অনলাইন ডেস্কঃ-
‘জঙ্গিরা নতুন পন্থা অবলম্বন করেছিল। আমাদের অভিযানিক দল ভেতরে ঢুকেই দেখে যে জঙ্গিরা গ্যাস বার্নার অন করে ওটার ওপরে একটি গ্রেনেড রেখে দিয়েছিল। যাতে টেমপারেচার ডেটেনিশন হয়ে কিন্তু একটা ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারতো।’
রাজধানীর পশ্চিম নাখালপাড়ায় ‘রুবি ভিলা’র অভিযানের ব্যাপারে আজ শুক্রবার সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা থেকে পশ্চিম নাখালপাড়ায় ‘রুবি ভিলা’ নামে বাড়িটি ঘিরে অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শুক্রবার বিকেলে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ জানান, তিনজন নিহত হয়েছে। এরা জঙ্গি এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জেএমবির (জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ) সদস্য।
অভিযানের ব্যাপারে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল যে এখানে কয়েকজন সক্রিয় জঙ্গি আছে। যারা বিভিন্ন স্থানে নাশকতার পরিকল্পনা করছিল এবং এখানে একত্রিত হয়েছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। অভিযানটা মূলত ২ টার দিকে শুরু হয়। কিন্তু মূল অভিযানটা শুরু হয় সাড়ে তিনটার দিকে। আমরা প্রথমে এসে গ্রিলের দরজা খুলতে বললে বাড়িওয়ালারা কুয়িক রেসপনস না করায় অভিযানটা পরিচালনা করতে একটু দেরি হয়। তারপরে আমরা গ্রিল ভেঙে বাড়িটির ভেতরে প্রবেশ করি। প্রবেশ করার পরে রুবেল নামে যে ম্যানেজার ছিল তার সঙ্গে কথা বলে আমরা নিশ্চিত হই যে জঙ্গিরা ৫ তলার পূর্ব পাশে আছে। এক সময় ৫ তলার পূর্ব পাশের একজনকে দরজা খুলতে বললে তারা যখন বুঝতে পারে আমরা এসেছি তখন তারা একটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং গুলি করে। তখন আমরা গোলাগুলি করি।’
মুফতি মাহমুদ আরো বলেন, ‘গোলাগুলির পরে আমরা ভেতরে ঢুকে নিশ্চিত হই যে এখানে তিনজন জঙ্গি ছিল এবং তিনজনই নিহত হয়েছে। এখানে জঙ্গিরা একটা নতুন পন্থা অবলম্বন করেছিল। আমাদের অভিযানিক দল ভেতরে ঢুকেই দেখে যে জঙ্গিরা গ্যাস বার্নার অন করে ওটার ওপরে একটি গ্রেনেড রেখে দিয়েছিল। যাতে টেমপারেচার ডেটেনিশন হয়ে কিন্তু একটা ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারতো। কিন্তু আমাদের দল ওখানে ঢুকেই স্মেল (গন্ধ) পায় এবং তারপরেই গ্যাসের লাইন কেটে দেয়। যেহেতু অন্যান্য বিস্ফোরক থাকতে পারে এই সেক্ষেত্রে আমরা নিরাপত্তার কথা ভেবে সবাইকে সরিয়ে নেই। পরে আমাদের বম্ব ডিসপোজল ইউনিট এবং ডগ স্কড দিয়ে সার্চ করেছি। তখন আমরা দুটি পিস্তল, বোমা তৈরির সরঞ্জাম, আত্মঘাতি বেল্ট, ডেটেনেটর দেখতে পাই।’
মুফতি মাহমুদ বলেন, ‘এখানে যে তিনজন জঙ্গি নিহত হয় তারা সবাই জেএমবির সদস্য ছিল। তাদের পরিকল্পনা ছিল ঢাকায় বড় ধরনের নাশকতা করার। আমরা বাড়ির মালিকদের কাছে তাদের পরিচয়ের ব্যাপারে জানতে চেয়েও সঠিক কোন ঠিকানা পাইনি। সাধারনত জঙ্গিরা বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় তথ্য গোপন করে থাকে।