জাকির হোসেন, পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) থেকে ঃ ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে
উপজেলার সর্বত্র এলাকায় আবাদি জমিতে গড়ে উঠছে বিভিন্ন জাতের আম
বাগান। আবাদী জমিতে আম বাগান করার যেন প্রতিযোগীতা চলছে।
ধান, গম, ভূট্টা সহ অন্যান্য ফসলের নায্য দাম না পাওয়ায় অনেক কৃষক এ
সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে এ প্রতিবেদককে জানায়। কৃষকরা আরো জানায়
আম বাগান করে সহজে অধিক মুনাফা অর্জন করা সম্ভব। তাছাড়া ধান,
গম, ভূট্টা সহ অন্যান্য ফসল উৎপাদন করে নায্য মূল্য পাওয়া যায় না। সরকার
ন্যার্য মূল্যের ঘোষণা দিলেও শাসক দলের কিছু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করায়
আমরা সেই সুবিধা ভোগ করতে পারি না। ফলে হাড়ভাঙ্গা শ্রমে উৎপাদিত
ফসলের ন্যার্য্য মূল্য না পাওয়ায় আশায় গুড়ে বালি পড়ে। এছাড়াও ধান, গম ও
ভূট্টা চাষাবাদে শ্রম ও খরচ বেশি বহন করতে হয়। ফলে অনেক কৃষক ও বেকার
যুবকদের জমি বর্গা নিয়ে আম বাগান চাষাবাদে ঝঁুঁকেছে। উপজেলার
বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা যায় ১০টি ইউনিয়নের বিশাল এলাকা জুড়ে
আম বাগান লাগানোর হিড়িক পড়েছে। বিশেষ করে উপজেলার কালিয়াগঞ্জ,
ভোমরাদহ, মালঞ্চা, হাবিবপুর, পালিগাঁও, ভেলাতৈড়, চাপোর, সেনুয়া,
নারায়নপুর, বৈরচুনা, নসিবগঞ্জ এলাকা সহ ব্যাপক ফসলের জমিতে
আ¤্রপালি, হাড়ি ভাঙ্গা, ল্যাংড়া, ফজলি, সহ একাধিক জাতের আম বাগান
গড়ে উঠেছে। এক সময় এসব আবাদি জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান
চাষাবাদ, ভূট্টা ও আখ উৎপাদন করা হতো, এখন আম বাগানে পরিণত হয়েছে
ঐসব আবাদি জমি। মাঠ ঘুরে দেখা যায় আমের বাগানে চলতি আমন ধান
চাষাবাদ করছে অনেকেই। বেশ কিছু কৃষক জানায় আম বাগানের মধ্যে
আপাতত চাষাবাদ অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু দুই তিন বছরের মধ্যে বাগানের
পরিপূর্ণতা আসবে। এরপর সেই জমিগুলোতে চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যাবে। এতে
করে অন্যান্য ফসল উৎপাদনে ব্যাহত হবে। উপজলো কৃষি সূত্র মতে এবারেই
বেশি চাষাবাদ করার দৃশ্য দেখা গেছে। প্রায় ২৫ শতাংশ আবাদি জমিতে
আম বাগান গড়ে উঠেছে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
সূত্রে জানা যায় অত্র উপজেলা যে হারে আম বাগান গড়ে উঠছে। এ ক্ষেত্রে
ভবিষ্যতে খাদ্য উৎপাদন ও ঘাটতি দেখা দিবে। স্থানীয় বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এ
অবস্থা চলতে থাকলে খাদ্য সংকট ও গো-খাদ্যের চরম আকার ধারণ করবে। এতে
করে অন্যান্য এলাকা থেকে চাল সহ বিভিন্ন খাদ্য সংগ্রহের প্রয়োজন হতে
পারে। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা
বিদ্যমান। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন
সরকারি ভাবে এখনই এসব বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার। প্রয়োজনে জমির মালিক
ও কৃষকদের আবাদি জমিতে আম বাগান না করে তাদের বিশেষ ভাবে সরকারি
সুযোগ সুবিধা দিয়ে ধান সহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে উৎসাহিত করা
উচিত।