অনলাইন ডেস্কঃ
গুপ্তধন উদ্ধারে মিরপুরের বাড়িটির দুটি ঘরে চার ফিট খনন করার পর আজ উদ্ধার কাজ স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার ফের উদ্ধার কাজ শুরু করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দায়িত্বরত ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ারুজ্জামান।
আনোয়ারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের ১৬ নম্বর রোডের ১৬ নম্বরের একতলা বাড়িটি শনিবার সকাল থেকে ২০ জন শ্রমিকের মাধ্যমে উদ্ধার কাজ শুরু করা হয়। সকাল থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত খনন কাজ চলে। বাম পাশের দুটি ঘরে চার ফিট পর্যন্ত মাটি খনন করা হলেও এখন পর্যন্ত গুপ্তধনের কোনো সন্ধান মেলেনি।
তিনি বলেন, মাটি খনন করার পরে পুরনো বাড়িটি ঝুঁকিপূর্ণ মনে হওয়ায় আজকের মতো উদ্ধার কাজের স্থগিত ঘোষণা করা হচ্ছে। আগামীকাল ফের এ ধন উদ্ধার কাজ শুরু করা হবে। সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করেই আবারও উদ্ধার কাজ শুরু করা হবে।
আগামী কাল কখন থেকে এ কাজ শুরু করা হবে তা নিশ্চিত করেননি ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ারুজ্জামান। বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে তিনি উদ্ধার কাজের স্থগিত ঘোষণা করেন।
এ সময় মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. দাদন ফকির বলেন, তৈয়বের অভিযোগে নয়, বর্তমান বাড়ির মালিক মনিরুল ইসলামের আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা গুপ্তধন উদ্ধার কাজ শুরু করেছি। একতলা পুরনো বাড়িটি ঝুঁকিপূর্ণ মনে হওয়ায় উদ্ধার কাজে স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, উদ্ধার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িটিকে পুলিশি নিরাপত্তায় রাখা হবে। কাল যদি গুপ্তধনের সন্ধান না মেলে তবে উদ্ধার কাজের সমাপ্তি ঘোষণা করে পুলিশি নিরাপত্তা সরিয়ে নেয়া হবে।
সন্ধানদাতা তৈয়ব বলেন, বাড়িটিতে দুই মণেরও বেশি স্বর্ণালংকার রয়েছে। এই বাড়ির মূল মালিক দিলশাদ খান। তিনি ১৯৭১ সালে পাকিস্তান চলে যান। তার দূর সম্পর্কের আত্মীয় সৈয়দ আলম ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আলমও পাকিস্তানে থাকেন। মাঝে মধ্যে দেশে আসেন। বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন।
তিনি জানান, আলম তাকে তথ্য দেন, মিরপুরের ওই বাড়িটির নিচে দুই মণের বেশি স্বর্ণালংকার ও দামি জিনিসপত্র রয়েছে। পাকিস্তানে থাকাকালে আলমকে ওই তথ্য দেন দিলশাদ। এরপর আলমকে নিয়ে তৈয়ব মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা এ সম্পদ দখলে নিতে টেকনাফ থেকে ঢাকায় আসেন। ঢাকায় আসার পর তৈয়বকে আড়ালে রেখে গোপনে বাড়িটির বর্তমান মালিকের সঙ্গে আঁতাত করেন আলম। তারা মাটির নিচের সম্পদ হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা করেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তার পূর্বপরিচিত রাবেয়া চৌধুরী নামে এক নারীকে নিয়ে থানায় যান। তারা বিষয়টি জানিয়ে জিডি করার সিদ্ধান্ত নেন।
অন্যদিকে, এই বাড়ির বর্তমান মালিক ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম বলেন, আমি গত আট বছর আগে এই বাড়িটি ক্রয় করেছি। বর্তমানে দুইজন কেয়ারটেকার এই বাড়িতে বাস করেন। মিরপুর পল্লবীতে আমার আরেকটি বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করি।
তিনি বলেন, আমার বাড়ির নিচে গুপ্তধন রয়েছে, কে বা কারা এ বিষয়ে থানায় জিডি করেন। এরপর গত ১২ জুলাই রাতে জোর করে কয়েকজন যুবক আমার বাড়ির ভেতরে ঢোকার চেষ্টা চালায়। পরদিন আমি মিরপুর মডেল থানায় গিয়ে এ সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়েরি করি। পাশাপাশি বাড়ির মাটির নিচে যদি কোন ধরনের গুপ্তধন থাকে তবে তা উদ্ধারের আহ্বান জানাই।
এ সংক্রান্ত সকল ব্যয়ভার বহন করারও আশ্বাস দেন তিনি।