রুহুল আমিন,মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন
মানিকগঞ্জের মৃৎশিল্পীরা। প্রায় এক মাস ধরে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নারী-পুরুষ সকলে
মিলে তৈরি করছেন হাড়ি, পাতিল সহ মাটির তৈরী বিভিন্ন প্রকারের খেলনা সামগ্রী। বৈশাখ
উপলক্ষ্যে বিভিন্ন মেলায় বিক্রি হবে এসব তৈজসপত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার প্রায় ৫শতাধিক পরিবার মৃৎ শিল্পের
সাথে জড়িত। বংশ পরম্পরায় যুগের পর যুগ এই কাজটি ধরে রেখেছেন পাল সম্প্রদায়। বর্ষা
মৌসুম ছাড়া বছরের বাকি সময় এই কাজ চললেও পহেলা বৈশাখ এলে তাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়
বহুগুণ। পালপাড়ার মৃৎশিল্পীরা তাদের নিপুন হাতে তৈরি করছেন হাড়ি, পাতিল, কলসি, পিঠার সাজ,
বাসনসহ বিভিন্ন প্রকারের খেলনা।
মানিকগঞ্জ মিতরা গ্রামের পাল পাড়ার বাসিন্দা নারায়ন পাল জানান, পহেলা বৈশাখ এলে
মানিকগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অনেক মেলা খেলার আয়োজন করা হয়। আর ওইসব মেলায় মাটির তৈরি
হাড়ি, পাতিল, বাসন কোসন, খেলনার ব্যাপক কদর রয়েছে। আর বৈশাখ মাসকে কেন্দ্র করেই
আমাদের অনেক ব্যস্ত সময় কাটাতে হয়।
তিনি আরো জানান, মাটির তৈরি এসব তৈজসপত্র বিক্রি হয় শতকরা হিসেবে। আকার অনুসারে
মাটির তৈরি এসব জিনিস বিক্রি হয় শতকরা ৫শত থেকে ১০ হাজার টাকায়।
সাটুরিয়ার তিল্লি গ্রামের সনুমালা পাল বলেন, বর্ষাকাল বাদে সারাবছরই আমাদের টুকটাক
কাজ থাকে। তবে বৈশাখ এলেই আমাদের কাজ অনেকটা বেড়ে যায়।
একই পাড়ার সুবির পাল জানান, বর্তমানে কাঁচামালসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায়
এবং বাজারে প্লাস্টিক ও সিলভারের তৈজসপত্রের ব্যাপক সরবরাহ থাকায় অস্তিত্ব সংকটে রয়েছেন
মৃৎশিল্পীরা। টিকতে না পেরে অনেকেই এই পেশা ছেড়ে চলে গেছেন ভিন্ন পেশায়।
পৃষ্ঠপোষকতা না পেলে ঐহিত্যবাহী শিল্পটি অচিরেই হারিয়ে যাবে বলে মনে করেন মানিকগঞ্জ
সদর উপজেলার বেতিলা মিতরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির হোসেন। মৃৎশিল্পের বহুবছরের
ঐহিত্য ধরে রাখতে তিনি সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।##