বাংলার প্রতিদিন ডটকম ঃ- দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার এক্স-রে ও রক্ত পরীক্ষার সুপারিশ করেছে মেডিকেল বোর্ড। এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন মঙ্গলবার কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে ব্যক্তিগত চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া আপাতত এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে চান না খালেদা জিয়া।
কয়েক দিন ধরেই খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে। মেডিকেল বোর্ড সোমবার জানিয়েছিল, খালেদা জিয়া অসুস্থ। তবে তা গুরুতর নয়। রোববার খালেদা জিয়াকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে দেখতে যায় চার সদস্যের মেডিকেল বোর্ড।
কারাগারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, মেডিকেল বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী খালেদা জিয়ার রক্তের কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (সিবিসি), সি-রিঅ্যাক্টিভ প্রোটিন (সিআরপি), ইউরিক এসিড ও এক্স-রে পরীক্ষার কথা এরই মধ্যে তাকে জানানো হয়েছে। তিনি ব্যক্তিগত চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া আপাতত এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে চান না। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, কারাগারে ব্যক্তিগত চিকিৎসক নিয়ে কোনো বন্দির চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ নেই। রাষ্ট্রের নির্বাহী আদেশ পেলে সেটা সম্ভব।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে। মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে সরকার।
কারাগারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাৎ করতে চান বিএনপির তিন শীর্ষ নেতা মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম ও মির্জা আব্বাস। এরই মধ্যে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপির তিন শীর্ষ নেতার সাক্ষাতের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নেবে। তবে এখনও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কারা কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে কিছু জানায়নি।
কারাগারের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, কারাবিধি অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে খাবার দেওয়া হচ্ছে। তিনি ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করছেন।
চিকিৎসক দলের প্রধান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিকস বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. শামসুজ্জামান সমকালকে বলেন, তারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন। খালেদা জিয়া ঘাড়ে, বাঁ হাতে ও পায়ে ব্যথা বোধ করেন। হাত ঝিমঝিম করে। তিনি আগে যেসব ওষুধ সেবন করতেন, তার সঙ্গে আরও কিছু ওষুধ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রক্ত ও এক্স-রে পরীক্ষা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকে ব্যায়াম করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডিত হয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছেন। নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারের ডে-কেয়ার সেন্টারে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দির মর্যাদায় তাকে রাখা হয়েছে।