শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ
গাজীপুরের শ্রীপুরে অনৈতিক আচরণের অভিযোগ তুলে এক ডাক্তারের
বিরূদ্ধে প্রতিবাদ সভা করেছে বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা মাঠ
কর্মচারী সমিতির শ্রীপুর শাখা। ৩মার্চ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায়
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সম্মেলন কক্ষে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ইয়াসির আরাফাতের উপস্থাপনায় ও বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা মাঠ
কর্মচারী সমিতির গাজীপুর জেলার সহ সভাপতি মো ঃ শরিফুল
ইসলামের সহযোগীতায় প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন
বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা মাঠ কর্মচারী সমিতি কেন্দ্রীয় শাখার
সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দিন আহম্মেদ। পরে দুপুর আড়াইটায়
সমাবেশ শেষে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্তরে প্রতিবাদ মিছিল করেন তারা।
সভায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পরিবার পরিকল্পনা মাঠকর্মীরা জড়ো
হন। সমাবেশে ১০জন মাঠকর্মী আলাদাভাবে শ্রীপুর উপজেলা পরিবার
পরিকল্পনা কার্যালয়ের ডা. আবুল ফয়েজের বিরুদ্ধে মাঠকর্মী ও
ক্লায়েন্টদের সাথে অনৈতিক আচরণের অভিযোগ পেশ করেন। উল্লেখ্য
গত ৪ ফেব্রুয়ারী পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহা পরিচালক বরাবর
শ্রীপুরে কর্মরত মাঠ কর্মচারীরা একটি লিথিত অভিযোগ দায়ের
করেন।
সমাবেশে তাঁরা অভিযোগ করে বলেন, ডা. আবুল ফয়েজের কাছে
পরিবার পরিকল্পনার জন্য বুঝিয়ে শুনিয়ে ক্লায়েন্ট আনলে তিনি
বিভিন্ন কথাবার্তায় ক্লায়েন্টকে পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণে
নিরুৎসাহিত করেন। কাওরাইদ থেকে আসা পরিবার পরিকল্পনা সহকারী
সুষমা বালা বলেন, ওই ডাক্তারের কাছে ক্লায়েন্ট আনলে তিনি
ক্লায়েন্টের শরীরে অশালীল স্পর্শ করেন। তিনি আরও বলেন, অনেক সময়
স্থায়ী পরিবার পরিকল্পনার জন্য অপারেশন করা হলে যন্ত্রপাতি নারীদের
স্পর্শকাতর স্থানে রেখে অশালীন আচরণ করেন বলে ক্লায়েন্টরা তার কাছে
অভিযোগ করেছেন।
রাজাবাড়ি থেকে আসা পরিবার পরিকল্পনা সহকারী শামছুন্নাহার বলেন,
অভিযুক্ত ডাক্তারের কাছে ক্লায়েন্ট আনার পর ক্লায়েন্টের সাথে খারাপ
আচরণ করেন ওই ডাক্তার। এর ফলে বেশ কয়েকজন ক্লায়েন্ট তার সাথে রাগ
করে বাড়ি চলে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে।
কেওয়া গ্রামের পরিবার পরিকল্পনা সহকারী নুরুন্নেছা জানান, তিনি
কয়েকজন ক্লায়েন্ট এনেছিলেন। ওই ডাক্তার ক্লায়েন্টকে পরিবার
পরিকল্পনা পদ্ধতি হিসাবে এনএসবি গ্রহণ না করতে উৎসাহিত
করেছেন। এবং তাকে পরিবার পরিকল্পনার আরও কয়েকটি পদ্ধতি নিয়ে
আলাপ করার জন্য রাতে ফোন দিতে বলেন। এ ছাড়া পরিবার পরিকল্পনা
সহকারীদের মুঠোফোনে ওই ডাক্তার গভীর রাতে ফোন দিয়ে অশালীন
কথাবার্তা বলেন বলেও তিনি জানান।
শানজিদা হক শিমু নামের এক পরিবার পরিকল্পনা সহকারী জানান,
ক্লায়েন্ট নিয়ে আসলে পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণের প্রসঙ্গ ছাড়াও
অশালীন প্রসঙ্গে ক্লায়েন্টের সাথে আলাপ করায় তারা বিব্রত হয়ে
বাড়ি ফিরে যায়। এমন কয়েকজন ক্লায়েন্টের অভিজ্ঞতা তিনি
সমাবেশে তুলে ধরেন।
পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক শরিফুল ইসলাম জানান, একটি হাসপাতালে
এক টানা ৩বছরের বেশি কেও থাকতে পারে না কিন্তু ওই ডাক্তার শ্রীপুরে
পরিবার পরিকল্পনা অফিসে ২০০৯সাল থেকে আজ পর্যন্ত কাজ করছেন।
ডাক্তারের অনৈতিক কার্যকলাপের বিরোধিতা করলে তিনি প্রশাসনিক
ভয় দেখান।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা মাঠ কর্মচারী সমিতির কেন্দ্রীয়
কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দিন আহাম্মেদ সমাবেশে
বলেন, সরকারের পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমকে এভাবে প্রশ্নের সম্মুখীন
করলে মানুষ নিরোৎসাহিত হয়। অশালীন আচরণ করলে সরকারের পরিবার
পরিকল্পনায় লক্ষ্য অর্জন হবে না। সমাবেশ থেকে পাওয়া লিখিত অভিযোগ
মাহপরিচালকের কাছে তুলে ধরবেন বলেও তিনি সমাবেশে বলেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডা. আবুল ফয়েজ তার বিরোদ্ধে আনিত সকল
অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন,সবই আমার বিরোদ্ধে ষড়যন্ত্র।আমার
কাজে ঈর্ষান্বিত হয়ে এসব করা হচ্ছে। অশালীন আচরণ করা সম্পর্কে
তিনি বলেন,কাজের স্বার্থে তাগিত দেয়াকে তারা অশালীন বলতে
পারেনা।