পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধিঃ
জন্ম থেকেই অন্ধ, চোখে দেখতে না পারলেও অদম্য শক্তিতে পড়াশুনা থেকে পিছিয়ে নেই
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার প্রীতি কিৎপট্টা ও মেহেদী হাসান। দু’জনই অংশ
নিয়েছে এবছরের অনুষ্ঠিত পিএসসি পরীক্ষায়।
শুধু লেখাপড়া নয়, নিত্যদিনের সব কাজেই পারদর্শী তারা। জীবনের সব বাধা পেরিয়ে
প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্ন তাদের। পরিবারের চাওয়া পড়ালেখা করে একদিন সমাজে মাথা উঁচু
করে দাঁড়াবে তাদের সন্তান।
ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সুন্দর এ পৃথিবীর আলো বাতাস পেলেও তা দৃষ্টি দিয়ে তা দেখার
সৌভাগ্য হয়নি কোমল মতি এ শিশু দু’টির। চোখ থেকেও নেই দৃষ্টি শক্তি, তবে সুস্থ্য-
সবলদের মতো জীবন চলার নিরন্তর সংগ্রাম আছে তাদের মধ্যেও।
উপজেলার আটাপুর ইউপির দরিদ্র আদিবাসী বিমান কিসপট্টার মেয়ে প্রীতি কিসপট্টা
পড়ছে খিরাপাথার গ্রামে ও মোনাজ্জল হোসেনের পুত্র মেহেদী হাসান পড়ছে মাঝিনা
গ্রামের ব্র্যাক স্কুলে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা জয় করে অংশ নিয়েছে এবারের পিএসসি
পরীক্ষায়।
প্রীতি ও মেহেদী হাসান জানায়, তারা বড় হয়ে শিক্ষক হবে, দৃষ্টি প্রতিবন্দীসহ সকল
অসহায় শিশুদের তারা শিক্ষা দিয়ে মানুষের মত মানুষ করতে বদ্ধপরিকর।
প্রীতির বাবা বিমান ও মেহেদী হাসানের বাবা মোনাজ্জল বলেন, তারা খুব দরিদ্র মানুষ,
যতদুর সাধ্য কুলায় ততদুর পর্যন্ত তারা তাদের সন্তানদের লেখাপড়া লেখাপড়া চালিয়ে যাবেন।
শ্রেণী শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তারা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হলেও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মতো
পড়াশুনাতে ভালো, শুধু সূচে সুতা লাগানো ছাড়া সব কাজই করতে পারে তারা।
তিনি আরো বলেন ক্লাশে অন্য ছাত্রদের জন্য শিক্ষক থাকলেও এ দু’জনকে আলাদা ভাবে
ব্রেইল পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া হয়। ব্র্যাকের পক্ষ থেকে শিশু দু’টির শিক্ষার ব্যায় ভার
বহন করা হলেও অদূর ভবিষ্যতে তাদের উচ্চশিক্ষার জন্য সরকারি অনুদানের প্রয়োজন
অনস্বীকার্য।
আটাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আ,স,ম সামছুল আরেফিন চৌধুরী আবুসহ এলাবাসী
জানান, সাধ্যমত তারা শিশু দু’টিকে সহযোগীতা করবেন।
এ ছাড়া হত দারদ্র পরিবারের দৃষ্টি প্রতিবন্দী শিশু দু’টির লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া তাদের
পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়, তাই উচ্চশিক্ষার জন্য সরকারি-বেসরকারি অনুদানেরও মানবিক
আবেদন জানান এই দুই জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী।