নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিলেটের হবিগঞ্জ থানা পুলিশ সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম জীবনকে
ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর ব্যর্থ চেষ্টার পর ফের বুধবার রাজশাহীর চারঘাট
থানা পুলিশ দৈনিক যুগান্তরের প্রতিনিধি মিজানুর রহমানকে
ফেন্সিডিল ও ইয়াবা ব্যাগে ঢুকিয়ে দিয়ে ফাঁসানোর অপচেষ্টা
করছে।’
পুলিশের ন্যাক্কারজনক এ ঘটনায় বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম
(বিএমএসএফ) গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছে।
বৃহস্পতিবার বিএমএসএফ’র কেন্দ্রীয় সভাপতি শহীদুল ইসলাম পাইলট
ও সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর এক বিবৃতিতে বলেন পুলিশ
কর্তৃক সৃষ্ট ঘটনাসমুহের সাথে জড়িত দায়ী পুলিশের বিরুদ্ধে
উচ্চ পর্যায়ের তদন্তটিম গঠন করা উচিত। কিছু বিপদগামি পুলিশ
সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে বিভিন্ন ভাবে সাংবাদিক নিপীড়ন ও
হয়রাণী করেই চলছে। মনে হচ্ছে পুলিশ-সাংবাদিক বিপরীত মেরুর; তাই
সাংবাদিকদের সাথেই কেবল পুলিশের বিরুদ্ধাচারন করা হচ্ছে।’
গত ১৩ এপ্রিল সুনামগঞ্জ-১ আসনের শাসক দলীয় এমপি মোয়াজ্জেম
হোসেন রতন এমপির ক্যাডাররা দৈনিক যুগান্তরের সুনামগঞ্জের
তাহিরপুরের ষ্টাফ রিপোর্টার হাবিব সরোয়ার আজাকে সংবাদ প্রকাশের
জের ধরে ওই থানার ওসি ও কিছু বিপথগামী পুলিশের সহযোগীতায়
হত্যা মামলার আসামী ইয়াবা ব্যবসার গডফাদার ও ওই ঘটনায় ইয়াবা
সংগ্রহকারী মাসুকের নেতৃত্বে অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার পর
৩৪৫ পিস ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা চালিয়ে ছিল।’ সারা
দেশের সাংবাদিকদের অব্যাহত প্রতিবাদের মূখে ২৭ ঘন্টা পর থানা
থেকেই ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল সাংবাদিক আজাদকে। ওই সময়
বিএমএসএফ’র পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল
তাহিরপুরের ওই ৩৪৫ পিস ইয়াবার মালিক যদি সাংবাদিক হাবিব
সরোয়ার আজাদ না হয়ে থাকেন; তাহলে ওই ইয়াবার প্রকৃত মালিক
কে? কেন তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা দায়ের করা
হচ্ছেনা! সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয় সরকারের মাদকবিরোধী অভিযানকে
প্রশ্নবিদ্ধ এবং নিজেদের অপরাধ আড়াল করতে একশ্রেনীর পুলিশ
সাংবাদিকদের কোনঠাসা করতে চাইছে।’ অবিলম্বে সরকারকে
হবিগঞ্জের সাংবাদিক সিরাজুল ইসলামের ওপর নির্মম নির্যাতন
ঘটনায় সুচিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ, মামলা প্রত্যাহার, দায়ী পুলিশকে
চাকরীচ্যুত এবং তাহিরপুরের ওই ৩৪৫ পিস ইয়াবা মালিকের বিরুদ্ধে
সরকারী নির্দেশে মামলা দায়েরের নির্দেশনা সময়ের দাবি।’ সেই সাথে
রাজশাহীর সাংবাদিক বিশাল রহমানকে প্রকাশ্যে উলঙ্গ করে তল্লাসি ও
ঘটনা এবং বরিশালের সাংবাদিক সুমন হাসানের ওপর ডিবি পুলিশের
নির্যাতনের ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা
গ্রহনের আশ^াস আজো অকার্যকর।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজশাহীর চারঘাট থানা পুলিশের বিরুদ্ধে মাদক ও
মামলা ‘বাণিজ্য’, তল্লাশির নামে হয়রানি এবং লুটপাটসহ বিভিন্ন
অনিয়মের খবর দৈনিক যুগান্তর ও দৈনিক সানসাইনসহ বিভিন্ন
মিডিয়য়ি প্রকাশ করেন সাংবাদিক মিজান। এ সংবাদ প্রকাশের জের
ধরে রাজশাহী চারঘাটের যুগান্তর প্রতিনিধিকে ইয়াবা ও ফেনসিডিল
দিয়ে ফাঁসিয়েছে ওই থানার পুলিশ।’ বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টার
দিকে চারঘাট থানা পুলিশের একটি দল এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
সাংবাদিক মিজানের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলে
মনে করছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। পুলিশের এ ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ডে
চরম ক্ষোভ এবং অসন্তোস প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক এবং
রাজনৈতিক নেতারা এবং অবিলম্বে কোন রকম মামলা বা হয়রানী ছাড়াই
সাংবাদিক মিজাননের মুক্তির দাবি জনিয়েছেন নেতৃবৃন্ধ।