রাজধানীর ধানমণ্ডি ও গুলশানের দুটি শাখাসহ লেকহেড গ্রামার স্কুল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ মঙ্গলবার বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই নির্দেশ দেন।
একই সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া স্কুলটি বন্ধের নোটিশকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। আদালত বলেছেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ অনুমতি ছাড়া স্কুল পরিচালনা করছে এবং জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত মর্মে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে জঙ্গিবাদ বা ধর্মীয় উগ্রবাদের বিষয়ে সতর্ক থেকে কোনো তদন্ত করলে স্কুল কর্তৃপক্ষকে সে বিষয়ে সহযোগিতা করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গতকাল সোমবার লেকহেড গ্রামার স্কুলের সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের বিরুদ্ধে জারি করা রুলের শুনানি শেষে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন এ এফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার আকতার ইমাম ও রাশনা ইমাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
গত ৯ নভেম্বর রাজধানীর ধানমণ্ডি ও গুলশানের দুটি শাখাসহ লেকহেড গ্রামার স্কুলের সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
ওই দিন সকালে লেকহেড গ্রামার স্কুলের নতুন মালিক খালেদ হাসান মতিন ও ১২ শিক্ষার্থীর অভিভাবকের পক্ষে ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম রিট দায়ের করেন।
গত ৬ নভেম্বর ধানমণ্ডি ও গুলশানের দুটি শাখাসহ লেকহেড স্কুলের সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সালমা জাহানের সই করা চিঠিতে ঢাকা জেলা প্রশাসককে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, এই প্রতিষ্ঠানটি সরকারের অনুমোদন নেয়নি। এ ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ধর্মীয় উগ্রবাদ, উগ্রবাদী সংগঠন সৃষ্টি, জঙ্গি কার্যক্রমে পৃষ্ঠপোষকতাসহ স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
জানা গেছে, এই প্রতিষ্ঠানটির মূল উদ্যোক্তা ও পৃষ্ঠপোষক রেজোয়ান হারুন সম্প্রতি লন্ডন থেকে ঢাকায় এসে লাপাত্তা হয়ে যান। এখন পর্যন্ত তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। রেজোয়ান হারুনের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে অর্থায়ন ও মদদের অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিবেদনে রেজোয়ান হারুনকে আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
২০০৬ সালে ধানমণ্ডির ৬/এ সড়কে প্রতিষ্ঠিত হয় লেকহেড গ্রামার স্কুল। গুলশানে এই স্কুলের আরো দুটি শাখা আছে।