স্পোর্টস ডেস্কঃ
উত্তেজনা, নাটক, রোমাঞ্চ, ক্ষণে ক্ষণে ম্যাচের দৃশ্যপট বদলানো- টি-টোয়েন্টিতে এসবই তো খুঁজে বেড়ান দর্শকরা। সিলেট সিক্সার্স ও রংপুর রাইডার্সের মধ্যকার ম্যাচে সবকিছুরই দেখা মিলেছে। নাটকীয়তা শেষে শেষ হাসি হেসেছে রংপুরই। সিলেটকে ৪ উইকেটে হারিয়ে শেষ চারের স্বপ্ন উজ্জ্বল করেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭৩ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ গড়ে সিলেট সিক্সার্স। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে নাটকীয় লড়াই শেষে ২ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় রংপুর রাইডার্স।
নবম ম্যাচে পঞ্চম জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চার নম্বরেই রইলো রংপুর রাইডার্স। অন্যদিকে টানা তিন জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করা সিলেট সিক্সার্স সর্বশেষ ৭ ম্যাচেই জয় পায়নি। গত সাত ম্যাচে ছয়টি জয় ও একটি ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে নাসির হোসেনের দল।
রংপুরের জয়ে দারুণ ভূমিকা পালন করেন মাশরাফি ও নাহিদুল ইসলাম। ১৪ বলে ৩১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন এই দুজন।
মাশরাফি ১০ বলে দুটি ছক্কার সাহায্যে ১৭ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন। নাহিদুল করেন ৭ বলে ১৪ রান। এছাড়া রবি বোপারা ২৭ বলে ৩৩, জিয়াউর রহমান ১৮ বলে ৩৬, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ৩৮ বলে ৪৩ এবং মোহাম্মদ মিঠুন ১৭ বলে করেন ১৮ রান।
সিলেট সিক্সার্সের হয়ে একটি করে উইকেট নেন সোহেল তানভির, নাবিল সামাদ, টিম ব্রেসনান ও আবুল হাসান।
১৭৪ রানের বড় লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় রংপুর রাইডার্স। সোহেল তানভিরের করা ইনিংসের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে ব্রেসনানকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ক্রিস গেইল (৫)। দ্বিতীয় উইকেটে জিয়া ও ম্যাককালাম ৩০ বলে ৫৯ রানের ঝোড়ো জুটি গড়ে রংপুরকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন।
তবে জিয়া আউট হওয়ার পরই রানের চাকা স্লো হয়ে যায় রংপুরের। এই সুযোগে প্রতিপক্ষকে চেপে ধরে সিলেট সিক্সার্স। বোপারার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে তারপরও ম্যাচে টিকে থাকে রংপুর।
ইনিংসের শেষ ৪ ওভারে ৫ উইকেট হাতে রেখে জিততে ৪৪ রান দরকার ছিল রংপুর রাইডার্সের। বোপারা ও মাশরাফি ইনিংসের ১৭তম ওভার থেকে ১৪ রান নিয়ে ব্যবধান ১৮ বলে ৩০ করে ফেলেন। ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বোপারা আউট হয়ে ফিরে গেলে ম্যাচ রংপুরের হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়।
তবে একজন আশা ছাড়েননি; তিনি মাশরাফি। ১৮তম ওভারের পঞ্চম বলে নাহিদুল চার হাঁকালে ব্যবধান কমে আসে। ওভারের শেষ বলে দুই রান নিয়ে ব্যবধান ১২ বলে ২০ করে ফেলেন তিনি।
সোহেল তানভিরের করা ১৯তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ব্যবধান ১১ বলে ১৪ করে ফেলেন মাশরাফি। তবে শেষ ৫ বলে নিতে পারেন মাত্র ৫ রান। ফলে জিততে ৬ বলে দরকার ছিল ৯ রান।
ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণী ওভারের প্রথম বলে ওয়াইড দেন ব্রেসনান। পরের বলে রান নিতে পারেননি মাশরাফি। দ্বিতীয় বলে ব্রেসনানের মাথার ওপর দিয়ে বল সীমানাছাড়া করে জয় হাতের নাগালে নিয়ে আসেন রংপুরের অধিনায়ক। তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নিয়ে স্কোর সমান করে ফেলেন মাশরাফি। পরের বলে চার হাঁকিয়ে রংপুরের জয় নিশ্চিত করেন নাহিদুল।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বাবর আজমল, সাব্বির রহমান ও আন্দ্রে ফ্লেচারের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে লড়াকু সংগ্রহ গড়ে সিলেট সিক্সার্স। বাবর ৩৭ বলে ৫৪, সাব্বির ৩৭ বলে ৪৪ এবং ফ্লেচার করেন ১৭ বলে ২৬ রান। এছাড়া রস হুইটলি ১১ বলে ১৭ এবং ব্রেসনান ৫ বলে করেন ১৬ রান।
রংপুর রাইডার্সের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন নাজমুল ইসলাম। মাশরাফি বিন মুর্তজা নেন এক উইকেট।