সাইফুর রহমান শামীম,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ঃ
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের দিগদারী
বিলের উপর সেতুটি দীর্ঘ ১০বছর ধরে স্লাব ভেঙ্গে চলাচলের
অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে পাশ্ববর্তি কালীগঞ্জ ইউনিয়ন ও ভিতরবন্দ
ইউনিয়নের ১৯টি গ্রামের প্রায় ৩৫-৪০ হাজার মানুষ চলাচলে চরম
দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ‘দিগদারী কাঠের ব্রিজ’ নামে
খ্যাত সেতুটির স্লাবের মাঝের অংশটা ভেঙ্গে রড বেড় হয়েছে ও
দুই পাশের রেলিং ভেঙ্গে গেছে। এ অবস্থায় দীর্ঘ ১০ বছর ধরে
জীবনের ঝুকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে এই সব গ্রামের মানুষজন।
গুরুত্বপুর্ণ এই সড়কে সেতুটি পুননির্মাণের জন্য
এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি একাধিকবার সংশ্লিষ্ট
বিভাগকে অবহিত করলেও কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এলাকাবাসীর
দাবী দেশের ধারাাবহিক উন্নয়নের এই সময়ে দ্রুত সেতুটি
নির্মাণ করে হাজার হাজার মানুষের চলাচলের দুর্ভোগ লাঘব করা
হোক।
স্থানীয় দিগদারী জামে মসজিদের ঈমাম কারী আজগার আলী
জানান, কালীগঞ্জ ইউনিয়নের ১৬টি ও ভিতরবন্দ ইউনিয়নের ৩টি
গ্রামের প্রায় ৩৫-৪০হাজার মানুষ ঝুকি ভাঙ্গা সেতু দিয়ে
পাড়াপাড় হচ্ছে। ফলে প্রায় সময় ওই ভাঙ্গা সেতুতে ছোটবড়
দুঃঘটনা লেগেই আছে। ঝাকুয়াবাড়ী গ্রামের গরীব রিকসা
চালক সোলদার আলী বলেন, রিকসা চালিয়ে সংসার চালাই।
সেতুটি দিয়ে রিকসা চলাচল করা যায় না। দুই মাইল ঘুরে ভিতরবন্দ
বাজারসহ উপজেলা ও জেলা শহরে যেতে হয়।
একই গ্রামের রুহুল আমিন মটরসাইকেল ভাড়া খাটিয়ে সংসার
চালান। তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, দীর্ঘ ৯-১০বছর ধরে
সেতুটির উপরের স্লাব ভেঙ্গে গিয়ে এখন মানুষের যাতায়াতে
অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বহুদিন ধরে এলাকার মেম্বার চেয়ারম্যান ও
এমপি সাহেবকে বলেছি তারা শুধু আশ্বাসই দিচ্ছেন।
সেতুটির পুর্ব পাড়ের বাসিন্ধা ভিতরবন্দ ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক
আব্দার হোসাইন জানান, সেতুটি দিয়ে মটর সাইকেল নিয়ে
যাওয়া আসা করা যায় না। এ কারনে ওপারে এক আতœীয়র বাড়ীতে
মটর সাইকেল রেখে আসি।
শিবনাথের বস গ্রামের কলেজ ছাত্র আরিফুল ও মশিউর রহমান
জানান, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা ভয়ে সেতুর উপর দিয়ে না গিয়ে
নীচ দিয়ে চলাচল করে। তারা বন্যার আগেই সেতুটি নির্মানের
দাবী জানান।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বার হাবিবুল ইসলাম জানান, দিগদারী
বিলের উপর ১৯৭৭সালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান একটি কাঠের
ব্রীজ করেছিল। সেই থেকে ব্রীজটি কাঠের ব্রীজ নামে পরিচিত।
১৯৮৭সালে তৎকালীন উপজেলা পরিষদ কাঠের ব্রীজের স্থলে একটি ফুট
ব্রীজ নির্মান করেন। পরে ২০০১সালে এলজিইডি একবার মেরামত
করেছিল। ২০০৮সালের ভয়াবহ বন্যায় ঝাকুয়াবাড়ী রাস্তা ও সেতুটি
খুবই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সেই থেকে আর মেরামত করা হয়নি। ফলে এখন
যানবাহন তো দুরের কথা মানুষ পায়ে হেটে যেতেও ভয় পায়।
কালীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান ব্যাপারী
জানান, ভিতরবন্দ ইউপি চেয়ারম্যানসহ কয়েকবার উপজেলা পরিষদ
মিটিংয়ে সেতুটি নির্মানের প্রস্তাব করেছি। উপজেলা
নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রকৌশলী ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস
দিয়েছেন।
এব্যাপারে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগের নাগেশ্বরী উপজেলা
প্রকৌশলী বাদশা আলমগীর বলেন, দিগদারী বিলের উপর একটি বড়
ব্রীজ করার জন্য একটি প্রাক্কলন তৈরী করে অনুমোদনের জন্য ঢাকার
এলজিইডি‘র প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে । পাশ হয়ে এলে
টেন্ডার আহবান করা হবে।