসে তাঁকে লাথি মারেন। এর এক পর্যায়ে তাঁকে চেয়ার দিয়ে মারতে থাকেন তাঁরা ।
পরে জামালকে নীল দলের আহবায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুল আজিজসহ কয়েকজন শিক্ষকেরা এসে জামালকে উদ্ধার করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, নীল দলের আহবায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুল আজিজ নীল দলের দুইজন কো-কনভেইনার পদে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেন সেখানে অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিনের নামটি বারবার উঠে আসে। তাঁকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই তাঁর উপর হামলা করা হয়েছে।
আহত জামাল উদ্দিন বলেন, আমি সাবেক প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ও বর্তমান প্রশাসনের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরছিলাম। আমার বক্তব্যের পরে বর্তমান প্রক্টর জামাল উদ্দিন বক্তব্য দিচ্ছিলেন। তিনি সাবেক প্রশাসন ও আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিচ্ছিলেন। আমি এর প্রতিবাদ করি। পরে তিনি আমার দিকে তেড়ে আসতে থাকেন। এক পর্যায়ে মাসুম ও শীতেশচন্দ্র বাসার আমাকে লাথি মারেন ও চেয়ার তুলে মারেন। এতে আমার নাক দিয়ে রক্ত বের হয়।
এমন ঘটনার পরে নীল দলের শিক্ষকরা উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের বাসায় এসে এমন ঘটনার বিষয় জানান এবং আগামীকালকের মধ্যে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হলে শিক্ষকরা মানববন্ধন করবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে নীল দলের আহবায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুল আজিজ বলেন, ঘটনার বিষয়ে উপাচার্যকে বলা হয়েছে। তিনি এর সুষ্ঠু বিচার না করলে মানববন্ধন করা হবে।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, আমি বক্তব্য করার সময় জামাল উদ্দিন উত্তেজিত হয়ে আমার গায়ে আগেই হাত তুলেন। পরে পরিস্থিতি অনেক ঘোলাটে হয়ে যায়। কিন্তু আমি সবাইকে শান্ত থাকার জন্য আহবান করছিলাম।
সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি মিটিং এ আছেন বলে কথা বলতে চাননি।