কলকাতার সংগীতশিল্পী রূপম ইসলামের ব্যান্ড ফসিলসকে অপপ্রচারের জবাব দিলো বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যান্ড মাইলস। বুধবার দিবাগত রাত ১টা ৪ মিনিটে মাইলসের ফেসবুক পেজে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন দলটির দুই সদস্য শাফিন আহমেদ ও মানাম আহমেদ।
ভিডিওর শুরুতে শাফিন বলেন, ‘কলকাতার ব্যান্ড ফসিলস আমাদের নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে, এটা আমরা জানতে পেরেছি। তারা যে আমাদেরকে বয়কটের ডাক দেবে তা আমরা আশা করিনি। সংগীতকে ভৌগলিক জায়গায় ভাবা ঠিক নয়।’
ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আগামী ১৩ আগস্ট কলকাতায় নজরুল মঞ্চে আজাদী কনসার্টে সংগীত পরিবেশনের কথা ছিলো মাইলস, ফসিলস ও পাপনের। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতবিদ্বেষী মন্তব্যের জেরে মাইলসকে বাদ দেওয়ার দাবি তোলে ফসিলস। এ কারণে বিতর্ক এড়াতে আয়োজকরা দুটি ব্যান্ডকেই এ কনসার্ট থেকে সরিয়ে দিয়েছে।
মাইলসের দুই সহোদর হামিন আহমেদ ও শাফিন আহমেদের ফেসবুকে ভারত-বিরোধী ধারাবাহিক পোস্ট এবং মন্তব্যের কারণেই তাদেরকে বয়কটের ডাক দেয় ফসিলস। ফেসবুকে ‘বয়কট মাইলস’ নামে একটি পেজও তৈরি হয়। মাইলসকে বয়কটের দাবিতে বুধবার (৩ আগস্ট) বালিগঞ্জ ফাঁড়িতে কনসার্ট আয়োজকদের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করার কথা ছিলো ফসিলস ভক্তদের। পরে অবশ্য তা বাতিল হয়েছে।
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটারকে নিষিদ্ধ করার জেরে হামিন ও শাফিন ফেসবুকে আবেগ থেকে কিছু মন্তব্য করেন। এগুলোকেই ফসিলস ভারতবিরোধী মন্তব্য উল্লেখ করে অপপ্রচার চালিয়েছে।
মাইলসের সমালোচনা করে রূপম কলকাতার এ-বেলা পত্রিকাকে বলেন, ‘মাইলসের ভক্ত আমরা সবাই। কিন্তু তাদের এ ধরনের মন্তব্য প্রকাশের পর থেকে আর তাদের প্রতি সম্মান দেখানো যায় না। কথায় কথায় ভারতকে গালি দেওয়াটা তাদের একটা বড় উদ্দেশ্য। এ ধরনের মানুষ ভারতেই আবার অনুষ্ঠান করতে আসার স্বপ্ন দেখে কী করে? আয়োজকরাও কীভাবে এ ধরনের ব্যান্ডকে ভারতের স্বাধীনতা দিবসের কনসার্টের জন্য নির্বাচন করতে পারে বুঝতে পারছি না।’
এ প্রসঙ্গে শাফিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘ফসিলসের ইন্ধন পেয়ে হাতেগোনা কিছু ছেলে ফেসবুকে আমাদের নিয়ে কটুকথা বলছে। এটাকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। ঈর্ষা থেকে এ ধরনের কর্মকান্ড করে থাকতে পারে ওরা। এ ধরনের কার্যকলাপের মাধ্যমেই আমাদের অনেক বছর দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু পারেনি, পারবেও না।’
যোগ করে শাফিন আরও বলেন, ‘বিশ্বকাপ ক্রিকেট চলাকালে প্রত্যেকেই তার দেশের পক্ষে কথা বলতে পারে। আমরাও বলেছি। আমাদের ক্রিকেটার ও দলের ওপর যে অনৈতিক সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে, তাতে কিন্তু আমরা ওদের দেশের শিল্পীদের এখানে আসা নিয়ে প্রশ্ন তুলিনি।’
এদিকে ভিডিও বার্তায় শাফিন বলেন, ‘দেশের যে কোনো ব্যাপারে নাগরিক হিসেবে মন্তব্য করার অধিকার আমার আছে। এটাকে টেনে নিয়ে সাংস্কৃতিক আয়োজনের সঙ্গে মেলানোর কোনো প্রয়োজন ছিলো বলে আমরা মনে করি না। দেশপ্রেমের কথা বলাটা ভারতবিদ্বেষ নয়। বিদ্বেষ সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার।’
একই ভিডিওতে মানাম বলেছেন, ‘আমরা চাই সাংস্কৃতিক বিনিময় আরও বাড়ুক। ভারতীয় শিল্পীরা এলে কিন্তু মাইলসের কেউ সমালোচনা করে না। ফসিলসও চাইলে যখন ইচ্ছে এ দেশে কনসার্ট করে যেতে পারবে। কিন্তু রূপম যেটা করেছে তা নোংরামি। এটা তার কাছ থেকে কাম্য নয়।’