সালেকিন মিয়া সাগর,দামুড়হুদা:
দামুড়হুদা উপজেলার কুড়–লগাছির বুইচিতলায় যততত্র ঝাঁড় ফুক,হাত চালান ও
কবিরাজী এবং ঔষধী গাছের চিকিৎসার নামে চলছে অপচিকিৎসা ও প্রতারনা।
নামের আগে পরে পদবির সমাহার। গ্যারান্টি সহকারে স্বামী-স্ত্রী অমিল, প্রেমে
ব্যার্থতা, জিনের আছর, যে কোন লোককে বশ করা, জন্ডিস,জীনের আচর,
যৌনরোগ ও ক্যান্সারসহ জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা করে আসছে এই সব
ভন্ড কবিরাজরা। ওপেন চ্যালেঞ্জ, গ্যারান্টির আশ্বাস প্রদান করে চিকিৎসার
মায়াজালে মানুষকে আটকান এসব প্রতারক ব্যাবসায়ীরা। স্থানীয়দের কাছে
নিজেদের তুলে ধরেছেন বিশিষ্ট কবিরাজ,হাকিম ও আধ্যাতিক সম্রাট হিসাবে।
যদিও এ সব জিনতত্ব কবিরাজি, আধ্যাতিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সরকার
অনুমোদিত কোন স্বীকৃতিপত্র নেই। তবুও তারা খ্যাতিমান আধ্যাতিক, কবিরাজ
ও হাকিম। এই সব প্রতারক চক্র চিকিৎসা সেবা দেওয়ার নামে বড় বড় দাওয়াখানা
খুলে বসেছে দামুড়হুদা উপজেলার বুইচিতলা গ্রামের নিজ নিজ আবাসস্থলে।
এসকল ভন্ড কবিরাজরা অসহায় লোকজনকে ঠকিয়ে ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
দামুড়হুদা উপজেলার বুইচিতলা গ্রামের বিশ্বাস পাড়ার ভোদোর ছেলে সাইদ
ওবিখ্যাত নামকরা ভন্ড কবিরাজ খলিল। তারা অসহায় আন্ধবিশ্বাসি লোকদের এবং
তাদের কাছে চিকিৎসা নিতে আসা অসহায় নিরীহ রোগীদের ঠকিয়ে হাতিয়ে
নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। তাদের সাথে চলছে নিরব ডাকাতি। স্থানীয়দের অভিযোগ
বিশাল মুখরোচক গল্প আর দৃষ্টিনন্দিত কার্যালয়ে বসে ভুয়া কবিরাজ সাইদ ও খলিল
চিকিৎসার নামে সাধারন অন্ধবিশ্বাসী মানুষদের সঙ্গে প্রতারনা করছে।
পাশাপাশি এসব কবিরাজ এজেন্ট সেট করে কমিশনের মাধ্যমে জটিল সব রোগের
চিকিৎসা দেওয়ার প্রতিশ্র“তি দিয়ে শহরের ও গ্রামের বিভিন্ন স্থানে প্রচার করে
এবং রোগি জগার করে। কবিরাজি ও হারবাল চিকিৎসার নামে এ রকম প্রতারণার
অভিযোগ রয়েছে দামুড়হুদা উপজেলার বুইচিতলা গ্রামের সাইদ ও খলিল কবিরাজের
বিরুদ্ধে । এলাকার প্রতারিত জনসাধারনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,তারা দুইজন
যেসমস্ত রোগের কবিরাজি ও আধ্যাতিকরা জটিল রোগের চিকিৎসা করছে তাদের
কোনো সরকারি স্বীকৃতিপত্র নেই। নেই কোনো দাওয়াখানা বা ঔষুধ তৈরীর
ব্যাবস্থা। আর এসব জটিল রোগের চিকিৎসা করছে সাধারন জ্ঞানের উপর ভর করে। এরা
রোগের বর্নণা শুনে হাত চালিয়ে কিংবা কৌশলে জ্বিনের আঁচর আছে বলে
ঝাড়ফুঁক করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। অথবা প্রতিষ্ঠিত কোন
কবিরাজ ঘর থেকে ঔষুধ এনে প্রলেপ পাল্টিয়ে রোগীদের হাতে দেয়। বন জঙ্গল থেকে
কিছু আজে বাজে গাছের লতা পাতা জগার করে রোগিদের হাতে ধরিয়ে দেয়।
দামুড়হুদার বিভিন্ন গ্রামে দালাল চক্র দিয়ে অসহায় লোকজনকে ভন্ড কবিরাজ.
হাকিম ও আধ্যাদিকদের দিয়ে প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাই যারা
এসব প্রতারকদের পাল্লায় পড়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন তারা প্রশাসনের নিকট
সুষ্ঠ পদক্ষেপ কামনা করছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে
কবিরাজ চিকিৎসাকেন্দ্র ব্যাঙ্গের ছাতার ন্যায় গজিয়ে উঠেছে। এসব
চিকিৎসাকেন্দ্রের পাতানো ফাঁদে পড়ে সাধারণ মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। কবিরাজ
ও হারবাল চিকিৎসায় নেই কোন সাটিফিকেট, নেই ড্রাগ লাইসেন্স বা কোন
কাগজপত্র না নিয়েই কিছু দিন হারবালে রিসিভশনে কাজ অথবা ছোট খাট রোগ
ঔষধি গাছের দ্বারা ভাল করে হয়ে গেছেন হারবাল ডাক্তার ও কবিরাজ। যে খানে বিন্দু
পরিমাণ ডাক্তারের ও কবিরাজি অভিজ্ঞতা নেই সেখানে মানুষকে ধোকা দিয়ে
হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। ঔষুধের লেভেল খুলে হারবাল ঔষধ নাম করে বিক্রয়
করছে দেদারছে। এতে করে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ জনগণ। অনেক ওষুধে
যৌন উত্তেজক ট্যাবলেটও ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে
হয়রানি করে মানুষের জীবনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রতিদিন মানুষ বিভিন্ন
মহামারি রোগের দিকে ধাবিত হচ্ছে এই হারবালের চিকিৎসা নিয়ে। এরকম
অভিযোগ এখন প্রায়ই পাওয়া যাচ্ছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার পাশে
টানানো থাকে এদের অশালিন ভাষার সাইনবোর্ড। স্কুল-কলেজের সামনে, গাড়ির
ভিতরে অশালিন ভাষার পোষ্টার লাগানো থাকে। ছোট ছোট ছেলে- মেয়েরা তা
বানান করে পড়তে দেখা যাচ্ছে। এতে করে শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার অবনতি হচ্ছে।
সরকারকে কোন প্রকার কর না দিয়ে দেদারছে ব্যবসা করে যাচ্ছে। এদের কাছে
রোগী গেলে ০৮/১০ হাজার টাকার বিল করে হাতে ধরিয়ে দেয় যাতে কোন প্রকার
ফলাফল পাওয়া যায় না । সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এসব অবৈধ কবিরাজ ও হারবাল
ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিবেন বলে আশাবাদী । এলাকার কেউ
যদি মহামারী রোগে আক্রান্ত হয় তাকে ফুসলিয়ে কবিরাজ ঘরে নাম ভাঙ্গিয়ে ভাল
ফল পাবে বলে বুঝিয়ে সুঝিয়ে মানুষকে নিয়ে যাওয়া হয় ঐসব তথা কথিত
কবিরাজ কিংবা হারবাল সেন্টারে। এসব দেখার জন্য কেউ নেই প্রতিনিয়ত এসব
ঔষুধ গ্রহণ ও কবিরাজী ব্যবস্থা গ্রহন করে মানুষ প্রতারিত হচ্ছে এবং হাতিয়ে
নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।