এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে আমন ফসলের বাম্পার ফলনের পর আবারো বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় কৃষকদের মুখে আনন্দের হাসি ফুটেছে। এক ফসলির এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হলেও আমনের পর লবন সহনশীল এ ধান চাষে আগ্রহী হচ্ছে কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে উপজেলায় ৪ হাজার ৮ শ’ ৭০ হেক্টর জমিতে বেরো ধানের চাষ হয়েছে। চলতি বেরো মৌসুমে কৃষি দপ্তরের উদ্যোগে ১৬ ইউনিয়নে বিনা-১০ জাতের বেরো ধানের ৩০ টি প্রদর্শনী হয়েছে। এ প্রর্দশনীর আওতায় কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের বীজ উৎপাদনের জন্য ৩০ জন চাষীকে ১০ কেজি করে ধান বীজ ও সার প্রয়োগের জন্য ১ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। চাষী পর্যায়ে উন্নতমানের ধান,গম ও পাটবীজ উৎপাদন সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্পের আওতায় চাষীদের সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও এ ধান ফলনের আশানুরূপ সাফল্যের কারনে ব্যাক্তি উদ্যোগেও শত শত চাষী চলতি বছরে বেরো ধানের আবাদ করেছে।
সরেজমিনে সদর ইউনিয়নের বেরো ধান চাষী জলিল আকন জানান, তিনি এ প্রকল্পের আওতায় এক একর জমিতে ধানের চাষ করেছেন। এবারের বিঘা প্রতি কমপক্ষে ৪০ মন ধান উৎপাদিত হবে বলে তিনি আশাবাদি। স্থানীয় কৃষি দপ্তরের যথাসময়ে সঠিক পরামর্শ পাবার কারনে তারা সফলতা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন। চাষী সোহরাব হোসেন জানান, ছলতি বছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। সদর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, আমন ফসলের পর রোরো ফসল চাষে কৃষকরা খুবই উৎসাহিত হচ্ছে। এবারের বাম্পার ফলন হলে আগামী বোরো ধানের আবাদ দ্বিগুন হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃসিবিদ অনুপম রায় বলেন, বোরো ধানের বৈশিষ্ট্য হল, সমগ্র জীবনকালে লবন সহনশীলতার মাত্রা ১০-১৪ ডিএ/মিটার। যা এ লবনাক্ত অঞ্চলের জন্য যথাপোযুক্ত। হেক্টর প্রতি গড় ফলন ৫ -৮.৫ টন। যার কারনে চাষীদের বেরো ধান চাষে আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছরের ৭ শ’ হেক্টর বেশি জমিতে বোরোর আবাদ করা হয়েছে।
বাগেরহাটে মাদক মামলার পালিয়েছে আসামী , দুই পুলিশ বরখাস্ত
এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট অফিস : বাগেরহাটেরচিতলমারী উপজেলা হাসপাতাল থেকে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন এক মাদক মামলার আসামী পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে গেছে। বৃহষ্পতিবার রাতে মাদক মামলার এজাহারভূক্ত আসামী তন্ময় মন্ডল (২০) নামে ওই যুবক কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ পাহারায় আসামী পালানোর ঘটনায় দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগে দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা হলেন, চিতলমারী থানার কনস্টবল আব্দুর রউফ ও শওকত আলী। শুক্রবার তাদের বাগেরহাট জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া আসামী তন্ময় মন্ডল চিতলমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের খড়মখালী গ্রামের প্রয়াত বলরাম মন্ডলের ছেলে। পালিয়ে যাওয়া ওই আসামীকে ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অনুকুল চন্দ্র সরকার বলেন, গত ২ এপ্রিল রাতে চিতলমারী উপজেলার খাসেরহাট এলাকায় পুলিশ অভিযানে যায়। পুলিশের ধাওয়ায় তন্ময় রাস্তার উপর পড়ে কোমরে ও পায়ে আঘাত পায়। পরে তার দেহ তল্লাসি করে ১০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করে পুলিশ। মাদক উদ্ধারের ঘটনায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) মারফত আলী বাদী হয়ে চিতলমারী থানায় তন্ময়ের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেন। সেখান থেকে তন্ময়কে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পুলিশ পাহারায় চিতলমারী উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তন্ময়ের বাথরুম চাপলে পুলিশ তার হাতের হাতকড়া খুলে দেয়। এসময় সে বিছানা থেকে নেমেই পাহারায় থাকা পুলিশ সদস্য শওকত আলী ও আব্দুর রউফকে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। তার বিরুদ্ধে চিতলমারী থানায় মাদক ছাড়াও তিনটি চুরির মামলা রয়েছে।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় জানান, দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগে চিতলমারী থানার কনস্টবল আব্দুর রউফ ও শওকত আলী নামে দুজনকে সাময়িক বরখাস্ত করে শুক্রবার বাগেরহাট পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া মাদক মামলার আসামী তন্ময় মন্ডলকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের একাধিক দল অভিযান চালাচ্ছে।