টি.আই সানি,গাজীপুর প্রতিনিধিঃ
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর অংশের বিভিন্ন স্থানে
দাড়িয়ে থাকা ট্রাকের কারনে প্রতিদিনই ঘটছে প্রাণহানীর
ঘটনা। সর্বশেষ গত ১ এপ্রিল শ্রীপুরের মাওনা এলাকায় হামিম
স্পিনিং কারখানার সামনে দাড়ানো ট্রাকের সাথে লেগুনার
সংঘর্ষে নজরুল ইসলাম নামের একজন মারা যায়।
এর আগে গত ২৯ মার্চ ও ২এপ্রিল একই মহাসড়কের হোতাপাড়ায়
দাড়ানো একটি ট্রাকের সাথে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে একটি
কারখানার মহাব্যবস্থাপক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সহ তিনজন
নিহত হয়। গত বছরের ৭আগস্ট দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের সঙ্গে লেগুনার
সংঘর্ষে স্থানীয় একটি কলেজের তিনজন ছাত্রীসহ পাঁচ জনের
জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে।
গত ১বছরে এই মহাসড়কের ৩০ কিলোমিটার অংশে প্রায় ২৭ টি
দুর্ঘটনার মধ্যে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে দাড়ানো ট্রাকের সাথে
চলন্ত যানবাহনের সংঘর্ষে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জয়দেবপুর থেকে শ্রীপুরের জৈনা
বাজার পর্যন্ত মহাসড়ক
ঘেঁষে রয়েছে কয়েকশ কারখানা। এসব কারখানার পণ্য পরিবহনের
ট্রাক কাভার্ডভ্যান মালামাল লোড – আনলোড শেষে দাড়িয়ে থাকে
মহাসড়কের দুই লেন দখল করে। আর চলন্ত গাড়ী পাস ওভারপাস করার
সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লাগিয়ে দেয় দাড়িয়ে থাকার গাড়ীর
পেছনে। আর এতেই বাড়ছে প্রাণহানীর ঘটনা। যদিও মহাসড়ক
চারলেনে উন্নীত করার
ফলে মুখোমুখি সংষর্ষের ঘটনা কমে গেছে।
মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার পর থেকে দু পাশের দু লেন দখল
করে এসব যানবাহন রাখা হচ্ছে। অথচ মহাসড়ক ও যাত্রীদের জীবনের
নিরাপত্তা বিধানের জন্য মহাসড়কে নিয়োজিত রয়েছে হাইওয়ে
পুলিশ। মোটরযান আইনে অবৈধ যানবাহন পার্কিংয়ের ব্যাপারে
শাস্তির বিধান থাকা সত্বেও নিরাপত্তাবাহিনীর ভূমিকা আজ
প্রশ্নবিদ্ধ। প্রতিটি হাইওয়ে থানায় রেকারিং ও ডাম্পিং ব্যবস্থা
থাকার পরও তার ব্যবহারও নেই।
নিরাপদ সড়ক চাই কেন্দ্রিয় কমিটির যুগ্ন সম্পাদক লায়ন গনি
মিয়া বাবুল জানান, প্রতিদিনই মহাসড়ক তাঁর নিয়ন্ত্রণ
হারাচ্ছে। কাগজে আইন থাকলেও মহাসড়কে তেমন প্রয়োগ নেই,
এর জন্যই মূলত প্রতিনিয়তই ঘটছে প্রাণহানীর ঘটনা। আমরা এ
বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। তবে সবার
আগে হাইওয়ে পুলিশকে তাঁর দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে
হবে।
এ বিষয়ে মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেলোয়ার
হুসেন জানান,মহাসড়কের অবৈধ পার্কিং বন্ধে আমরা
প্রতিদিনই অভিযান চালাচ্ছি। ইতিমধ্যেই যানবাহন মহাসড়ক
থেকে সরিয়ে নিতে শব্দযন্ত্রের মাধ্যমে প্রচার চালানো হচ্ছে।
গাজীপুর হাইওয়ে পুলিশ সুপার শফিকুল ইসলাম জানান, যেসব
শিল্প প্রতিষ্ঠানের পরিবহন মহাসড়কের ওপর পার্কিং করা থাকে
সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাইওয়ে পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি)
আতিকুল ইসলাম জানান, ইতিমধ্যে গাজীপুরের বিভিন্ন শিল্প
প্রতিষ্ঠানকে এ ব্যাপারে একাধিকবার নোটিশ প্রদান করা
হয়েছে। এর পরেও মহাসড়কের গাড়ী পার্কিং বন্ধ না হলে কাঠার
আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।