টি.আই সানি,গাজীপুর:
দরিদ্র পরিবারের কন্যা বিলকিস আক্তার। বয়স সবে মাত্র ১৪ বছর ছুঁই ছুঁই
করছে, গায়ে গতরে একটু বড় হয়েছে তাই গ্রামের দরিদ্র পিতা তার মেয়ে বড়
হয়েছে মনে করে ঠিক করল তার বিয়ে দিবে। যা ভাবা তাই কাজ শুরু হলো
বিলকিস আক্তার জন্য পাত্র খোজা এবং বিয়েও হলো সময় মত কিন্তু সংসার আর
করা হলোনা ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রী বিলকিস আক্তারের ।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ধনুয়া দক্ষিণপাড়া বড়চালা এলাকার একটি
কিন্ডরগার্ডেন এর ছাত্রী। শ্রীপুর উপজেলার ২নং গাজীপুর ইউনিয়নের ধনুয়া
দক্ষিণপাড়া বড়চালা এলাকার আছিম উদ্দিনের কন্যা সে।
অপ্রাপ্ত বয়স হলেও গত ৬মে ২০১৮ ইং ছাত্রী বিলকিস আক্তারকে বিজ্ঞ নোটারী
পাবলিক,গাজীপুর কোর্ট মেরিজ এফডেভিড এর মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ
করেন তার অভিভাবক। বাল্য বিয়ের ঘটনাটি ঘটেছে: ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর
উপজেলার পূর্ববাখাইর ইউনিয়নের বাতিকুরা গ্রামের ছাহেদ আলী ফকির এর
ছেলে নুরুল হক (২৬) এর সাথে।
তৎকালীন সময়ে বাল্য বিয়ের খবর শুনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংবাদকর্মীরা
আছিম উদ্দিনের বাড়িতে হাজির হয়ে বিলকিসের বিয়েটা ঠেকানোর চেষ্টা
করেন এবং সেদিন ঐ বিয়েটা বন্ধ হয়। কিন্তু কন্যার বাবা আছিম উদ্দিন ও কন্যার
মা মিনারা বেগম সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে নুরুল হকের সাথে ঘটনার
রাতেই রাত একটার পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেন। বিয়ের পর থেকে শ্বশুর বাড়িতে
গিয়ে সংসার নামের জীবন যুদ্ধ শুরু করে বিলকিস। এরই একপর্যায়ে বিলকিস
বায়না ধরে লেখাপড়া করতে।
কিন্তু স্বামী নুরুল হক এতে রাজী নয়। তবুও বিলকিস আক্তার সময় অসময়ে
পড়াশুনা করার জন্য প্রস্তাব করে স্বামীকে। আর এই প্রস্তবেই কাল হয়ে দাড়াল
বিলকিসের। লেখাপড়া ইচ্ছা পোষনকে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ-দ্বন্ধসঢ়;দ্ব
বাধতে ধাকে। একারণে বিলকিসের ওপর নেমে আসে বাবা মায়ের অমানুষিক
নির্যাতন। শেষে পর্যন্ত বিলকিসের মা মিনারা বেগম,বিলকিসের স্বামী নুরুল
হককে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে বিলকিসকে ডিভোর্স দিতে। এ সিদ্ধান্তকে
অটল রেখে যে কাজী ওই রাতে বিবাহ পড়িয়ে ছিলো, রবিবার দুপুরে ওই কাজী
বক্তিয়ার হোসেনকে ডেকে আনেন কন্যার বাবা, এবং তালাক নামায় সহি/স্বাক্ষর
সস্পাদন করে অপ্রাপ্ত বয়সের কন্যা বিলকিস আক্তার।
অবশেষে বাল্য বিয়ের কারনে বিয়ের তিন দিন পরেই সংসার ভাঙল ৫ম শ্রেণির
পড়–য়া ছাত্রী বিলকিসের। লেখা পড়ার বায়নাই হলো তার জীবনের মহাভুল!
ডিভোর্স কন্যা বিলকিসের পিতা আছিম উদ্দিন জানান,বরের কাছ থেকে
বিয়ের সময় নগদ ১০ হাজার টাকা ও অন্যান্য আসবাপত্র বর নুরুল হককে দেওয়া
হয়েছিল রবিবার তালাকের সময় সে টাকা ফেরৎ দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল আজিজ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অপ্রাপ্ত
বয়সের ছেলে-মেয়েদেরকে বিয়ে দিলে এরকম ঘটনা ঘটাই স্বাভাবিক। তবুও
গ্রামের লোকজন বাল্য বিয়ের ব্যাপারে উদাসীন।