বাংলার প্রতিদিন ডেস্কঃ-
পুলিশ জনগণের জন্য সর্বাত্মক কাজ করে, জনগণের বন্ধু, তাই পুলিশের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ থাকুক না কেন, জনগণ পুলিশের কাছেই যায় সবার আগে। আর তা সমাধান করার জন্য পুলিশ অক্লান্ত পরিশ্রম করে। আর তেমনি এক কাজের উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন রাজধানীর আদাবর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মো. শাহীনুর রহমান। তার এ আন্তরিকতা ও উদারতায় প্রমাণ করেন পুলিশ জনগণের বন্ধু।
ডাচ বাংলা ব্যাংকের রিং রোড শাখার অফিসার একজনের একাউন্টের টাকা ভূল করে অন্যজনের একাউন্টে ৩৫০০০/-টাকা জমা দিয়েছিলো। রাজধানীর আদাবর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোঃ শাহীনুর রহমানের চেষ্টা ও আন্তরিকতায় টাকা গুলি আবার প্রকৃত মালিকের একাউন্টে জমা হয়েছে।
বিস্তারিত তথ্য আদাবর থানার অফিসার ইনচার্জের ফেসবুক আইডির পোস্ট থেকে হুবুহু তুলে ধরা হল-
গতকাল ১২.৩৭ আমি থানা এলাকায় রাউন্ডে আছি।এমন সময় একটা ফোন আসলো আমার সরকারি মোবাইলে।পরিচয় দিয়ে বল্ল যে, ডাচ বাংলা ব্যাংক রিং রোড ব্রান্চ এর ম্যানেজার বলছি।আমি বল্লাম কি উপকার করতে পারি আপনার জন্য। ম্যানেজার সাহেব বল্ল আপনি কিভাবে বুঝলেন আমি বিপদে পড়েছি। আমি বল্লাম ভাই বিপদে না পড়লে তো মানুষ পুলিশকে ফোন দেয় না।ম্যানেজার সাহেব বল্ল ভাই আসলেই বিপদে পড়েছি। এখন আপনার হেল্প ছাড়া বিপদ থেকে উদ্ধার হওয়া সম্ভব না। আমি বল্লাম বলেন দেখি কি বিপদ, আমি আপনার কি উপকার করতে পারি। ম্যানেজার সাহেব বল্ল গতকাল এক লোক তার ব্যাংকে ৩৫০০০/- টাকা নিয়ে আসছে মিরপুর ব্রান্চের একটা একাউন্ট নাম্বারে জমা দেওয়ার জন্য। একাউন্ট হোল্ডারের নাম মো:আরিফুর রহমান। তিনি টাকা জমা দেওয়ার স্লিপে বিস্তারিত লিখে ক্যাশে জমা দেয়। ক্যাশ অফিসার কম্পিউটারে নাম দিয়ে সার্চ দিলে আরিফুর রহমান নামে দুইটা নাম আসে। ক্যাশ অফিসার একাউন্ট নাম্বার না দেখে ভুল করে অন্য আরিফুর রহমান এর একাউন্ট এ টাকা জমা দিয়ে দেয়। আরিফুর রহমান মোবাইলে মেসেজ দেখে যে তার একউন্ট এ ৩৫০০০ টাকা জমা হয়েছে। সে খুব অবাক হয় যে কে তারা একাউন্ট এ ৩৫০০০ টাকা জমা দিলো। সে সাথে সাথে ৩৫০০০ টাকা তুলে ফেলে। ম্যানেজার সাহেব আরিফুর রহমান কে ফোন দিলে সে ফোন পিক করে না। বন্দ করে রাখে। নিরুপার হয়ে ম্যানেজার সাহেব আমাকে ফোন দেয়। আমি বলি যে একাউন্ট এ ভুল করে টাকা জমা দেয়া হয়েছে ঐ একাউন্ট হোল্ডারের বিস্তারিত তথ্য ও একটা স্টেটমেন্ট সহ ২০ মিনিট পর কাউকে থানায় পাঠান। ম্যনেজার সাহেব তার সেকেন্ড অফিসারকে বিস্তারিত তথ্য সহ থানায় পাঠায়। আমি তখন আমার ইন্সপেক্টর অপারেশন সুজিত কে আমার রুমে ডেকে বলি আরিফুর রহমান এর নাম্বারে ফোন দিয়ে কথা বলার জন্য। সুজিত আরিফুর রহমান এর নাম্বারে ফোন দিলে সে ফোন পিক করে। সুজিত তার পরিচয় দিয়ে তাহাকে থানায় আসতে বলে। সে বলে যে কেন থানায় আসতে হবে। সুজিত বলে যে আপনি আসলে তারপর আপনাকে বলবো। সে সন্ধ্যার সময় থানায় আসবে বলে জানায় এবং লাইন কেটে দেয়। লাইন কেটে দেওয়ার ২/৩ মিনিট পর পিবিআই এ কর্মরত এক ইন্সপেক্টর সুজিত কে ফোন দেয়। সুজিত তখন ঐ ইন্সপেক্টর কে বিস্তারিত ঘটনা খুলে বলে। তখন উনি বলে যে, ঠিক আছে আমি বলে দিচ্ছি টাকা ফেরত দিয়ে দিবে। বিকাল ১৬.২৪ মিনিটে ম্যানেজার আমাকে ফোন দিয়ে বলে যে ভাই উনি টাকা জমা দিয়ে দিয়েছে।
পাঠক আমার হয়তো এখানে তার জন্য দশ মিনিট সময় ব্যায় করা লাগছে এবং একটা ফোন দেওয়া লাগছে। কিন্তু ব্যাংকের যে অফিসারটা ভুল করে অন্য লোকের একাউন্ট এ টাকাটা জমা দিয়ে দিয়েছিলো তার বেতন থেকে হয়তো ব্যাংক ৩৫০০০/- টাকা কেটে নিতো। আমার এই টুকু সহযোগিতার কারনে ঐ অফিসারটা তার ৩৫০০০/- টাকা ফেরত পেল।তার জন্য এই ৩৫০০০/- টাকা অনেক বড় ব্যপার।তারপর ও তার চাকরি টিকিয়ে রাখার বিষয়। আমি জানি না এর পরও তার বিরূদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যাবস্থা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গ্রহন করবে কি না?
পাঠক আপনারা ই বিচার করেন এটা কি আার ও একটা ভাল কাজ নয় কি?