স্পোর্টস ডেস্কঃ-
ছিল টিকিটাকা। স্পেন সঙ্গে যোগ করেছিল গতিময় ফুটবল। তবু একজন রোনালদোর কারণে জয় নিয়ে ফেরা হল না স্পেনের। প্রথমার্ধে রোনালদো কারিশমায় দুই-দুই বার পিছিয়ে পড়ে দলটি। দুইবারই তাদের সমতায় ফেরান কস্তা। আর একবার নাচো এগিয়ে দেন। সেই এগিয়ে যাওয়া ‘হ্যাটট্রিক ম্যান’ রোনালদোর বাহুতে লুটায়, বাঁকানো এক ফ্রি-কিকে। ম্যাচ শেষ হয় ৩-৩ সমতায়।
দুই দলই এদিন ৪-২-৩-১ ফর্মেশনে দল সাজায়। একই ফর্মেশনে খেলেও মাঝমাঠের দখল নিতে ব্যর্থ হয় পর্তুগাল।
স্পেনের রক্ষণভাগে জর্ডি আলবার সঙ্গে ছিলেন রামোস, পিকে এবং নাচো। তাদের উপরে দুই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার কোকে এবং সার্জিও বুসকেটস। অ্যাটাকিং মিডে ইনিয়েস্তা, ইসকো এবং সিলভা। এই তিনজনের বোঝাপড়া ছিল চোখে পড়ার মতো।
প্রথমার্ধে স্পেন বল দখলের লড়াইয়ে ৬৩ শতাংশ সময় রাজত্ব করেও ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকে।
চতুর্থ মিনিটে বক্সের ভেতর আগুয়ান রোনালদোর সামনে পা বাড়িয়ে তাকে ফেলে দেন ডিফেন্ডার নাচো। রেফারি সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান। স্পটকিক নিতে আসেন রোনালদো। ছোট একটি ফলস নিয়ে বারের ডানদিকে বল পাঠান। গোলরক্ষক ডি গিয়া এতটুকু বুঝতে পারেননি। ডাইভ দেন বাঁদিকে।
২১তম মিনিটে বাঁদিক থেকে ইনিয়েস্তা বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন। ডেভিড সিলভাকে বল কাট করেন। সিলভা ঠিকমতো শট নিতে পারলে বিপদে পড়তে পারতো পর্তুগাল।
পরের মিনিটে বক্সের ভেতর রোনালদোকে বল দেন সিলভা। বক্স তখন অরক্ষিত। রোনালদো বল ছাড়েন গুইডেসকে। কিন্তু তিনি বেশি সময় নিয়ে ফেলায় রামোসের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন।
২৪তম মিনিটে কস্তা স্পেনকে সমতায় ফেরান। পর্তুগালের বক্সের ঠিক বাইরে এরিয়াল বলের দখল নেন। তিনি একাই ছিলেন। তার পাশে পর্তুগালের তিনজন। সবাইকে ফাঁকি দিয়ে চকিত শটে বাঁদিকের বার নজরে রেখে শট করেন। বল জড়িয়ে যায় জালে।
২৬তম মিনিটে কয়েক ইঞ্চি ব্যবধানের জন্য দ্বিতীয় গোল থেকে বঞ্চিত হয় স্পেন। বক্সের কোনা থেকে ইসকোর ভলি বারে লেগে গোললাইনে পড়ে ফিরে আসে!
৩৫তম মিনিটেও একই অবস্থা। গোলপোস্টের ইঞ্চি খানেক পাশ দিয়ে চলে যায় ইনিয়েস্তার পুশ। চোখজুড়ানো ওয়ান-টু-ওয়ান পাস থেকে পাওয়া বল ধরেই আলবা কাটব্যাক করেন ইনিয়েস্তাকে। ইনিয়েস্তা দুরহ কোন থেকে দূরের পোস্টে বল রাখেন। স্প্যানিশদের আফসোস বাড়িয়ে সেটি বাইরে চলে যায়।
৪৪ মিনিটের সময় রোনালদো ব্যবধান ২-১ করেন। বক্সের ভেতর তাকে বল ছাড়েন সেন্টার মিডফিল্ডে খেলা গুইডেস। দেরি না করে গোলমুখে বাঁপায়ে জোরালো শট নেন। স্পেন গোলরক্ষক ডি গিয়া মনোযোগ ধরে রাখতে পারেননি। বলের লাইনে ছিলেন, গ্রিপ করতে হাতও দেন। সেই বল ফসকে গিয়ে জালে জড়ায়!
স্পেন সমতায় ফিরে আসে দ্বিতীয়ার্ধের ৫৫তম মিনিটে। ডেভিড সিলভা ফ্রি-কিক থেকে বক্সের ডানদিকে বল তুলে দেন। ওখানে ছিলেন বুসকেটস। কস্তাকে চোখে রেখে হেড করেন। কস্তাও ভুল করেননি। খুব কাছে থেকে বলকে জালের বাসিন্দা করেন।
তিন মিনিট বাদে নাচো ব্যবধান ৩-২ করেন। বল পায়ে আসতেই দেখার মতো এক ভলি করেন। লাগে পোস্টে। পর্তুগাল গোলরক্ষক ডাইভও দেন। কিন্তু তার কিছু করার ছিল না। বারে লেগে বল জালে ঢুকে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধে ইনিয়েস্তা এবং কস্তাকে উঠিয়ে মিডফিল্ড আর আক্রমণে সজীবতা আনতে মিডফিল্ডার থিয়াগো এবং ফরোয়ার্ড আসপাসকে নামান স্পেনের কোচ। তাতে কাজও হয়। স্পেন বেশি বেশি পাস খেলে সময় কাটাতে থাকে। ঠিক সেই সময় (৮৮তম মিনিটে) বক্সের কাছে ফ্রি-কিক পায় পর্তুগাল।
আদুল থাই নিয়ে দাঁড়িয়ে যান রোনালদো। চোখ দেখে মনে হচ্ছিল সিংহের তেজ। সেই তেজ শান্ত হয় দৃষ্টিনন্দন ‘নাকলবল’ ফ্রি-কিকে। ইনসুইং করে বল জড়ায় জালে। চেয়ে দেখেন স্প্যানিশরা!